ইন্টারনেটে ভ্যাট চায় না সরকারও

internet service providers-techshohor

আল-আমীন দেওয়ান, টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : ইন্টারনেটে ভ্যাট চায় না সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের সর্বোচ্চ ফোরাম ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্কফোর্স।

আর এই ভ্যাট কমাতে বা অবলোপন করা বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছে টাস্কফোর্স নির্বাহী কমিটি। যেখানে বাস্তবায়নকারী হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয়কেও উল্লেখ করা হয়েছে।

গত ২৭ মার্চ ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্কফোর্সের নির্বাহী কমিটির সভায় সদস্যরা ইন্টারনেটের বিলের উপর যে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয় তা কমানো বা অবলোপন করার আলোচনা করেন। বিষয়টি উত্থাপন করেন তথ্যপ্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বার।

Techshohor Youtube

এ সময় সভায় উপস্থিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (বোর্ড প্রশাসন) এস এম আশফাক হুসেন জানান, ‘এ বিষয়টি ভ্যাট আইন দ্বারা নির্ধারিত। তবে নতুন ভ্যাট আইনটি ২০১৭ সালের জুলাই হতে কার্যকর হবে।’

এরপর নির্বাহী কমিটি রাজস্ব বোর্ডকে এই ভ্যাট কমানো বা অবলোপনের নির্দেশনা দেন। টাস্কফোর্সের ৭ম ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।

ইন্টারনেটের উপর ভ্যাট তুলে দেয়ার দাবি সাধারণ মানুষসহ দেশের তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিকম খাতের সকল ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তাদের।

internet service providers-techshohor

দেশের সফটওয়্যার খাতের শীর্ষ সংগঠন বেসিস-এর সভাপতি মোস্তাফা জব্বার টেকশহরডটকমকে জানান, ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়নে ইন্টারনেট হচ্ছে মহাসড়ক। এই মহাসড়কে টোল থাকা উচিত নয়। জনগণের ইন্টারনেট ব্যবহারে কোনোভাবেই ভ্যাট থাকবে না। এই ভ্যাট তুলে দেয়ার দাবি দীর্ঘদিনের এবং সকলের।

এই নির্দেশনার জন্য টাস্কফোর্সকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, এখন বাস্তবায়নকারীরা এর গুরুত্ব বুঝবেন আশা করছি।

অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকমিউনিকেশনস অপারেটরস অব বাংলাদেশ (অ্যামটব) এর মহাসচিব এবং প্রধান নির্বাহী টিআইএম নূরুল কবীর টেকশহরডটকমকে জানান, ইন্টারনেট ব্যবহারের ৯৫ শতাংশ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে হয়ে থাকে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন ধাপে ভ্যাট দেয়া হচ্ছে। যার চাপ প্রান্তিক মানুষের উপর পড়ছে। মোবাইল ইন্টারনেটের উপর ভ্যাট ও ট্যাক্স রহিত করা উচিত।

ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) এর সভাপতি এম এ হাকিম টেকশহরডটকমকে বলেন, ইন্টারনেট হতে সকল ভ্যাট-ট্যাক্স উঠিয়ে দেয়া হোক। এই দাবি দীর্ঘদিনের। যদি একান্তই ভ্যাট একেবারে তুলে না নেয়া যায় তাহলে অন্যান্য ইউটিলিটি সাভিসে যেমন নেয়া হয় ইন্টারনেটের ক্ষেত্রেও তেমন নেয়া হোক।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্য) এর সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসেন টেকশহরডটকমকে জানান,  আউটসোর্সিং সেবার ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ইন্টারনেট। এখন এই ইন্টারনেট কিনতে হচ্ছে ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিয়ে আর ক্লায়েন্টের কাছে সেবা হিসেবে নিতে পারছি সাড়ে ৪ শতাংশ। মওকুফ করলে খুবই ভাল কিন্তু যদি তা না হয় তাহলে এটা অন্তত সাড়ে ৪ শতাংশ করা হোক।

বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) এর পরিচালক শাহিদ-উল-মুনীর টেকশহরডটকমকে জানান, ইন্টারনেটের ভ্যাট মুক্তের দাবির বিকল্প নেই। দেশের তথ্যপ্রযুক্তি ইকোসিস্টেমে এই ইন্টারনেটের ভ্যাট অনেককিছুর খরচ বাড়িয়ে দেয়। এটি থাকা উচিত নয়।

ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর সভাপতি রাজীব আহমেদ টেকশহরডটকমকে জানান, ই-কমার্স খাতের অন্যতম ভিত্তি হল এই ইন্টারনেট। সেখানে ভ্যাট একটা প্রতিবন্ধকতা হিসেবেই আছে। এটি তুলে নিলে ই-কমার্সের সম্প্রসারণ দ্রুতগতির হবে।

*

*

আরও পড়ুন