![]() |
টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রযাত্রাকে অস্বীকার করার উপায় নেই। অসম্ভবকে সম্ভব করেছে এই প্রযুক্তি। তবে কিছু সত্যি বিষয় মানতে সত্যিকারেই কষ্ট হয়। এমনই অবিশ্বাস্য সাত সত্যি বিষয় নিয়ে এই প্রতিবেদন।
ফন্ট পাল্টালে প্রিন্টারের কালি কম খরচ হয়
একথা সত্যি যে সব ফন্ট সমানভাবে তৈরি হয়নি। বিভিন্ন কারণ বা উপলক্ষে ব্যবহারের জন্য মানুষ বিভিন্ন ধরণের ফন্ট তৈরি করে। এখন তত্ত্ব হলো, আপনি যদি হালকা ফন্ট ব্যবহার করেন তাহলে প্রতি পেইজে কালি খরচের পরিমাণ কিছুটা কমবে।
এ তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে আপনি যদি টোনার নির্ভর লেজার প্রিন্টার কিংবা যেমন প্রিন্টারে কালির ট্যাংক ব্যবহার করা হয় সেটি ব্যবহার না করে ইঙ্কজেট প্রিন্টারে হালকা ফন্টের লেখা প্রিন্ট করেন তাহলে ১০ শতাংশ কালি কম খরচ হবে।
ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের আগেই ইমেইল ছিল
বর্তমানে একটি ছোট মেইল লেখা ও পাঠানোর জন্য আপনাকে ভাবা লাগবে না। তবে এটা সবসময়ই সহজ ছিলো না। ইউটিউবে একটি মজার ভিডিও ক্লিপ আছে, যেটির টাইটেলের বাংলা অনুবাদ এরকম ‘কিভাবে ইমেইল পাঠাতে হয় – ডাটাবেজ – ১৯৮৪’।
এটি ডাটাবেজ নামে একটি টেলিভিশন প্রোগ্রাম ছিল, যেখানে উপস্থাপক সেই সময়ে কিভাবে সঠিকভাবে ইমেইল পাঠানো যায় সেটি দেখিয়েছে।
তখন মাইক্রোনেট নামের একটি সেবায় সংযুক্ত হতে ব্যবহারকারীদের একটি কম্পিউটার ও একটি রোটারি টেলিফোন ব্যবহার করতে হবে। এটি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের আগেই ছিল, ফলে কোনো ইউআরএল ছিল না। একটি সংখ্যানির্ভর ওয়েবপেইজ ছিল। ইমেইলের জন্য ওয়েবপেইজটির সংখ্যা ছিল ৭৭৭৬।
লেখা ধীরগতির করতেই কোয়ার্টি ডিজাইন করা হয়েছিল
কোয়ার্টি তৈরির পিছনে আসলে দুইটি তত্ত্ব ছিল। প্রথমত এটি ব্যবহারকারীকে ম্যানুয়াল টাইপরাইটারের অভিজ্ঞতা দেবে।
দ্বিতীয়ত যদি কেউ দ্রুত টাইপ করে তাহলে কী জ্যাম হয়ে যেতে পারে। একারণে কোয়ার্টিতে বর্ণগুলো আলাদা করে সাজানো হয়, যাতে টাইপ ধীরগতির হয়। অবশ্য এখন সেটি দ্রুতগতিতে টাইপ করতেই ব্যবহার করা হয়।
বিশ্বের ৯২ শতাংশ মুদ্রাই ডিজিটাল
বিষয়টি ভাবতেই অবাক লাগে। বিশ্বের মাত্র ৮ শতাংশ মুদ্রা হাতে ছোয়া যায়। বাকি ৯২ শতাংশ মুদ্রা কম্পিউটার হার্ডড্রাইভ তথা অনলাইনে সংরক্ষিত।
ব্যাংক ইলেক্ট্রনিক্যালি মুদ্রা সংস্করণের পাশাপাশি এই ৯২ শতাংশের মধ্যে রয়েছে ক্রেডিট/ডেবিট কার্ডের ট্রানজেকশন ও ওয়্যার ট্রান্সফার।
