![]() |
টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলল : দীর্ঘ প্রায় ৬ বছর নানা জটিলতার পর অবশেষে ডটবাংলার চালুর চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে বাংলাদেশ।
কান্ট্রি কোড টপ-লেভেল এই ডোমেইন হিসেবে বাংলাদেশের জন্য ডটবাংলার বরাদ্দ থাকলেও ডোমেইন ম্যানেজার হিসেবে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেডকে (বিটিসিএল) অনুমোদন দিচ্ছিল না আন্তর্জাতিক ডোমেইন ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইন্টারনেট করপোরেশন ফর অ্যাসাইন্ড নেইমস অ্যান্ড নাম্বারস (আইক্যান)আইক্যান।
আর আইক্যানের ওয়েবসাইটে রুট জোন ডাটাবেইজে স্পন্সরিং অর্গানাইজেশনে ডটবাংলার স্ট্যাটাসে ঝুলে থাকা ‘নট অ্যাসাইন’ উঠে স্পন্সর অর্গানাইজেশন হিসেবে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং ডোমেইন ম্যানেজার হিসেবে বিটিসিএলের নাম বসেছে।
শ্রীলংকার কলম্বোয় চলা এপনিকের সম্মেলন হতে ইন্টারনেট যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বিডিনগ বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান সুমন আহমেদ সাবির বুধবার টেকশহরডটকমকে জানান, এপিনিকের সম্মেলনে আইক্যানের টেকনিক্যাল বডির প্রতিনিধিরা এসেছিলেন। তাদের সঙ্গে আমিসহ বিডিনগ ও এপনিকের সংঙ্গে যুক্ত বাংলাদেশীরা বৈঠক করি। বৈঠকে টেকনিক্যাল কিছু বিষয় উঠে আসে যার জন্য বিষয়টি আটকে ছিল।
সুমন আহমেদ জানান, সমস্যা চিহ্নিত করে আমরা বিটিসিএলের সঙ্গে কথা বলি এবং তা ঠিক করতে বলে। বিটিসিএল তা ঠিক করার পর যথারীতি অনুমোদন দিয়ে দেয়া হয়।
তিনি জানান, আইক্যান এখন স্বাধীন। এটি এখন আর ইউএস কমার্সের অধীনে নয়। এটি এখন ইন্টারনেট কমিউনিটি দিয়ে চলে।
বুধবার সন্ধ্যায় টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম ফেইসবুক স্ট্যাটাসে জানান, ‘অবশেষে ‘ডট বাংলা ডোমেইন’ বাংলাদেশের অনুকূলে অনুমোদিত!’
তিনি বলেন, ‘প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আরেকটি কাজ সম্পন্ন হলো। অনেক চেষ্টার পর ‘ডট বাংলা ডোমেইন’ বাংলাদেশের অনুকূলে আইক্যান কর্তৃক বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। উক্ত ডোমেইনটি পাবার জন্য সিয়েরা লিওনও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল।’
এর আগে চলতি বছরের জুনে ডটবাংলার এর অনুমোদনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কমার্স সেক্রেটারির কাছে চিঠি লিখেছিলেন প্রতিমন্ত্রী।
অন্যদিকে আইক্যানের কাছে আবেদন করে ডোমেইন ম্যানেজার হিসেবে সকল কাজ সম্পন্ন করে রেখেছিল বিটিসিএল। দীর্ঘদিন আগে সংস্থাটির কাছে আবেদনও করে তারা। কিন্তু সংস্থাটির বোর্ড সভাতে অনুমোদনের জন্য তা উঠছিলই না।
এদিকে বিটিসিএলের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা টেকশহরডটকমকে জানান, দেশে ডোমেইন ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালনের সরকারি সিদ্ধান্তের পর বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক অপারেটরস গ্রুপের (বিডিনগ) সহযোগিতায় বিটিসিএল প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ সংগ্রহ, সার্ভার স্থাপন, বিভিন্ন কারিগরি প্রক্রিয়া ও ডোমেইন বিক্রির নীতিমালাও চূড়ান্ত করে রেখেছে।
প্রথমে ২০১৫ সালের আগস্টে ঘোষণা দেয়া হয় ১৬ ডিসেম্বর ইন্টারন্যাশনালাইজড ডোমেইন নেইমে (আইডিএন) বাংলার(ডটবাংলা) উদ্বোধন করা হবে। পরে ১৭ নভেম্বর বিটিআরসির সঙ্গে এক বৈঠকে টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম জানান, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন শুরুর কারণে ১৬ ডিসেম্বরের পরিবর্তে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে এটি উদ্বোধন হবে।
এর পর ৬ জানুয়ারি সচিবালয়ে সরকারের দুই বছরে টেলিযোগাযোগ বিভাগের অর্জন ও ভবিষৎত পরিকল্পনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তারানা আবারও বলেন, মাতৃভাষার প্রতি মর্যাদা জানিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলা ডোমেইন ডটবাংলার উদ্বোধন হচ্ছে। কিন্তু তাও হয়নি।
শেষমেস দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর বুধবার ডটবাংলার অনুমোদন পাবার সুখবর পান তারানা ।
২০১১ সালে ইন্টারন্যাশনালাইজড ডোমেইন নেইমে (আইডিএন) লেখার ভাষা হিসেবে বাংলা ভাষার আনুষ্ঠানিক অনুমোদন পায় বাংলাদেশ।
এর আগে ২০১০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক ডোমেইন হিসেবে ‘ডটবাংলা’ কার্যকর করতে আইক্যান এর কাছে আবেদন করেছিল। বাংলাদেশের আবেদনের পর সংস্থাটি বাংলা ভাষাকে মূল্যায়ন করে। এরপর ইন্টারনেট অ্যাসাইনড নাম্বারস অথোরিটির (আইএএনএ) অনুমোদনও মেলে।
অথচ এই ডটবাংলার দায়িত্ব কে নেবে সে বিষয়ে আইডিএনের কাছে আবেদন করে তা বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াটি অবশিষ্ট ছিলো। কিন্তু ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত এই সিদ্ধান্তই নেয়া হয়নি।
আল-আমীন দেওয়ান