![]() |
টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : ফোনের সঙ্গে হেডফোন থাকবে না তা কি হয়। স্মার্টফোন হলে তো কথাই নেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অবশ্য ডিফল্টভাবে হ্যান্ডসেটের সঙ্গে একটি হেডফোন পাওয়া যায়। অনেকের এর চেয়ে ভালো কিছু চাই।
সেক্ষেত্রে অবশ্য হাজারো হেডফোনের ভিড়ে সঠিকটি খুঁজে পাওয়া বেশ দুষ্কর। এমন ক্রেতারা নিজেদের প্রয়োজন অনুসারে যাতে পছন্দেরটি বেছে নিতে পারেন সেজন্য হেডফোনের রিভিউ থাকছে টেকশহর ডটকমে।
আজকের রিভিউ একটি বাজেট হেডফোনের। স্বল্পমূল্যে অসাধারণ পারফরমেন্সের স্মার্টফোন এনে হইচই ফেলে দেওয়া ওয়ানপ্লাস হেডফোনও বানাচ্ছে। এ ব্র্যান্ডের বুলেটস ভি২ হেডফোন কেমন কাজ করছে, চলুন সেটা দেখে নেওয়া যাক।
এক নজরে ওয়ানপ্লাস বুলেটস ভি২
ডিজাইন
হেডফোন ডিজাইন ও প্যাকেজিং নিয়ে অনেক নির্মাতারাই মাথা না ঘামালেও ওয়ানপ্লাস এখানে বেশ ব্যতিক্রম। ব্ল্যাক বক্সের মাঝে ম্যাট ব্ল্যাক কাগজে মোড়ানো অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি হেডফোনগুলো প্রথম দেখাতেই বেশ ভালভাবে নজরে আসবে।
ঝকঝকে পলিশ করা অ্যালুমিনিয়াম বডির হেডফোনটির সামনের সিলিকোন টিপ-টি অর্ধস্বচ্ছ করার ফলে হেডফোনটি দেখতে, ধরতে ও কানে পড়ে থাকতে খুবই প্রিমিয়াম।
মাত্র ১৪ গ্রাম ওজনের হেডফোনটি দীর্ঘ সময় কানে রাখলেও কোনও অস্বস্তি বা ব্যাথা অনুভবের সম্ভাবনা নেই।
প্যাকেটে দেওয়া তিন সাইজের সিলিকোন টিপগুলো একটু যাচাই করে নিজের কানের সঙ্গে যেটি সবচাইতে ভালভাবে ফিট হবে, সেটি ব্যবহারে সর্বাধিক আরাম ও ভালো সাউন্ড পাওয়া সম্ভব।
সাধারণত হেডফোনের ক্যাবল নিয়ে সমস্যার কমতি থাকে না। সেক্ষেত্রে ফ্ল্যাট প্লাস্টিকের ক্যাবলটি দুটি সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করেছে, প্যাচ লেগে যাওয়া থেকে মুক্তি ও টান লেগে সহজেই ছিড়ে যাওয়ার প্রবণতা রোধ।
ফ্ল্যাট ক্যাবল সাধারণত পেঁচিয়ে না গেলেও ক্যাবলের ভাঁজ সহজে সোজা না হওয়ার বিষয়টি বেশ সমস্যাজনক। ব্রেইডেড ক্যাবলের চাইতে ফ্ল্যাট ক্যাবল সাধারণত আরও দুর্বল হয়ে থাকে।
হেডফোনটির ডান কানের তারের ঠিক মাঝে দেওয়া হয়েছে মাইক্রোফোন ও তিনটি বাটন। মাাইক্রোফোনটির রেকর্ডিং যথেষ্ট ভালো মানের। শুধু কথা বলাই নয়, ছোটখাট রেকর্ডিংয়ের জন্যও এটা অনায়াসে ব্যবহার করা যাবে।
বাটনগুলো প্রেস করলে বেশ শক্তপোক্ত একটি ফিল পাওয়া যাবে। তবে মাইক্রোফোন অংশটির মূল সমস্যা বলা যেতে পারে, এটি অ্যালুমিনিয়ামের বদলে প্লাস্টিক ব্যবহার করায় বেশ কিছুটা দৃষ্টিকটু।
মাইক্রোফোনটি কলারের সঙ্গে আটকে রাখার জন্য ক্লিপও প্যাকেটে দেওয়া হয়নি।
অনেক হেডফোনে আজকাল এল আকৃতির ও গোল্ড প্লেটিং করা জ্যাক দেওয়া থাকে। ওয়ানপ্লাস বুলেটস ভি২-এর ক্ষেত্রে যা করা হয়নি। তবে মূল্য অনুযায়ী এটি তেমন বড় কোনও সমস্যা নয়।
পারফরমেন্স
এক লাইনে বলতে হলে, ওয়ানপ্লাস বুলেটস ভি২ অসাধারণ সাউন্ড দিতে সক্ষম। যারা কেনার কথা ভাবছেন আর দের না করে এ বাজেটের মধ্যে বেশ ভালো মানের এ হেডফোন কিনে ফেলতে পারেন।
একই মূল্যে খুব কম হেডফোনই এত ভালভাবে বেইস, মিড ও ট্রেবল ব্যালেন্স করতে পারে। এমনকি এর চাইতে আরও বেশি মূল্যের হেডফোনেও দেখা গিয়েছে এতটা খোলামেলা ও সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা সাউন্ড দিতে সক্ষম নয়।
এ হেডফোনের সাউন্ড সিগনেচার বলতে হলে বলা যেতে পারে, কিছুটা মিড-এর ওপর নির্ভর। এর ফলে বেইস ও ট্রেবলের ব্যালেন্স করা যাবে খুব সহজেই।
একমাত্র যারা হেডফোনে সাবউফারের মত বেইস পছন্দ করেন, তারা বাদে সবার কাছেই হেডফোনটি ভাল লাগবে।
হেডফোনে যেমন সাউন্ড পাওয়া যাবে, তেমন মাইক্রোফোনে ভালো মানের অডিও রেকর্ড করতেও সক্ষম বুলেটস ভি২। ভলিউম কন্ট্রোল বাটনগুলোও সঠিকভাবে ও সঠিক ফিল দিয়ে কাজ করতে সক্ষম।
পরিশেষ
একমাত্র ক্যাবল ও অডিও জ্যাকের মান ছাড়া বাকি কোনও দিক থেকেই বুলেটস ভি২- এর মার্কস কাটা সহজ নয়। অন্তত দেশের বাজারে সহজলভ্য হেডফোনের কথা চিন্তা করে বললে এ মূল্যে একমাত্র ওয়ানমোর ১এম৩০১ হেডফোনটিই পারবে এর সঙ্গে প্রতিযোগীতায় নামতে।
তবে যারা আরও কম বেইস ও সুক্ষ্ণ সাউন্ড খুঁজছেন, তারা সম্ভব হলে কে-জেড-এর হেডফোনগুলো দেখতে পারেন।
মূল্য
হেডফোনটি বাজারে ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
এক নজরে ভালাে
এক নজরে খারাপ
রিভিউটি তৈরি করেছেন টেক শহর ডটকমের কনটেন্ট কাউন্সিলর এস.এম. তাহমিদ