ব্লগিং শুরুর জরুরি ৫ ধাপ

মোশাররফ রুবেল, অ্যাপ ডেভেলপার, অতিথি লেখক : জানা বিষয়গুলো নতুন করে ভিন্ন আঙ্গিকে জানানো কিংবা নিজের মতামত ও চিন্তাভাবনা প্রকাশ করার চমৎকার মাধ্যম হলো ব্লগিং। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনলাইনের বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে ব্লগিংও বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তবে মাধ্যমটিকে পেশা হিসেবে নেওয়া যেতে পারে।

ব্লগিং কিভাবে শুরু করা যায় সেটা নিয়ে আছে অনেক প্রশ্ন। ব্লগিং শুরুর ক্ষেত্রে এ আর্টিকেল সেই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেবে।

ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম ঠিক করা
প্রথমেই ঠিক করে নিতে হবে ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম কোনটা হবে, কি হবে। এ জন্য এখন পর্যন্ত সেরা হচ্ছে ওয়ার্ডপ্রেস। নিচের ছবিটি লক্ষ্য করলে ব্যাপারটা পরিষ্কার বোঝা যাবে।

Techshohor Youtube

12083991_1108457435854353_2087455355_n

ওয়ার্ডপ্রেস সহজেই ইনস্টল করা যায়। এর ব্যবহারও সহজ হওয়ায় এটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তা ছাড়া এটি সম্পূর্ণ ফ্রি। প্রচুর ভালো থিম অনলাইনে বিনামূল্যে পাওয়া যায়।

এ মাধ্যমে কোনো কাজ করার সময় আটকে গেলে সহজেই সাপোর্ট পাওয়া যায় অনলাইনে। শেয়ারিং, কমেন্ট করা যায় খুব সহজেই। এসব কারণে ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপার এবং সাইট ওনারদের কাছে প্রথম পছন্দ।

এছাড়াও আরও দুইটি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম রয়েছে, একটি হচ্ছে ব্লগার ডটকম আরেকটি টাম্বলার ডট কম।

 ফ্রি বনাম ডোমেইন হোস্টিং নিয়ে ব্লগ তৈরি
নিজের সাইটে ব্লগিং করার ক্ষেত্রে কর্ম পরিকল্পনা বাস্তবায়নের এ ধাপে এসে আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ফ্রি সাইট তৈরি করবে নাকি পেইড সাইট।

ফ্রি ব্লগের ইউআরএলে ওই প্ল্যাটফর্মের এক্সটেনশান থাকবে। কিনে নিলে সেখানে শুধুই সাইটের নাম থাকবে।

ফ্রি হলে সাইটের নাম হবে নিম্নরুপ :

  • আপনারব্লগ ডট ব্লগস্পট ডটকম ( www.yourblog.blogspot.com )
  • আপনার ব্লগ ডট ওয়ার্ডপ্রেস ডটকম ( www.yourblog.worpress.com )

এ ছাড়াও ফ্রি ব্লগে বেশ অনেক রকমের লিমিটেশন থাকে। মনেটাইজ করায় সমস্যা হতে পারে। ওয়ার্ডপ্রেসের ক্ষেত্রে ফ্রি থিম ব্যবহার করাও যাবে না।

তবে ব্লগারে টেমপ্লেট পরিবর্তন করা যাবে। গুগল অ্যাডসেন্স ব্যবহার করে মনেটাইজ করাও যাবে।

ডোমেইন হোস্টিং কিনে ব্লগ করলে এসব সমস্যা হয় না। বর্তমানে দুই হাজার টাকার মধ্যেই ভালো মানের ডোমেইন হোস্টিং নিয়ে ব্লগ শুরু করা যায়।

ডোমেইনের নাম প্রদান
ফ্রি নাকি পেইড এ সিদ্ধান্তে আসার পরের ধাপ হলো ডোমেইনের নাম ঠিক করা। এ জায়গায় অত্যন্ত সতর্ক হতে হয়। ব্লগের ডোমেইন নাম যেন ব্লগের মূল বিষয়কে ১ বা ২ শব্দে বোঝাতে পারে সেভাবে সিলেকশন করতে হবে।

যেমন, টেকনোলজি সম্পর্কিত কোনো ব্লগ করা হলে সেটা যেন ব্লগের নাম থেকেই বোঝা যায় সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

কেউ যদি স্পোর্টস নিয়ে ব্লগ করতে চায় তাহলে তাতে স্পোর্টস সম্পর্কিত শব্দ থাকলে তা সহজেই ব্যবহারকারীদের মধ্যে জনপ্রিয়তা পায়।

ডোমেইন এর নাম যেন খুব বেশি লম্বা না হয় কিংবা খুব কঠিন না হয়, সেইদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

bloging

ব্লগ ডিজাইন
প্রথম দর্শনধারী এরপর গুণবিচারী। বাংলা প্রবাদে এমন একটি কথা আছে। প্রথম দেখায় যাতে চোখ আটকে যায় সে দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। এজন্য ব্লগের ডিজাইন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

প্রথমে কেউ ব্লগে প্রবেশ করলেই ভালো ইম্প্রেশন যাতে তৈরি হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ভালো ইম্প্রেশনের জন্য রুচিশীল ও আকর্ষণীয় ডিজাইন করতে হবে।

এ ক্ষেত্রে প্রফেশনাল ডিজাইনার দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়াই হচ্ছে ভালো সমাধান। ব্লগে বিজ্ঞাপন কখনোই অতিরিক্ত পরিমানে ব্যবহার করা যাবে না।

সাবস্ক্রিপশন অপশন রাখতে হবে, যাতে পাঠকদের কাছে নতুন আর্টিকেল সহজেই চলে যায়। ব্লগে পাঠকদের মতামতের জন্য সঠিক ব্যবস্থা রাখতে হবে। সর্বোপরি এসব বিষয়গুলো মাথায় রেখে ডিজাইন ও ডেভেলপের কাজ সম্পন্ন করতে হবে।

blog

ব্লগের মার্কেটিং
উপরের চার ধাপ করলেই যে কাজ শেষ তা কিন্তু নয়। প্রচার পেতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিতে হবে। ব্লগের সঠিক মার্কেটিং করতে হবে।

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) করতে হবে, যাতে সার্চে সহজেই খুঁজে পাওয়া যায়। ব্লগের জন্য যেসব সামাজিক মাধ্যমগুলোতে অবশ্যই পেইজ বা একাউন্ট করতে হবে সেগুলো হলো-

  • ফেসবুক
  • গুগল প্লাস
  • টুইটার
  • স্ট্যাম্বল আপন
  • ডিগ
  • পিন্টারেস্ট

এ ছাড়া আরও অনেক সামাজিক মাধ্যম আছে যেগুলোতে ব্লগ আর্টিকেল শেয়ার করতে হবে, যাতে তা পাঠকপ্রিয়তা পায়। প্রচার না হলে কিংবা ব্লগের আর্টিকেল বেশি ভিউ না হলে এ থেকে আয় আসবে না।

সেজন্য শুধু গুণগত মানের লেখা হলেই চলবে না, তা যাতে সকলের দৃষ্টিতে পড়ে সেজন্য  মার্কেটিংয়ের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

rubel

আরও পড়ুন

*

*

আরও পড়ুন