![]() |
আদনান নিলয়, টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : ২০১২ সালে নেক্সাস ৭ বাজারে এনে বাজেট ট্যাবলেটের পুরো মার্কেট হাতে নিয়ে এসেছিল গুগল। কম দামে সবচেয়ে আকর্ষণীয় কনফিগারেশনের কারণে এটি ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে ছিল। এবার গুগল এটির উত্তরসূরী নেক্সাস ৯ নিয়ে এসেছে।
এবার অবশ্য আর সস্তা দামে নয়, উঁচু প্রাইস ট্যাগকে লক্ষ্য করে এগোচ্ছে সার্চ জায়ান্ট থেকে টেক জায়ান্টে পরিণত হওয়া গুগল। হাই এন্ড বাজার ধরাই মূল লক্ষ্য।
ডিজাইন
এই প্রথমবারের মত ট্যাব তৈরিতে এইচটিসির সহায়তা নিয়েছে টেক জায়ান্টটি। কোম্পানিটি স্মার্টফোন ডিজাইনে অভ্যস্ত হলেও এবার গুগলের জন্য ট্যাব ডিজাইন করেছে। এইচটিসির ব্যাপক প্রশংসা পাওয়া দুটি বুমসাউন্ড স্পিকার ও মেটাল ফ্রেমের সলিড ফিনিশ রয়েছে এতে।
পেছনের ম্যাটে প্লাস্টিকের কভার পাওয়া যাচ্ছে কালো, সাদা ও গোল্ড, তিনটি রঙে। ওজন মাত্র ৪৩৭ গ্রাম। ওজনের পরিমাণটা কম হলেও পুরুত্বের দিকে প্রতিপক্ষ আইপ্যাড এয়ার ২ কে হারাতে পারেনি নেক্সাস ৯।
ডিসপ্লে
৮.৯ ইঞ্চির ডিসপ্লে ট্যাবটিকে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আগে কখনই যা দেখা যায়নি কোনো ট্যাবলেটে, তাই যোগ করা হয়েছে এতে। ১৬:৯-এর পরিবর্তে ৪:৩ রেশিওতে চলবে সব মুভি, গেইমস ইত্যাদি। ১৫৩৬*২০৪৬ রেস্যুলুশনে ২৮১ পিপিআই ব্যবহার করা হয়েছে ডিসপ্লেতে।
পরিমাণের বিচারে বেশ কম মনে হলেও, এতে রয়েছে একটি প্রিমিয়াম ট্যাবলেটের মতোই রঙ ও ক্রিস্পনেস।
ক্যামেরা
যথারীতি দুটি ক্যামেরা উপস্থিত নেক্সুস ৯-এ। পেছনের এলইডি সম্পৃক্ত ৮ মেগাপিক্সেল ও ২ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা। অনেকটা চলতি মানের ক্যামেরা কোয়ালিটি, যদিও ৯ ইঞ্চি ট্যাবলেটে খুব কম মানুষই ক্যামেরাকে প্রাধান্য দেবে!
সফটওয়্যার
যে কেউ অ্যান্ডয়েড ৫.০ ললিপপ কিছুক্ষণ ঘাঁটাঘাঁটি করে বলে উঠতে পারে, ‘এতো দেখি ললিপপের থেকেও মিষ্টি!’ হ্যাঁ, নেক্সাস ৯ ললিপপের প্রথম ট্যাব। বলাই বাহুল্য, তা ট্যাবলেটটির আকর্ষণ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
ঝরঝরে অ্যানিমেশনের রাজ্য বলা চলে ললিপপকে। প্রতি ট্যাপে হুট করে কোনো কিছু হাজির হতে দেখা যায় না, বরং সবকিছুই কোথাও থেকে শুরু হয়ে কোথাও গিয়ে শেষ হয়। যেমন, কলার ডায়ালে ট্যাপ করার সঙ্গে সঙ্গে নিচ থেকে উঠে এসে উইন্ডো প্রকাশ হবে ও বন্ধ করার পর আবার নিচেই ফিরে যাবে।
এ ছাড়াও লকস্ক্রিন নোটিফিকেশন যুক্ত করা হয়েছে। মাল্টিটাস্কিং, নটিফিকেশন বার, সেটিংস, সব কিছুই অ্যানিমেশন দিয়ে নতুন করে ঢেলে সাজানো হয়েছে।
কনফিগারেশন এবং পারফরম্যান্স
নেক্সাস ৯ এর ডিসপ্লে, ডিজাইন কোনটাই সর্বোচ্চ পর্যায়ের না হলেও, এর সবচেয়ে উজ্জ্বল দিক হলো পারফরম্যান্স। ২ জিবি র্যাম ও ২.৩ গিগাহার্জ ডুয়েল কোর প্রসেসরের গতি কোনো কাজই স্লথ করতে পারবে না।
২০-২৫ টা অ্যাপ চালিয়ে রাখলেও তা প্রভাব ফেলবে না পারফরম্যান্সে। এছাড়াও উচ্চ মানের গ্রাফিক্সের গেইমগুলোকে সামাল দেওয়ার জন্য রয়েছে এনভিডিয়া টেগ্রা কে১ চিপসেট।
ইন্টারনাল মেমোরি পাওয়া যাচ্ছে ১৬ ও ৩২ জিবিতে এবং গুগলের অন্যসব ডিভাইসের মতই, তা বাড়ানোর সুযোগ নেই।
ব্যাটারি লাইফ
এদিক দিয়ে আইপ্যাডকে ছাড়িয়ে গিয়েছে নেক্সাস ৯। ৬৭০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ারের ব্যাটারি চেষ্টা করেও একদিনে সম্পূর্ণ শেষ করতে কষ্ট হবে।
এর দাম ধরা হয়েছে ৪৯৯ ডলার। একটু বেশিই মনে হবে অনেকের কাছে।
এক নজরে ভালো
– টপ লেভেলের ডিজাইন, কনফিগারেশন ও পারফরম্যান্স
– চমৎকার ডিসপ্লে, অ্যান্ড্রয়েড ললিপপ
এক নজরে খারাপ
– নেক্সাসের অন্যান্য ডিভাইসের চেয়ে দাম বেশি