![]() |
ফখরুদ্দিন মেহেদী, টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : ঘর গোছানো থেকে সংসদ পরিচালনা -সব ক্ষেত্রেই রয়েছে আজকের নারীদের জয়যাত্রা। সুযোগ পেয়ে নয়, বরং সুযোগ তৈরি করে নিয়েই নিজেদের প্রমাণ করছেন তারা। বিভিন্ন ক্ষেত্রের মতো প্রযুক্তিতেও তারা নিজেদের জয়োরথ সদর্পে সচল রেখেছেন। বিশ্বের নামী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোতে নারীর ব্যাপক অংশগ্রহণই এর নজির।
প্রফেশনাল ইন্টেলেকচুয়াল নেটওয়ার্কিং কমিউনিটি (পিনক) ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে ‘সেলিব্রেট দ্য ওমেন’স ডে ২০১৫- মেইক ইট হেপেন’ নামের এক অনুষ্ঠানে বক্তাদের মুখে এসব কথারই ফুলঝুরি ফুটলো।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে হাইটেক পার্ক অথরিটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর হোসনে আরা বেগম, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মোহাম্মদ লুৎফর রহমান, সিটিও ফোরাম বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট তপন কান্তি সরকার, ইউওয়াই সিস্টেম লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও বেসিসের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ফারহানা এ রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর সুরাইয়া পারভিন, পিনকের ভাইস প্রেসিডেন্ট নাজনিন নাহারসহ আরও অনেকই।
অনুষ্ঠানে হোসনে আরা বেগম বলেন, মেয়েদের ক্ষমতায়ন কেউ করে দেয় না, বরং মেয়েদেরকেই তার করে তা তৈরি করে নিতে হয়। প্রায়োগিক সকল ব্যাপারে সচেতন হতে হয়। দেশের অসংখ্য মেয়ে উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। এরা সরকারী অফিসারদের থেকেও বেশি যোগ্যতার দাবী রাখেন।
তিনি বলেন, প্রযুক্তিতে নারীদের অংশগ্রহণ এখনো সন্তোষজনক নয়। আরও ব্যাপক আকারে দেশের প্রযুক্তিতে তাদের অংশগ্রহণ জরুরী। সরকারও এ ব্যাপারে এগিয়ে এসেছে। বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। কেবল উদ্ভাবনী আইডিয়ার মাধ্যমেই নারীরা অন্য সবাইকে ছাড়িয়ে যেতে পারে।
তবে নারীর উন্নয়ন ও সামাজিক অবস্থানের জন্য পুরুষের ভূমিকাকেও জরুরী বলে মনে করেন তিনি।
সফল নারী উদ্যোক্তা ফারহানা এ রহমান জানান, পুরুষদের তুলনায় নারীদের অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। সংসার আর সন্তান লালন-পালন করে তাদের জন্য চাকরি করাটা কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু উদ্যোগে মেয়েদের সম্ভাবনা অনেক ভালো। কেননা, এতে সংসার ঠিক রেখেও কাজ করা যায়। কেবলমাত্র উদ্ভাবন, প্রচারণা এবং বিপনন করতে জানলেই মেয়েরা সফল হতে পারে।
তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশে প্রযুক্তিতে মেয়েদের অংশগ্রহণ অনেক বেশি। এমনকি, বড় বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোতেও নারীদের অংশগ্রহণ প্রশংসনীয়। কিন্তু সে তুলনায় বাংলাদেশের মেয়েরা অনেক পিছিয়ে। তাই দেশের সার্বিক উন্নয়নে মেয়েদের ব্যাপক পরিমাণে এই খাতে অংশগ্রহণ প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে তপন কান্তি বলেন, দেশের ব্যাংকিং খাতে ২২ শতাংশ নারী কাজ করেন। এটি সত্যি প্রশংসনীয়। এমনকি, উদ্যোগেও নারীর অবদান বাড়ছে। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক নারী উদ্যোক্তাদের ২৬ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে। এ অংক আগামীতে আরও বাড়বে।
অনুষ্ঠান শেষে পিনক পাঁচটি ক্যাটাগরিতে পাঁচজন নারীকে সম্মাননা দেয়। এরা হলেন বিজনেসওমেন ও সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট হিসেবে এসএম গ্রুপের পরিচালক আনোয়ার বেগম, আইটি উদ্যোক্তা হিসেবে অনুপম ইনফোটেক লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর নাজনিন কামাল, নতুন উদ্যোগে বিনিয়োগের জন্য এসএমই ফাউন্ডেশনের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ওমেন এন্ট্রাপেনারশীপ ডেভেলপমেন্টর প্রধান ফারজানা খান, সরকারী প্রযুক্তি সেবা খাতের জন্য এটুআইয়ের লোকাল ডেভেলপমেন্ট এক্সপার্ট সূপর্ণা রায় এবং মিডিয়া ও কালচারে ডেইলি স্টারের সাপ্তাহিক পাবলিকেশন এ জ্যাক অব অল ট্রেডার্সের এডিটর এলিটা করিম।