![]() |
আল আমীন দেওয়ান, টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও অনেকগুলো মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের তথ্যে পুরনো মন্ত্রীরাই দায়িত্বে রয়ে গেছেন।
এমনকি দেশের জাতীয় ওয়েব পোর্টালে সরকার প্রধান শেখ হাসিনাকে এখনও নবম সংসদের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে পরিচয় দেওয়া হয়েছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পোর্টালেও তিনি আগের সংসদের প্রধানমন্ত্রী।
এ ছাড়া জাতীয় ওয়েব পোর্টালটিতে মন্ত্রী পরিষদের কোনো তালিকাও দেওয়া হয়নি। সেখানে লেখা রয়েছে, ডাটা নট ফাউন্ড। নেই দশম জাতীয় সংসদ সদস্যেরও তালিকা। এখনও দেওয়া আছে নবম সংসদ সদস্যের তালিকা।
অন্যদিকে দশম সংসদ নির্বাচনের পর নতুন সাংসদরা শপথ নিলেও বাংলাদেশ সংসদ সচিবালয়ের ওয়েবসাইটও আপডেট করা হয়নি। সংসদ সদস্য ও সাংসদের সাথে যোগাযোগ মেন্যুতেও নবম সংসদের মন্ত্রীদের নাম দেওয়া রয়েছে।
এ দিকে অনেক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে মন্ত্রীদের প্রোফাইল দেখানোর কোনো অপশনও রাখা হয়নি। আবার কিছু মন্ত্রণালয়ের ওযেবসাইট নির্মানাধীন অবস্থায় রয়েছে। আর ২০১১ সালে গঠিত রেল ও ২০১২ সালে গঠিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটই নেই।
সরকারের ওয়েবসাইটগুলো এক সপ্তাহ পরও আপডেট না হওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন অনেকেই। তাদের মন্তব্য, বর্তমান সরকার আগের বার ক্ষমতায় থাকার সময়ই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়াকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। অথচ সরকারের তথ্য প্রকাশে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি ওয়েবপোর্টালসহ বেশিরভাগ ওয়েবসাইটে পুরনো তথ্য থাকা হতাশজনক।
মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত টেকশহরডকটমের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, পরিকল্পনা, ভূমি, আইন, সমাজ কল্যাণ ও ধর্ম মন্ত্রনালয়ের ওয়েবসাইটে এখনও দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হিসাবে পুরনোদের নাম শোভা পাচ্ছে।
অথচ গত ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষে ১২ জানুয়ারি নতুন সরকার শপথ গ্রহণ করে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২৯ জন মন্ত্রী, ১৭ জন প্রতিমন্ত্রী এবং দুজন উপমন্ত্রী শপথ নেন।
পরদিন সকল মন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেন। ৪০ মন্ত্রনালয়ের মধ্যে বেশ কয়েকজন মন্ত্রী আগের মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকলেও অনেকে নতুন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেন।
মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ওয়েবসাইট ঘেটে দেখা গেছে, পরিকল্পনা মন্ত্রণালযের অধীনস্থ পরিকল্পনা বিভাগের ওয়েবসাইটে অফিসার (প্ল্যানিং ডিভিশন) মেন্যুতে মিনিস্টার্স সাব মেন্যুতে এখনও মন্ত্রী হিসাবে এয়ার ভাইস মার্শাল(অব)এ কে খন্দকারের নাম রয়েছে। অথচ এ মন্ত্রণালয়ের নতুন মন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল। ওয়েবসাইটটি এখনও নির্মাণাধীন। নতুন মন্ত্রীর পরিচিতি কোথাও নেই।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে মন্ত্রী হিসাবে ছবিসহ এখনও নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রী আমির হোসেন আমুর প্রোফাইল রয়েছে। এ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব নেওয়া শামসুর রহমান শরীফের কোনো নাম বা পরিচিতি নেই।
আইন মন্ত্রণালয়ে এখনও ব্যারিস্টার শফিক আহমেদের নাম রয়েছে। অথচ নতুন সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে কি পার্সোনাল মেন্যুতে গেলে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে প্রমোদ মানকিনের নাম রয়েছে। কিন্তু এখানে মন্ত্রীর কোনো নাম বা পরিচিতি নেই। এ মন্ত্রণালয়ের নতুন মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এখনও মন্ত্রী হিসাবে মুজিবুল হকের নাম রয়েছে। অথচ নতুন মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছেন অধ্যক্ষ মতিউর রহমান।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটেও মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী কারও নাম বা প্রোফাইল আপলোড করা হয়নি। এ মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছেন বীর বাহাদুর।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের পোর্টালটি নির্মাণাধীন। তাই এ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীসহ কোন কিছুর তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মিনিস্টার প্রোফাইল এখনও নির্মানাধীন। এ মন্ত্রণালয়ের সাইটে প্রতিমন্ত্রীর পরিচিতির কোন অপশন রাখা হয়নি। এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে আছেন বীরেন শিকদার এবং উপমন্ত্রী আছেন আরিফ খান জয়।
এ ছাড়া পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও পশু সম্পদ মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর পরিচিতির কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি।
এ দিকে খাদ্য মন্ত্রণালয় বিভক্ত হয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নামে নতুন মন্ত্রণালয় এবং যোগাযোগ মন্ত্রণালয় বিভক্ত হয়ে রেল মন্ত্রণালয় গঠিত হলেও এ দুটি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট নেই।