কেজেড জেডএস৫ হেডফোন : দাম বিচারে মান ভালো

এস.এম. তাহমিদ, টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : বাজারে নিম্নমানের ইয়ারফোনের পরিমাণ এত বেশি, সেখান থেকে ভালোটি বেছে নেওয়া খুবই দুষ্কর। চীনা কোম্পানির হেডফোনের ছড়াছড়িই সব জায়গায়। এগুলোর মধ্যে কয়েকটি ব্র্যান্ড অবশ্য এখন বিশ্বমানের হেডফোনকেও টেক্কা দিচ্ছে। কেজেড এর মধ্যে অন্যতম।

এ ব্র্যান্ডের মাঝারি দামের মডেল ইন-ইয়ার মনিটর জেডএস৫ উন্নতমানের সাউন্ড দিতে সক্ষম, এমনটিই বলছেন অনেক ক্রেতা।

চলুন এ হেডফোনের বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

Techshohor Youtube

এক নজরে কেজেড জেডএস৫

  • ১৮ থেকে ২২০০০ হার্জ পর্যন্ত ফ্রিকুয়েন্সি রেসপন্স
  • ১৬ ওম ইম্পিডেন্স
  • ডুয়াল স্পিকার (১০মিমি ও ৬ দশমিক ৮ মিমি), ডুয়াল আর্মেচার মিলিয়ে কোয়াড ড্রাইভার
  • পরিবর্তনযোগ্য তার ও জ্যাক
  • বেশ কিছু রঙ, মূলত নীল ও রূপালি
  • রাবারের স্বচ্ছ ক্যাবল
  • মাইক্রোফোন ও একটি বাটন
  • বক্সে রয়েছে ৬ জোড়া টিপ

হেডফোনটির পারফরমেন্স সাধারণ ইয়ারবাডের চাইতে বেশ উন্নতমানের। যে কারণেই কিছুটা বিস্তারিত জানা প্রয়োজন।

বেজ : সাব-উফার ঘরানার বেজ দিতে সক্ষম হেডফোনটি। ইয়ারবাডের মাঝে ১০ মিলিমিটার স্পিকার শুধু বেজের জন্য সাধারণত ব্যবহার করা হয় না। তাই ভালোমানের প্লেয়ার বা ফোনের সঙ্গে ব্যবহার করা হলে বেজের কোনো কমতি হবে না।

বিশেষত সাবসনিক ‘কাঁপানো’ বেজের সঙ্গে ইয়ারবাডটিতে সাধারণ ধাক্কা মারা বেজের অপূর্ব মিশ্রণ রয়েছে।

মিড: মিড বেজ ও ভোকালের ক্ষেত্রে হেডফোনটিকে একটু কম নম্বর দিতে হবে। প্লেয়ার বা ফোনে মিড বাড়ানো না থাকলে বেজের আড়ালে কিছুটা চাপা পড়ে যেতে পারে মিড।

তবে সিঙ্গেল ড্রাইভার যে কোনো হেডফোনের চাইতে ক্লিয়ার সাউন্ড পাওয়া যাবে।

ট্রেবল : ৬ দশমিক ৮ মিলিমিটারের ড্রাইভারটি স্বচ্ছ ট্রেবল ও হাই ফ্রিকুয়েন্সি সাউন্ড দিতে সক্ষম। বিশেষত যারা মেটাল ও রক মিউজিক শোনেন তারা যতো ভালোমানের ফাইল ব্যবহার করবেন তত ক্লিয়ার সাউন্ড শুনতে পাবেন।

এর মধ্যে ফ্ল্যাক (FLAC) ফরম্যাট ও এমপিথ্রি ৩২০কিলোবিটের মধ্যে পার্থক্যগুলো পরিষ্কার পাওয়া যাবে।

ভলিউমের মাত্রা : চারটি ড্রাইভার প্রতিটি কানে থাকার ফলে হেডফোনটি চালাতে কিছুটা বেশি ভলিউম ব্যবহার করতে হবে। তবে কিছুটা ভালোমানের ফোনের জন্য সেটি সমস্যা নয়।

তবে সিগন্যাল টু নয়েজ রেশিও ভালো হওয়ার ফলে অল্প ভলিউম বাড়ালেই সাউন্ডে বেশ পরিবর্তন হয়। তাই বেশিরভাগ সময়ই পুরো সাউন্ডের দরকার হয় না।

ব্যবহারিক সুবিধা : হেডফোনটির বডি বেশ বড়সড় ও প্রচুর অ্যাঙ্গেলসমৃদ্ধ ডিজাইন রয়েছে। ফলে যাদের কান কিছুটা ছোট তাদের জন্য হেডফোনটি আরামদায়ক হবে না। যাদের কান বড় তাদের উল্টো ডিজাইনটি আরও সুবিধাজনক মনে হবে।

হেডফোনটির তার বদলের সুবিধা থাকায় ছিঁড়ে গেলেও সমস্যা নেই। উপরন্ত ক্যাবল বদলে হেডফোনটি ব্লুটুথের মাধ্যমে ব্যবহারের ও সুবিধা রয়েছে।

মাইক্রোফোন : মাইক্রোফোনের সাউন্ড যথেষ্ট পরিষ্কার। কথা বলতে বা ভয়েস কমান্ডের জন্য খুবই উপযোগী। তবে গান রেকর্ডিংয়ের মত উন্নতমানের কাজের জন্য যথেষ্ট নয়।

সাউন্ড ক্যান্সেলেশন : পুরোপুরি সিল করা বডির হেডফোনটি সঠিক টিপ ব্যবহারে বাইরের প্রায় সকল সাউন্ড বন্ধ করে দিতে সক্ষম। অ্যাকটিভ নয়েজ ক্যান্সেলেশন ছাড়া এর চাইতে বেশি সাউন্ড বন্ধ করা সম্ভব নয়।

হেডফোনটির ভালো অনেক দিক থাকলেও কিছু খারাপ দিকও রযেছে। কেননা এটি কানে থাকা অবস্থায় কিছুটা চাপ অনুভূত হতে পারে। গান শোনা ব্যতীত হেডফোনটি ব্যবহার না করাই শ্রেয়।

দাম বিচারে হেডফোনটির সাউন্ড অসাধারণ। এর জন্য অবশ্য প্রয়োজন ভালো ডিভাইস।

ফোনে বা প্লেয়ারে হাইফাই সাউন্ডের ব্যবস্থা না থাকলে বরং এর সাউন্ড কম মনে হবে। এর চাইতে হেডফোনটির সিঙ্গেল ড্রাইভার সংস্করণ-কেজেড জেডএসটি দেখা যেতে পারে।

দাম

বাজারে দুই হাজার ৬০০ থেকে দুই হাজার ৯০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে কেজেড জেডএস৫ হেডফোনটি।

এক নজরে ভালো

  • বিল্ড
  • সাউন্ড
  • ব্যবহার সুবিধাজনক, কেবল বদলানোর সুযোগ
  • প্রয়োজনে ব্লুটুথ করে নেওয়া যাবে

এক নজরে খারাপ

  • ভালো সোর্স প্রয়োজন
  • কোনো অ্যাক্সেসরিজ নেই
  • সাউন্ড আইসোলেশন কিছু ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত

*

*

আরও পড়ুন