![]() |
বিজ্ঞাপনের ডাইলগ অনুকরণে বলা যায়-শখ থেকেই দারুণ কিছু। সঙ্গে যোগ হয়েছে ফেইসবুকের জনপ্রিয়তা। দুইয়ের কল্যাণে নতুন পরিচিতি পেয়েছেন, গড়ে তুলেছেন আর্টিস্টার মতো সফল উদ্যোগ। সেই গল্প জানাচ্ছেন ইমরান হোসেন মিলন
তাকে এখন ঘর সাজনদার বললে ভুল বলা হবে না। তবে তার কাজ করার কথা ছিল কেমিক্যাল নিয়ে, মনোনিবেশের কথা ছিল নতুন যৌগ তৈরিতে। অথচ কেমিক্যালের সেই বিক্রিয়া বদলে গেছে তার সৃষ্টিশীলতায়।
এখনও কেমিক্যাল নিয়ে কাজ করেন কানিজ ফাতেমা ছন্দা, যদিও তা রঙ বানাতে। সেই রঙ নিয়ে তার কারিকুরি নজরও কেড়েছে অনেকের। তাইতো বদলে গেছে তার কাজের ধরণ। রসায়নবিদ হওয়ার বদলে হয়ে গেছেন ডিজাইনার। এফ-কমার্সকে কাজে লাগিয়ে নিজের সৃষ্টিশীলতা ছড়িয়ে দিয়েছেন আর্টিস্টা নামের এক উদ্যোগের মাধ্যমে। হয়ে উঠেছেন সফল উদ্যোক্তা।
ঢাকায় বেড়ে ওঠা ছন্দা পড়াশোনা করেছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে। পরে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্র অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজিতে। সেখান থেকে শেষ করেছেন স্নাতক।
তার কাজের শুরু প্রায় দেড় বছর আগে। রঙয়ের প্রতি মুগ্ধতা নিয়ে ইচ্ছেমতো আঁকিবুঁকি করতেন, যা দেখে অনেকেই তাকে উৎসাহ যোগান। ভিন্ন কিছু করতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।
ছন্দার সঙ্গে কথা হলে তিনি টেকশহর ডটকমকে জানান, রঙ নিয়ে পেশাদার কাজ করবেন সেটা কখনও ভাবেননি। শখ করে বাসায় রঙয়ের কাজ করতেন বিভিন্ন ধরনের জিনিস নিয়ে।
দেয়ালঘড়ি, ফ্রেমে ঝোলানো পেইন্টিং, কারুশিল্প বা ক্যালেন্ডারের বাইরে ভিন্ন আঙ্গিকে ঘরের দেয়াল সাজাতে চেয়েছিলেন। সেই চিন্তা থেকেই রঙ নিয়ে কাজ করার ব্যাপারটি তার মাথায় আসে।
রঙ নিয়ে কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন বিষয়ের সঙ্গে পরিচিতি বাড়তে থাকে। অল্প দিনেই তার কাজ ফেইসবুকে পেইজের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। অনেকের আগ্রহ ও পরামর্শে শুরু করেন রঙ ব্যবহার করে ইন্টেরিয়র ডিজাইনের কাজ। পাশাপাশি মোবাইল ফোনের ব্যাক কভারের কাস্টমাইজ ডিজাইনও করতে থাকেন।
শখ থেকে স্বপ্নে পরিণত হওয়া তার সেই ক্ষুদ্র প্রয়াস এক সময় রূপ নেয় আর্টিস্টা’য়। এ ইন্টেরিয়র ডিজাইন প্রতিষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু গত বছরের মে মাসে।
ছন্দার ভাষায়, মোবাইলের ব্যাক কাভারে কাস্টোমাইজ ডিজাইন করেন ব্যবহারকারীদের পছন্দের চরিত্র বা রঙ দিয়ে। দেখা গেল কারো পছন্দ হ্যারি পটার, কারওবা সিনড্রেলা। সেগুলোকে ব্যাক কভারে ফুটিয়ে তুলে বাহবা পেতে থাকেন, সঙ্গে উপার্জনও হতে থাকে।
সেই ব্যাক কভারের কাজ এখনও করেন ছন্দা। তবে এখন বেশিরভাগ কাজ করেন আর্টিস্টা নিয়ে। রঙ দিয়ে বাসার বা অফিয়ের দেয়ালে পেইন্টিংয়ের মতো ইন্টেরিয়র ডিজাইনের কাজ করেন।
ভরসা এফ কমার্স
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকের মাধ্যমেই তার প্রতিষ্ঠানের বিপণনের কাজ চলছে। এফ কমার্সের মাধ্যমেই নিজেদের উদ্যোগকে এগিয়ে নিচ্ছেন। এখনও বিকল্প কিছু ভাবেননি বলেও জানান তরুন এ উদ্যোক্তা।
তবে দু-একটি অনলাইন সাইটে আর্টিস্টার বিজ্ঞাপন দিয়েছেন তাদের কাজ সম্পর্কে জানান দিতে।
এফ-কমার্সের অসুবিধা
প্রথমদিকে ছন্দা বেশ কয়েকটি বড় ধরনের ফ্রড বা জালিয়াতির শিকার হয়েছেন। তিনি বলেন, ফেইসবুকের মাধ্যমে বেশকিছু অর্ডারের কাজ করেও পেমেন্টে কিছু সমস্যা হয়েছে। তবে এখন তা আর হয় না বলে জানান তিনি।
কাজ করেন গ্রুপ করে
প্রথমদিকে একা কাজ করলেও এখন কাজের পরিধি বেড়েছে। ছোট গ্রুপ থেকে এখন অনেক বেশি সদস্য নিয়ে দলবেধে কাজ করছেন। এ উদ্যোক্তা জানান, এক-দেড় বছরের পথচলায় তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বেশ কয়েকজন। এখন তার প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন ১০ কর্মী। ফেইসবুক পেইজটাও চালান সবাই মিলেই।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
মেয়েদের সাইক্লিং, স্বেচ্ছায় রক্তদানের মতো সামাজিক অনেক কাজের সঙ্গে জড়িত ছন্দার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার পুরোটাই আর্টিস্টাকে ঘিরে। কাজের ক্ষেত্রকে আরও বাড়াতে চান এ উদ্যোক্তা। লাখো ঘরের দেয়ালে আর্টিস্টার শিল্পকর্ম শোভা পাবে এমন স্বপ্ন দেখেন তিনি।
যোগাযোগের ঠিকানা
১৫২/২/আই
দ্বিতীয় তলা
পান্থপথ, ঢাকা।
মোবাইল : ০১৭০৪৮৯৪৪৭৭।
এ লিংকে ফেইসবুক ঠিকানা