শোককে শক্তি করে প্রযুক্তিতে আগাবে তরুণরা : ইয়াফেস ওসমান

টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান তরুণদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বলেছেন, এখন আমাদের ৭১ এর শোককে শক্তিতে পরিণত করতে হবে। সেই অনুযায়ী কাজ করে দেশকে প্রযুক্তিতে উন্নত করতে হবে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) তিন দিনব্যাপী ‘টেকশহর ডটকম ল্যাপটপ ফেয়ার ২০১৭’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এমন আহ্বান জানান তিনি।

সকাল ১০টা থেকেই মেলা সবার জন্য উম্মুক্ত করা হলেও বিকেল তিনটায় এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী।

Techshohor Youtube

তিনি বলেছেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর কল্পনা নয়। আমরা অনেক এগিয়েছি। নতুন প্রজন্মকে শুধু বলতে চাই তোমাদের অনেক কিছু করার আছে। দেশ তৈরি হয়েছে এখন তোমাদের কাজে মনোযোগ হতে হবে। টেকনোলজি এগিয়েছে, আমরা অন্যদের থেকে পিছিয়ে নেই। আমরা মোবাইল ব্যবহার করতে পারি আবার কম্পিউটার, ল্যাপটপও ব্যবহার করতে পারি। বাঙ্গালিরা সব কিছুই পারে। যেভাবে দেশ স্বাধীন করতে পেরেছি। তাই তোমরা তোমাদের শক্তি কাজে লাগাও। প্রজন্মের কাছে বলতে চাই শোককে শক্তিতে পরিণত করে তোমরা কাজের বাস্তবায়ন করো।

‘শোক থেকে শক্তি, প্রযুক্তিতে মুক্তি’ স্লোগান দিয়ে বিজয়ের মাসে তিনদিনের এই মেলা শুরু হয়েছে। চলবে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি একাত্তরের শহীদ বুদ্ধিজীবী জহির রায়হানের জ্যেষ্ঠ পুত্র বিপুল রায়হান বলেন, লাল সবুজের পতাকা আমরা পেয়েছি। পেয়েছি সুন্দর একটি দেশ; এখন প্রয়োজন দেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। তাই সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বিকাশ যত বেশি হবে আমরা এগিয়ে যাবো তত। তবে একটি কথা, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসকে আন্তর্জাতিক দিবসে পরিণত করতে আমাদের কাজ করে যেতে হবে। কারণ তালিকা করে বুদ্ধিজীবি হত্যার ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।

বেসিস সভাপতি মোস্তাফা জব্বার বলেন, দেশের অসাধারণ দুটি কাজ হয়েছে। সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার নিয়ে। এছাড়া হার্ডওয়্যার উৎপাদনে উর্বরভূমিতে পরিণত হয়েছে আমাদের দেশ। কিন্তু ব্যাপারটি এত সহজ ছিল না। প্রযুক্তিতে এখন অনেক এগিয়েছি আমরা। বাংলাদেশের দিকে সবাই বিস্ময়কর চোখে তাকায়। কারণ আমরা যখন ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে দেশকে ঘোষণা দিয়েছি তখনও অনেকের তুলনায় পিছিয়ে ছিলাম। সাম্প্রতিক সময়ে প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জন উল্লেখ করে এই প্রযুক্তিবিদ বলেন স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের প্রযুক্তির যে অগ্রগতি হয়েছে তার সিংহভাগ হয়েছে বিগত সাত বছরে।

বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান বলেন, আমরা যখন উইকিপিডিয়াতে কাজ শুরু করি তখন ১ হাজার জন শহীদের নাম ছিল। এখন এর সংখ্যা আরো বেড়েছে। আমরা বাংলাদেশকে ডিজিটাল করতে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। যেটা গুগল সার্চ করলেই বোঝা যায় কতটুকু এগিয়েছি। ২০০৯ সালে যখন ঘোষণা হলো ডিজিটাল বাংলাদেশ, তখন থেকে অনেক কাজ করতে হয়েছে; এখন চলছে। তবে আশার কথা আমরা অনেক এগিয়েছি এবং আরো এগিয়ে যাবো।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এক্সপো মেকারের আয়োজনে এটি দেশের ১৯তম ল্যাপটপ প্রদর্শনী। এবারের আয়োজনে একটি মেগা-প্যাভিলিয়ন, পাঁচটি স্পন্সর প্যাভিলিয়ন, ১৪টি মিনি প্যাভিলিয়ন ও ২৭ স্টলে দেশ-বিদেশের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সর্বশেষ প্রযুক্তির পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করছে। মেলায় বিভিন্ন পণ্যে রয়েছে ছাড় ও নানা ধরনের অফার।

এবারের মেলার প্রধান পৃষ্ঠপোষক তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিকম বিষয়ক বিশেষায়িত নিউজ পোর্টাল টেকশহরডটকম। সহ-পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রয়েছে এসার, আসুস, ডেল, এইচপি, লেনোভো। টিকিট বুথ স্পন্সর আরওজি। নলেজ পার্টনার হিসেবে রয়েছে এডুমেকার। মেলায় একটি মিডিয়া বুথও রয়েছে।

প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা চলবে। মেলায় প্রবেশ মূল্য ৩০ টাকা। তবে স্কুলের শিক্ষার্থীরা ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় কিংবা পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে বিনামূল্যে প্রবেশ করতে পারবে। প্রতিবন্ধীরাও বিনামূল্যে প্রবেশের এই সুযোগ পাবে। মেলায় টিকিটের অর্থ দূরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত একজন সাংবাদিকের চিকিৎসায় সহায়তা হিসেবে দেওয়া হবে।
প্রদর্শনীর সব আপডেট ও খবর মেলার অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজ এবং টেকশহরডটকম-এ পাওয়া যাচ্ছে।

ইমরান হোসেন মিলন

*

*

আরও পড়ুন