ঝুঁকিতে বাংলাদেশ, ফুলছে ইন্টারনেট সিকিউরিটির ব্যবসা

Antivirus-techshohor

ইমরান হোসেন মিলন, টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : বাংলাদেশে মোট স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর ২৭.৬ শতাংশ ম্যালওয়ারে আক্রান্ত। এই আক্রান্তের হার বিবেচনায় বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে দ্বিতীয়।

অন্যদিকে কম্পিউটার ম্যালওয়ারে আক্রান্তের দিক থেকে বাংলাদেশ সপ্তম। আর দেশের ৬৩ শতাংশ কম্পিউটার এই ম্যালওয়ারে আক্রান্ত।

সম্প্রতি ইন্টারনেট সিকিউরিটি সেবাদাতা রাশিয়ান প্রতিষ্ঠান ক্যাসপারেস্কির ২০১৬ সালের প্রথম প্রান্তিকের বৈশ্বিক একটি সমীক্ষার ফলাফলে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

Techshohor Youtube

Antivirus-techshohor

এই তথ্যগুলোকে কাজে লাগিয়েই বিভিন্ন ইন্টারনেট সিকিউরিটি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান দেশে অ্যান্টিভাইরাসের বাজার তৈরিতে তাদের কার্যক্রম জোরালো করেছে। আর বাজার তৈরিতে প্রতিষ্ঠানগুলোর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বাংলাদেশে আনাগোনাও বেড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ফুলেফেঁপে উঠছে কোম্পানিগুলোর ব্যবসা।

এছাড়াও সম্প্রতি দেশের বেশকিছু প্রতিষ্ঠানে সাইবার আক্রমণের ফলে ইন্টারনেট সিকিউরিটির বিষয়টি সামনে এসেছে।  সবদিক বিবেচনা করে ইন্টারনেট সিকিউরিটি প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে তাদের আনাগোনা ও কর্মকাণ্ড বাড়িয়ে দিয়েছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশে এসেছিলেন জার্মান প্রতিষ্ঠান অ্যাভিরার এশিয়া ও মধ্য আরবের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার প্রদীপ্ত ভৌমিক।

বৈশ্বিক বিবেচনায় অ্যাভিরা অ্যান্টিভাইরাস ও সিকিউরিটি সেবায় এখন এক নম্বরে জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে ম্যালওয়ারে আক্রান্ত হওয়ার পরিমাণ বেশি। তবে সবকিছুর আগে দরকার সচেতনতা। আমরা ডিস্ট্রিবিউটর স্মার্ট টেকনোলজিসের সঙ্গে বাংলাদেশে সিরিউরিটি সচেতনতায় নানা কার্যক্রম হাতে নিচ্ছি। এর জন্য প্রতিষ্ঠানটি বিরাট অংকের টাকা বিনিয়োগ করছে বলেও জানান তিনি।

অ্যাভিরা বাংলাদেশে গ্রাহক বিবেচনায় তিন-চারে অবস্থান করছে বলে জানান স্মার্ট টেকনোলজিসের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মুজাহিদুল আর বিরুনী সুজন।

তিনি বলেন, এখন দেশে অ্যাভিরার ভালো একটা বাজার রয়েছে। তবে ঠিক কতোটা বাজার অ্যাভিরা দখল করে আছে তা ব্যবসায়িক প্রতিবন্ধকতায় না বললেও জানান, স্মার্ট টেকনোলজিস যেসব কম্পিউটার বিক্রি করে তার সঙ্গে অ্যাভিরা বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। আর এর বাইরেও মাসে কয়েক হাজার অ্যাভিরা অ্যান্টি ভাইরাস বিক্রি করে স্মার্ট।

সাত থেকে আট লাখ গ্রাহক নিয়ে বাংলাদেশে ক্যাসপারেস্কির অবস্থান এখন প্রথম বলে দাবি করেন ক্যাসপারেস্কি বাংলাদেশ ও ভুটানের পরিবেশক অফিস এক্সট্র্যাক্টসের প্রধান নির্বাহী প্রবীর সরকার।

তবে হঠাৎ করেই দেশে ইন্টারনেট সিকিউরিটি ও অ্যান্টিভাইরাসের কার্যক্রম বেড়ে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রবীর সরকার টেকশহরডটকমকে বলেন, দেশের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানে কোনো সিকিউরিটি এক্সপার্ট কর্মকর্তা নেই। এজন্য কম্পিউটারের তথ্য সুরক্ষা রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। সেই সিকিউরিটির কাজ এখন আমরা কিছুটা হলেও করতে পারছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখনো ক্যাসপারেস্কি এন্ট্রি লেবেলে কাজ করছে। মূল কাজ বলতে গেলে স্মার্টফোন ও কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের সচেতন করে তোলা। সেজন্য দেশে বেশকিছু ক্যাম্পেইনও পরিচালনা করা হচ্ছে।

আরেক অ্যান্টিভাইরাস ব্র্যান্ড পান্ডা দেশে জোর প্রচারণায় বাজার দখলে ব্যস্ত। ইতোমধ্যে দেশে পান্ডার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর নিয়োগও দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

প্রযুক্তি পণ্য পরিবেশক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ব্র্যান্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে অ্যন্টিভাইরাসের বাজার তৈরি করতে অফার, ক্যাম্পেইনসহ বিভিন্ন কাজ করা হচ্ছে।

দেশে স্লোভাকিয়ান অ্যান্টিভাইরাস ই-সেট বিপণন করে স্টারটেক অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মাহবুব আল রাকিব বলেন, দেশে আমরা প্রতিমাসে প্রায় দুই হাজার অ্যান্টিভাইরাস অ্যাক্টিভ করে থাকে। তবে এটি দিন দিন বাড়ছে।

দেশের বাজারে ই-সেটকে পরিচিত করাতে নানা ধরনের অফারসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কম্পিউটারের সঙ্গে বিনামূল্যে দিচ্ছে বলেও জানান রাকিব।

*

*

আরও পড়ুন