হ্যাকাররা অনলাইনে মাধ্যমে কি পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তার উদাহরণ থেকেই ডিজিটাল মুদ্রার এই পরিমাণ বুঝতে পারা যায়।
১৯৯৫ এর আগে ডোমেইন নিবন্ধন ফ্রি ছিল
এখন উচ্চদামেও পছন্দের ডোমেইন কেনা অনেকটাই দায়। কারণ এত বিশাল পরিমাণে ডোমেইন কেনা হয়েছে যে পছন্দের ডোমেইন নাম পাওয়া যায় না। অথচ একসময় ডোমেইন বিনামূল্যে দেওয়া হতো।
১৯৯৫ সাল পর্যন্ত ডোমেইন বিনামূল্যে পাওয়া যেতো। ওই বছর নেটওয়ার্ক সল্যুশনস নামে একটি কোম্পানি ডোমেইন নামের জন্য দাম নির্ধারণ করে এবং সেটি উচ্চমূল্যের ছিল।
দুই বছরের জন্য একটি ডোমেইন ১০০ ডলার নির্ধারণ করা হয়। যদিও এই দামের ৩০ শতাংশ ইন্টারনেট ইন্টেলেকচুয়াল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফান্ড তৈরির জন্য ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশনকে দেওয়া হতো। পরে এই দাম ৭০ ডলারে নামিয়ে আনা হয়।
৫ মেগাবাইট ডাটার ওজন ১ টন
১৯৫৬ সালে আইবিএম রামাক নামে একটি কম্পিউটার উন্মোচন করে যাতে আমরা বর্তমানে যে হার্ডড্রাইভ ব্যবহার করি সেটি প্রথম ব্যবহার করা হয়েছিল। পাঞ্চ কার্ড ও ম্যাগনেটিক টেপের পরিবর্তে এটি ব্যবহার ছিল একটি মাইলফলক।
রামাক স্বয়ং অ্যাকাউন্টিং ও কনট্রোলের র্যানডম অ্যাক্সেস পদ্ধতি ছিল। এর পুরো কেবিনটি ১ হাজার কেজির বেশি ওজন ছিল এবং ৫ মেগাবাইট ডাটা ৫০টিরও বেশি অ্যালুমিনিয়াম ডিস্কে ছড়ানো লাগতো, যাতে ম্যাগনেটিক আইরন অস্কাইডের আবরণ দেওয়া থাকত।
সেই সময় একদিন এই মেশিনটি ভাড়া নিতে ৩ হাজার ২০০ ডলার খরচ করতে হতো।
১৯৩৬ সালে রাশিয়া পানিচালিত কম্পিউটার তৈরি করে
ট্রানজিস্টর তৈরির আগে কম্পিউটার ছিল বিশালাকৃতির। সেখানে গিয়ার, পিভট, বিটস, লেভারসহ বিভিন্ন বড় যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হতো। আর এগুলো চালানোর জন্য কিছু শক্তির উৎসের প্রয়োজন হতো।
১৯৩৬ সালে ভ্লাদিমির লুকিয়ানভ এমই কিছু তৈরি করেছিলেন। কিন্তু তিনি পানি ব্যবহার করেছিলেন কম্পিউটার তৈরি করেছিলেন, যা পার্থক্যমূলক সমীকরণ সমাধান করতো।
লুকিয়ানভ কম্পিউটার দেখলে সেখানে কিছু আন্ত:সংযোগকৃত পানিভর্তি টিউব দেখা যাবে। সেটাতে ট্যাপ ও প্লাগের সমন্বয়নের মাধ্যমে পানির গতিবেগে চালানাে হয় এবং নির্ধারিত টিউবে পালির লেভেল পরিমাপ করা হয়।
একে ওয়াচার ইন্টিগ্রেটরও বলা হয়, যা প্রকৃতঅর্থে কনক্রিট ভাঙ্গার কাজে ব্যবহার করা হয়। এটি বর্তমানে মস্কোর পলিটেকনিক জাদুঘরে দেখা যায়।
ইকোনমিক টাইমস অবলম্বনে ফারজানা মাহমুদ পপি