![]() |
অনন্য ইসলাম, টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : রবি ও এয়ারটেলের একীভূতীকরণের বিষয়টি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনেস্ট্রেশন (আইবিএ) বিভাগের পরামর্শক্রমে সুরাহা করার কথা ভাবছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন বিটিআরসি।
উভয় মোবাইল ফোন অপারেটরের কর্মকর্তারা রোববার কমিশনের নতুন চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদকে এ বিষয়ের সর্বশেষ অগ্রগতি ও বিস্তারিত প্রক্রিয়া জানান। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ বা অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়কে এর সঙ্গে যুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা হয়।
কমিশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে অপারেটর দুটি একীভূতীকরণের কার্যক্রম শেষ হতে আরও খানিকটা সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছে সূত্র।
আরও পড়ুন: কোটি গ্রাহকে এয়ারটেল
এর আগে রবি ও এয়ারটেলের কাছে বকেয়া দেনা-পাওনা, কর ও ভ্যাট পরিশোধসহ বিভিন্ন বিষয় পরিশোধের অঙ্গীকার ও নিশ্চয়তা চেয়েছে বিটিআরসি।
কমিশন বলছে, এয়ারটেলের কাছে সরকারের পাওনা পরিশোধে বা যেসব বকেয়া দাবিযোগ্য সেগুলোর বিষয়ে রবিকে নিশ্চয়তা দিতে হবে। রবি অবশ্য ইতিমধ্যে এ নিশ্চয়তা দিয়েছে।
একই সঙ্গে কর্মীদের অবসর বা বাধ্যতামূলক চাকুরিচুত্যির মতো কোনো ঘটনা যাতে না ঘটে সে বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। তবে বিষয়ে রবি এখনও পরিস্কার করে কিছু বলেনি।
সূত্র জানায়, স্থায়ী, চুক্তিভিত্তিক ও শিক্ষানবীশ মিলিয়ে রবির কর্মী রয়েছে ১ হাজার ৬২৫ ও এয়ারটেলে ৭৫০ জন। মূলত নেটওয়ার্ক ব্যবস্থাপনা, কল সেন্টার, গ্রাহক সেবা কেন্দ্র এবং পণ্য ও সেবার পরিবেশনায় কাজ করছেন তারা। রবি আড়াই হাজার ও এয়ারটেল প্রায় দুই হাজার কর্মী সংগ্রহ করেছে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে।
এর আগে একীভূত হওয়ার অনুমোদন চেয়ে গত ১৭ সেপ্টেম্বর বিটিআরসিতে আবেদন করে রবি ও এয়ারটেল।
রবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সুপুন বীরাসিংহে ও এয়ারটেল বাংলাদেশের সিইও পিডি শর্মা স্বাক্ষরিত যৌথ আবেদনে বলা হয়, প্রতিষ্ঠান দুটি একীভূত হলেও তাতে গ্রাহকদের কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না। বরং আরও উন্নত ভয়েস ও ডাটাভিত্তিক সেবাদান সম্ভব হবে।
প্রথম দিকে পরিকল্পনা করা হয়েছিল জানুয়ারির মধ্যে এ প্রক্রিয়া হবে। তবে নানা কারণেই তা পিছিয়ে যাচ্ছে।
টুজি ও থ্রিজি লাইসেন্সের আওতায় প্রতিষ্ঠান দুটিকে বিভিন্ন ব্যান্ডে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে মোট ৩৯ দশমিক ৮ মেগাহার্টজ তরঙ্গ। এর মধ্যে টুজিরতরঙ্গ হিসেবে ৯০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডে রবির ৭ দশমিক ৪ ও এয়ারটেলের ৫ মেগাহার্টজ বরাদ্দ রয়েছে।
এ ছাড়া ১ হাজার ৮০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডে রবির বরাদ্দ রয়েছে ৭ দশমিক ৪ ও এয়ারটেলের ১০ মেগাহার্টজ। থ্রিজির তরঙ্গ হিসেবে দুইপ্রতিষ্ঠানকেই ২১০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডে ৫ মেগাহার্টজ করে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
আগস্টের শেষে গ্রামীনফোনের অ্যাক্টিভ গ্রাহক ৫ কোটি ৫৪ লাখ, রবরি গ্রাহক ২ কোটি ৮৩ লাখ। অন্যদিকে এয়ারটেল আছে ৯৩ লাখে।
এ হিসাবে রবি ও এয়ারটেলের মোট গ্রাহক দাঁড়ায় ৩ কোটি ৭৭ লাখ; যা দ্বিতীয় শীর্ষ সেলফোন অপারেটর বাংলালিংকের চেয়ে ৪৮ লাখ বেশি।
১৯৯৭ সালে একটেল নামে সেলফোন সেবা চালু করে এ কে খান গ্রুপ ও মালয়েশিয়াভিত্তিক প্রতিষ্ঠান টেলিকম মালয়েশিয়া। পরে ২০০৯ সালেপ্রতিষ্ঠানটির সব শেয়ার কিনে নেয় আজিয়াটা গ্রুপ বারহাদ। ২০১০ সালে রিব্র্যান্ডিংয়ের মাধ্যমে রবি নামে কার্যক্রম শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি।
রবির ৯১ দশমিক ৬ শতাংশ শেয়ারের মালিক আজিয়াটা গ্রুপ। বাকি ৮ দশমিক ৪ শতাংশ শেয়ারের মালিক জাপানের এনটিটি ডোকোমো।
ভারতী এয়ারটেল বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে ২০১০ সালে। সে সময় ওয়ারিদ টেলিকমের ৭০ শতাংশ শেয়ার কিনে প্রতিষ্ঠা করা হয় এয়ারটেল বাংলাদেশ। ২০১৩ সালে ওয়ারিদের বাকি ৩০ শতাংশ শেয়ারও কিনে নেয় ভারতী এয়ারটেলের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ভারতী এয়ারটেল।
আরও পড়ুন: