![]() |
এস এম তাহমিদ, টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : স্মার্টফোন, স্মার্টটিভি, স্মার্টফ্রিজ, এমন কি স্মার্ট জ্যাকেটসহ আরও অনেক গ্যাজেটেই ফোন যুক্ত করে সেটি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর কারিশমায় সব কিছুই স্মার্ট হয়ে উঠছে।
তবে কিছুদিন আগে পর্যন্তও দৈনন্দিন ইলেক্ট্রনিকস যেমন- ফ্যান বা লাইটে এ সুবিধা ছিল না। ফিলিপস তাদের হিউ লাইটগুলোর মাধ্যমে নতুন যুগের সূচনা করে।
বাতির রঙ, কালার টেম্পারেচার ও ব্রাইটনেস বদলের সুবিধা মূলত জীবনকে সহজ করার জন্যই তৈরি করা হয়েছে। সঠিক রঙ, হোয়াইট ব্যালেন্স ও ব্রাইটনেস চোখের ওপর চাপ কমাতে সাহায্য করে।
হিউ লাইটের পথ ধরেই শাওমি তাদের ই-লাইট সিরিজে বেশ কিছু ডিভাইস নিয়ে এসেছে। সেগুলোর কয়েকটি নিয়েই আজকের রিভিউ।
প্রতিটি ডিভাইসেরই মূলে রয়েছে ওয়াই-ফাইয়ের মাধ্যমে সেগুলো ফোন থেকে নিয়ন্ত্রণের সুবিধা। ডিভাইসগুলো শাওমি ইলাইট অ্যাপের মাধ্যমে ওয়াই-ফাই ব্যবহার করে সংযুক্ত থাকে – ফলে ব্যবহারকারী একই ফোন থেকে প্রতিটি ডিভাইস নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।
ডিভাইসগুলোর মূল সুবিধাও কাছাকাছি। এগুলোর আলোর রঙ, ঔজ্জ্বল্য ও অন – অফ করা যাবে ফোন থেকেই। সাধারণ বাতি যেখানে একটি রঙেই সীমাবদ্ধ, সেখানে ই-লাইটগুলোর রঙ নিজের মনমতো বদলে নেয়া যাবে।
শাওমির দাবি অনুযায়ী, ১৬ মিলিয়ন কালার কম্বিনেশন পর্যন্ত করা সম্ভব। ইচ্ছে অনুযায়ী কালার ও হোয়াইট ব্যালেন্স ঠিক করে নেয়ার সুবিধা যেমন মজার, তেমনি ফটোগ্রাফি বা ভিডিওগ্রাফির ক্ষেত্রে বেশ কাজের।
১। ই-লাইট আরজিবিডব্লিউ বাল্ব
ই-লাইট সিরিজের প্রথম ডিভাইসটি হচ্ছে ই-লাইট আরজিবিডব্লিউ এলইডি বাল্ব। এটির ডিজাইন পুরোপুরি আর দশটি এলইডি বাল্বের মতই। ফলে বাসার যে কোনও লাইটের হোল্ডারেই এটি ব্যবহার করা যাবে।
ফুল কালার রেঞ্জ ও ব্রাইটনেস বদল করার সুবিধা সম্বলিত বাল্বটি ওয়াল হোল্ডার ছাড়াও ল্যাম্প ও ঝাড়বাতির সঙ্গেও ভালোভাবে কাজ করবে।।
ডিজাইনের দিক থেকে ফিলিপস হিউয়ের সাথে এটির বেশ ভালো মিল রয়েছে। দেখতে কোন আকারের বাল্বটির ওপরের অংশে রয়েছে লাইট ডিফিউজার ও নীচের অংশটি অ্যালুমিনিয়ামের ওপর প্লাস্টিক কোটিং দিয়ে তৈরি।
এটি ১৭০০কে থেকে ৬৫০০কে পর্যন্ত কালার টেম্পারেচার দেখাতে সক্ষম ও সর্বোচ্চ ৬০০ লুমেন আলো পাওয়া যাবে।
২। ই-লাইট বেডসাইড ল্যাম্প
দ্বিতীয় বাল্বটি শাওমি মূলত বিছানার পাশের টেবিলে রাখার জন্য তৈরি করেছে। ছোট সিলিন্ডারের মত দেখতে এটি একেবারে ১৭০০কে থেকে শুরু করে ৬৫০০কে পর্যন্ত কালার টেম্পারেচার দিতে সক্ষম।
আলোর রঙও বদলে ফেলা যাবে সহজেই। এটিতে বাড়তি সুবিধা হিসেবে রয়েছে সর্বোচ্চ ৪টি পর্যন্ত রঙ নিজ থেকেই সাইকেল করার মোড।
একই সঙ্গে ওপরে অবস্থিত টাচ সেন্সরের মাধ্যমে ব্রাইটনেস বাড়ানো-কমানো, কালার বদল ও স্লিপ টাইমার দেয়ারও সুবিধা রয়েছে।
তবে টাচ সেন্সর ছাড়াও ডিভাইসটি ই-লাইট অ্যাপের মাধ্যমেও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
৩। এমআই-জা ডেস্কটপ ল্যাম্প
সিরিজের তৃতীয় ডিভাইসটিও একটি ল্যাম্প। এটি মূলত ডেস্কে কাজ করার জন্য তৈরি। এতে রঙ বদলানোর সুবিধাটি রাখা হয়নি। কেননা ডেস্ক ল্যাম্পে সেটির প্রয়োজনও নেই।
কালার টেম্পারেচার ও ব্রাইটনেস কমানো বাড়ানোর সুবিধা অবশ্য বাদ দেয়া হয়নি। একইভাবে বাদ পরেনি ডায়ালের মাধ্যমে ফিচার দুটি নিয়ন্ত্রণের সুবিধাও।
বিশেষ ফিচার হিসেবে সময় অনুসারে আলো কমিয়ে চোখের ওপর চাপ কমানোর জন্য একটি টাইমার যুক্ত করা হয়েছে ।
৪। এমআই লাইটস্ট্রিপ
৫। এমআই এলইডি প্যানেল
উপরের তিনটি ডিভাইসই মূলত আলাদা লাইটিং ডিভাইস হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। সিরিজের শেষ দুটি ডিভাইস তৈরি করা হয়েছে ঘরের সঙ্গে লাইটিং প্রযুক্তি একেবারে খাপ খাওয়ানোর জন্য।
এমআই লাইট স্ট্রিপ ও ওয়াল এলইডি প্যানেল বলা যেতে পারে যথাক্রমে ই-লাইট বাল্ব ও ডেস্ক ল্যাম্পের দেয়াল ও সিলিংয়ে লাগানোর জন্য তৈরি সংস্করণকে।
এলইডি স্ট্রিপগুলো ১৬ মিলিয়ন কালার দেখাতে সক্ষম ও ওয়াল এলইডি প্যানেলগুলো কালার টেম্পারেচার ও ব্রাইটনেস বদলে ঘরে আলো দেয়ার জন্য তৈরি।
সব কয়টি ডিভাইস নিয়ন্ত্রণের জন্য শাওমি তৈরি করেছে ই-লাইট অ্যাপ। ঝামেলাবিহীন অ্যাপটির মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা একাধিক ই-লাইট ডিভাইস এক সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
নতুন ই-লাইট পেয়ার করা ও প্রয়োজনে টাইমার সেট করা – সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করবে এই একটি অ্যাপ।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে লাইটিং পুরো পরিবেশই বদলে দেয়ার ক্ষমতা রাখে। সেটি যদি সহজেই ফোন থেকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভ হয়, তাহলে তো কথাই নেই।
সব মিলিয়ে বলা যেতে পারে, এ ডিভাইসগুলো হয়ত কারো কাছে প্রয়োজনীয় নয়; কিন্তু ব্যবহারে বেশ মজা রয়েছে, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।
অনেকদিনের ইচ্ছা একটি ই-লাইট কেনার। দেশে পাওয়া যাবে?