ই-লার্নিংয়ে প্রথম বাংলা বইয়ের মোড়ক উম্মোচন সোমবার

টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : ই-লার্নিং নিয়ে বাংলা ভাষায় প্রথম বইয়ের মোড়ক উম্মোচন হচ্ছে সোমবার। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্প এই বই প্রকাশ করছে।

বইটি বিশ্বে মডার্ন ই-লার্নিংয়ের পথিকৃৎ ড. বদরুল হুদা খানের। দেশের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং পাঠকদের উপযোগী রেখে এটি বাংলায় অনুবাদ করেছে এটুআই।

বইটির নাম ‘ই-লার্নিং: উম্মুক্ত এবং বিভাজিত শিখণ পরিবেশ’।

Techshohor Youtube

সোমবার বিকালে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসএসএফ ব্রিফিং কক্ষে বইয়ের মোড়ক উম্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালেয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, উম্মুক্ত বিশ্বদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এম এ মান্নান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন, শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক ড. মো. আবদুল আউয়াল খান, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিয়া ইনামুল সিদ্দিকী এবং এটুআইয়ের প্রকল্প পরিচালক কবির বিন আনোয়ার।

বইটি প্রকাশের দায়িত্বে ছিলেন এটুআই প্রোগ্রামের ই-লার্নিং বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ফারুক আহমেদ। এর আগে তিনি টেকশহরডটকমকে জানিয়েছিলেন, ই-লার্নিং নিয়ে বাংলা ভাষায় প্রথম বই প্রকাশ করছে এটুআই।

e learning book

ড. বদরুল হুদা খান টেকশহরডটকমকে জানান, বইটি বাংলাদেশের আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থায় এক দিগন্তের সূচনা করবে।

তিনি জানান, বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তির আশীর্বাদে বিশ্বে কম খরচে বা বিনামূল্যে লেখাপড়ার সুযোগ ‘শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ’ ক্ষেত্রে এক নতুন বিপ্লব। এটি আশির দশকে আমরা ভাবতেও পারিনি। আমি বাংলাদেশ থেকে আমেরিকায় আসি ১৯৮১ সালের জুলাই মাসে। এখনকার মত যদি তখন ইন্টারনেটের মাধ্যমে লেখাপড়া করার সুযোগ থাকত তবে আমাকে হয়ত এত কষ্ট করে বিদেশে আসতে হত না । আর এখন আমরা বাংলাদেশে বসে বিশ্বের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ক্লাস করতে পারি। অনলাইনে এই শিক্ষাব্যবস্থাই ‘ই-লার্নিং’ নামে এখন বিশ্বব্যাপী পরিচিত।

তিনি বলেন, ই-লার্নিং নিয়ে বাংলা ভাষায় প্রথম এই বইটি সম্পূর্ণ ই-লার্নিং ফ্রেমওয়ার্কের উপর ভিত্তি করে রচিত হয়েছে। ই-লার্নিং ফ্রেমওয়ার্কের উপর ভিত্তি করে রচিত এই বইয়ের প্রধান উদ্দেশ্য হল -শিক্ষার্থীদের চাহিদামত ফ্লেক্সিবল ও উন্নতমানের অর্থপূর্ণ ই-লার্নিং শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়নে সহায়তা করা।

ড. খান বলেন, বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতামূলক ডিজিটাল বিশ্বে সফল হতে হলে আমাদেরকে সর্বস্তরের শিক্ষা ব্যবস্থায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে। সোজা কথা প্রযুক্তি গ্রহণে আমরা আর পিছিয়ে থাকতে পারব না । আমাদের শিক্ষার্থীরা খুব অনুসন্ধিৎসু মনের অধিকারী । তারা খুব জানতে ও শিখতে চায়। এই বই তাদের সেই ক্ষুধা সহজে মেটাবে।

উল্লেখ্য, উন্নত দেশগুলোর নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ড. বদরুল হুদা খানের তৈরি করা ই-লার্নিং ফ্রেমওয়ার্ককে ভিত্তি ধরে চালু করেছে পিএইচডিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কোর্স।

কমনওয়েলথভুক্ত উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্যও এ শিক্ষাবিদ ই-লার্নিংয়ে পৃথক পরিকল্পনা দিয়েছেন তিনি। ন্যাটো ই-লার্নিং ফোরামও তাঁর ফ্রেমওয়ার্ক ধরেই কাজ করছে। যেটির পরামর্শকও এই অধ্যাপক।

ই-লার্নিং নিয়ে ১৯৯৭ সালে প্রকাশিত তাঁর বই ‘ওয়েব-বেইজড ইনস্ট্রাকশন’ যুক্তরাষ্ট্রে বেস্ট সেলার। বইটি বিশ্বের প্রায় ৫০০ বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্যপুস্তক ও রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহূত হচ্ছে। ই-লার্নিংয়ে তাঁর বিভিন্ন বই প্রকাশিত হয়েছে বিশ্বের ১৭টি ভাষায়।

মিসরীয় ই-লার্নিং ইউনিভার্সিটি কাউন্সিলের অনারারি অধ্যাপক, যুক্তরাষ্ট্রের জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস, ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটির সাবেক এ অধ্যাপক বাংলাদেশেরই কৃতী সন্তান।

শিক্ষায় প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা বিশ্বখ্যাত অ্যাসোসিয়েশন ফর এডুকেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজির (এইসিটি) সাবেক এ সভাপতি ভার্চুয়াল এডুকেশনে হোয়াইট হাউস অফিস অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি পলিসির (ওএসটিপি) একজন পরামর্শকও।

ই-লার্নিং শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে এডিবি, ইউএস ফেডারেল ডিপার্টমেন্ট, শিক্ষা দপ্তরসহ বিভিন্ন বহুজাতিক ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন ড. খান।

আল-আমীন দেওয়ান

*

*

আরও পড়ুন