![]() |
ইন্দ্রজিৎ রায়, অতিথি লেখক : সেশনজট ও রাজনীতিমুক্ত যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) চার বছরে বিএসসি সম্মান ও ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স সম্পন্ন করে চমক সৃষ্টি করেছে। দেশের অন্যসব বিশ্ববিদ্যালয় রাজনৈতিক অস্থিরতায় জিম্মি হয়ে পড়লেও যবিপ্রবি এগিয়ে রয়েছে।
২০০৭ সালের ২৫ জানুয়ারি বাংলাদেশ গেজেট প্রকাশের মধ্যদিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্ম হয়। এই দিনটিকে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে বৃক্ষরোপন, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, আলোচনা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র মতে, ২০০০ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সদর উপজেলার রামনগরে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন কার্যক্রম শুরু হয়। তবে সরকার পরিবর্তনের ফলে সে পরিকল্পনা আওয়ামী লীগ সরকার বাস্তবায়ন করতে পারেনি। পরবর্তী চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসলে স্থান পরিবর্তন করেন যশোর শহর থেকে ১২ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের আমবটতলায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়।
২০০৬ সালের ৫ অক্টোর সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এর আগে ২০০৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি ও যন্ত্রকৌশল বিভাগের সিনিয়র প্রফেসর ড. রফিকুল ইসলামকে সরকার প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ করা হয। এ সময় ৩৫ একর জমি হুকুম দখল প্রক্রিয়া সম্পন্ন শেষে অবকাঠামো কাজ শুরু হয়।
২০০৭ সালের ২৫ জানুয়ারি যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ গেজেটে অন্তভূক্ত হয়। এরপর ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করার জন্য প্রকল্প পরিচালক ড. রফিকুল ইসলামকে যবিপ্রবি ভিসি নিয়োগ দেয়া হয়। তবে সরকার পরিবর্তনের পর ২০০৯ সালের ৭ এপ্রিল ভিসি ড. রফিকুল ইসলামের পরিবর্তে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ট্রেজারার প্রফেসর ড. আবদুস সাত্তারকে ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
প্রফেসর আবদুস সাত্তার দায়িত্ব নেয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিতে কাজ শুরু করেন। তার কর্মপরিকল্পনা ও শিক্ষক কর্মচারীদের নিরলস প্রচেষ্ঠায় অনেক পথ এগিয়ে গেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। পরিবর্তন এসেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো ও শিক্ষা কার্যক্রমে।
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ৫টি অনুষদে ১৬ টি বিষয়ে বিএসসি সম্মান ও বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চালু রয়েছে। এরমধ্যে ইঞ্জিনিয়ানিয়ারিং অনুষদের ৫টি বিভাগ, বায়োলজিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের ৪টি বিভাগ, অ্যাপ্লাইড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের ২টি বিভাগ, ফিজিক্যাল এডুকেশন ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড এথিক্যাল স্টাডিজ অনুষদের ২টি বিভাগ ও সায়েন্স অনুষদের ৩টি বিভাগ চালু রয়েছে। বর্তমানে ৮২ জন শিক্ষক, ৩২ জন কর্মকর্তা ও ৭৬ জন কর্মচারী কর্মরত আছেন।
ক্যাম্পাসে দুটি আবাসিক হল, অনুষদ ভবন, প্রশাসনিক ভবন, ভিসির বাসভবন, শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। আরও কয়েকটি অবকাঠামো নির্মাণ চলমান রয়েছে। বর্তমান সরকারের সার্বিক সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়টি বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।
সেশনজট ও রাজনীতিমুক্ত পরিবেশে যবিপ্রবিতে চার বছরের মধ্যে স্নাতক সম্মান ও ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স সম্পন্ন হয়েছে। যা বাংলাদেশের অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্ভব হয় না।
যবিপ্রবি’র জনসংযোগ কর্মকর্তা হায়াতুজ্জামান মুকুল জানান, বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, বৃক্ষরোপন, আলোচনা ও উৎসবের মধ্যে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপিত হবে।
লেখক : সাংবাদিক, দৈনিক সমাজের কথা (যশোর)