স্যামসাং অ্যাটিভ স্মার্ট পিসি : ট্যাবের মধ্যে ল্যাপটপ

samsung ativ xe500t_techshohor

শাহরিয়ার হৃদয়, টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : ট্যাব না ল্যাপটপ, এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন এমন ক্রেতার বোধহয় অভাব নেই। তাদের কথা মাথায় রেখে উইন্ডোজ ৮ ভিত্তিক বেশ কিছু হাইব্রিড ট্যাব কাম ল্যাপটপ এনেছিল কোম্পানিগুলো। এর মধ্যে অন্যতম স্যামসাং এর অ্যাটিভ সিরিজের এক্সই৫০০টি১সি-এ০১বিডি স্মার্ট পিসি।

চমৎকার পারফরম্যান্সের এ নোটবুককে ল্যাপটপ বা ট্যাব হিসেবে সহজে ব্যবহার করার সুবিধা রয়েছে।

ডিজাইন
মাত্র ০.৩৮ ইঞ্চি পুরু ডিভাইসটি দেখতে আকর্ষণীয় ও সহজে বহনযোগ্য। ওজন মাত্র ০.৭৫ কেজি। গড়ন বেশ মজবুত ও মসৃণ। কিবোর্ডটি স্ক্রিনের সাথে ডক দিয়ে যুক্ত, অর্থাৎ আপনি কিবোর্ড আলাদা করে একে ট্যাব হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন।

Techshohor Youtube

samsung ativ xe500t_techshohor

ডিসপ্লে
এর এলইডি ডিসপ্লের আকার ১১.৬ ইঞ্চি, রেজুল্যুশন ১৩৬৬*৭৬৮ পিক্সেল। ডিসপ্লেটি টাচস্ক্রিন, তাই অনেকটা ট্যাবের মতো ব্যবহার করতে পারবেন। ডিসপ্লেতে ছবির মান বেশ ভালো দেখাবে। তবে উজ্জ্বল আলোতে ব্যবহার করতে সমস্যা হতে পারে।

কানেক্টিভিটি
নোটবুকটিতে ওয়্যারলেস কানেক্টিভিটির জন্য আছে ব্লুটুথ ও ওয়াই-ফাই। পোর্টের মধ্যে আছে একটি ইউএসবি ২.০ পোর্ট, একটি মাইক্রো এইচডিএমআই পোর্ট, সিমকার্ড স্লট (যার মাধ্যমে সিমের নেটওয়ার্কে ইন্টারনেট চালানো যাবে), মাইক্রোএসডি স্লড ও মাইক্রোফোন কিংবা ইয়ারফোন জ্যাক। একে ট্যাব হিসাবে যাতে ব্যবহার করা যায়- সেজন্য অ্যাক্সেলেরোমিটার, পজিশন সেন্সর ও জাইরোস্কোপ সেন্সরও রয়েছে।

কনফিগারেশন
ইন্টেলের ১.৫ গিগাহার্জ ক্লকরেটের অ্যাটম প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে এতে। র‍্যাম ২ জিবি, গ্রাফিক্স কার্ড বিল্ট-ইন। স্টোরেজ হিসেবে ৬৪ জিবি ইএমএমসি ফ্ল্যাশ ড্রাইভ রয়েছে। এছাড়া ডিসপ্লের উপর ২ মেগাপিক্সেলের একটি ফ্রন্ট ক্যামেরা রয়েছে ভিডিও চ্যাটের জন্য। পেছনে ৮ মেগাপিক্সেলের বেশ উন্নত ক্যামেরা রয়েছে। আর স্যামসাং এর সাউন্ডঅ্যালাইভ প্রযুক্তির দুটি স্টেরিও স্পিকার বেশ ভালো সাউন্ড দেবে।

পারফরম্যান্স
নোটবুকটির ডিফল্ট অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডো ৮ প্রো। অ্যাটম প্রসেসরের অনেক কম্পিউটারে এটি চলতে সমস্যা হয় বটে। কিন্তু এ অ্যাটিভে ব্যবহৃত জেড২৭৬০ এদিক থেকে উন্নত। বিদ্যুতসাশ্রয়ী, কিন্তু যথেষ্ট শক্তিশালী করে এই মডেলের প্রসেসর তৈরি করেছে ইন্টেল। তাই অ্যাটম প্রসেসরেই ডুয়াল কোরের মতো পারফর্ম্যান্স পাওয়া যাবে।

যে কোনো দৈনন্দিন কাজ সহজে করা যাবে। ইন্টারনেট ব্রাউজিং, ছোটখাটো এডিটিং, সাধারণ গেইম খেলতে কোনো সমস্যা হবে না। উইন্ডোজ স্টোরের যে কোনো অ্যাপও হাই পারফরম্যান্সে চালাতে পারবেন। একই কথা প্রযোজ্য মুভি দেখা, গান শোনা ইত্যাদি ক্ষেত্রেও।

ফিচার
ট্যাব ও নোটবুকের মধ্যে সমন্বয় করার জন্য কিছু বাড়তি ফিচার রয়েছে এতে। হার্ডওয়্যারের মধ্যে সবার আগে বলতে হবে স্টাইলাস পেনের কথা, যা গ্যালাক্সি নোট সিরিজে দেখা যায়। টাচস্ক্রিনে এই পেন দিয়ে যেকোনো ইনপুট দিতে পারবেন।

পেনকে পরিপূর্ণভাবে কাজে লাগানোর জন্য গ্যালাক্সি সিরিজের জনপ্রিয় সফটওয়্যার এস-নোটও রয়েছে এতে। এস-প্লেয়ারসহ স্যামসাং এর নিজস্ব আরও কিছু সফটওয়্যার আছে।

ব্যাটারি
সাধারণ ব্যবহারে এর ব্যাটারি পাঁচঘণ্টার কাছাকাছি ব্যাকআপ দেবে। এ ছাড়া এআরএমভিত্তিক ডিভাইসগুলোর মতো এতে কোনো কুলিং ফ্যান ব্যবহার করা হয়নি।

তবে বিশেষভাবে ডিজাইন করা অ্যাটম প্রসেসর আর হার্ডডিস্কের বদলে ফ্ল্যাশ ড্রাইভ ব্যবহার করায় এটি খুবই গরম হবে। সারাদিন ব্যবহার করলে সর্বোচ্চ ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপ বাড়তে পারে। একই কারণে চলার সময় কোনো নয়েজ হবে না।

এক বছরের ওয়ারেন্টিসহ দেশের বাজারে এর দাম ৭৩ হাজার ৬৬৬ টাকা।

এক নজরে ভালো
– ট্যাব কাম ল্যাপটপ, আকর্ষণীয় ডিজাইন
– চমৎকার পারফরম্যান্স, কয়েক রকম ইনপুট ও কানেক্টিভিটি সুবিধা

এক নজরে খারাপ
– স্ক্রিন রেজুল্যশন কিছুটা কম
– কিবোর্ডটি তেমন স্বাচ্ছন্দ্যকর নয়

*

*

আরও পড়ুন