![]() |
শাহরিয়ার হৃদয়, টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : ট্যাব যে কতো রকম, আর কতো সাইজের হতে পারে স্যামসাংয়ের গ্যালাক্সি লাইনআপের দিকে তাকালে তা সহজে বোঝা যায়। এতে সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে গ্যালাক্সি ট্যাব এস সিরিজ, যা আইপ্যাডের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা মাথায় রেখে বাজারে ছেড়েছে দক্ষিণ কোরিয়ান কোম্পানিটি।
বড় স্ক্রিনের এ ট্যাবের নাম এস ১০.৫। ডিসপ্লের দিকটিই এটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক।
ডিজাইন
স্লিমনেস এবং ওজনের দিক দিক থেকে এটি আইপ্যাড এয়ারকেও হারিয়ে দিয়েছে। পুরুত্ব মাত্র ৬.৬ মিলিমিটার ও ওজন ৪৬৫ গ্রাম, যা আইপ্যাড এয়ারের চেয়ে কম। তাই প্রথম দেখাতে একে চমৎকার প্রিমিয়াম ডিজাইনের ডিভাইস মনে হবে।
তবে পেছনটা প্লাস্টিকে তৈরি বলে সৌন্দর্যের দিক থেকে ধাতব অ্যালুমিনিয়ামের আইপ্যাডের থেকে পিছিয়েই থাকবে।
ডিসপ্লে
এর ডিসপ্লের চারপাশের বেজেল খুবই সরু, তাই অসাবধানে মাঝে মাঝে না চাইতে ডিসপ্লে স্পর্শ হতে পারে। স্ক্রিনের আকার ১০.৫ ইঞ্চি, রেজুল্যুশন ২৫৬০*১৬০০ পিক্সেল। পিক্সেল ডেনসিটি ২৮৮ পিপিআই। টেক্সট, ইমেজসহ ভিডিও ঝকঝকে পরিস্কার আসবে ডিসপ্লেতে।
কানেক্টিভিটি
এটি সিম সাপোর্টেড নয়। অন্যান্য কানেক্টিভিটির মধ্যে আছে ডুয়াল ব্যান্ড ওয়াই-ফাই, হটস্পট, এটুডিপি ব্লুটুথ, জিপিএস। টিভির রিমোট হিসেবে ব্যবহারের জন্য ইনফ্রারেড ব্লাস্টটার আছে।
এ ছাড়া হোম বাটনে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর রয়েছে। অন্যান্য সেন্সরের মধ্যে আছে অ্যাক্সেলেরোমিটার, জাইরো ও কম্পাস।
ক্যামেরা
ট্যাবের মধ্যে শক্তিশালী ক্যামেরা ব্যবহারের প্রয়োজন নেই বলে যারা করেন, ট্যাব এস তাদের সরাসরি ভুল প্রমাণিত করবে। এর ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরার সঙ্গে ফ্ল্যাশ আছে, সামনে ২.১ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরা রয়েছে।
ফুল এইচডিতে ভিডিও রেকর্ড করা যাবে। প্যানারোমা, ডুয়াল ক্যাম, অটোফোকাস, এইচডিআর ইত্যাদি ফিচার রয়েছে ক্যামেরায়।
কনফিগারেশন
স্যামসাংয়ের নিজস্ব এক্সাইনস ৫ অক্টা ৫৪২০ চিপসেট ব্যবহার করা হয়েছে এতে। প্রসেসর কোয়াড কোর ১.৯ গিগাহার্জ (১.৩ গিগাহার্জের আরেকটি মডেল রয়েছে)। গ্রাফিক্স প্রসেসর মালি-টি৬২৮ এমপি৬।
এটির র্যাম ৩ জিবি। ইন্টারনাল মেমোরি ১৬ বা ৩২ জিবিতে পাওয়া যাবে। বাড়ানো যাবে ১২৮ জিবি পর্যন্ত।
পারফরম্যান্স
এটির ডিফল্ট অপারেটিং সিস্টেম অ্যান্ড্রয়েড ৪.৪.২ কিটক্যাট। ইউজার ইন্টারফেস অবধারিতভাবে স্যামসাংয়ের নিজস্ব টাচউইজ ইউআই। অক্টা কোর প্রসেসর আর ৩ জিবি র্যামের কল্যাণে ‘ব্লেজিং ফাস্ট’ পারফরম্যান্স পাওয়া যাবে।
চোখের পলকে এক অ্যাপ থেকে আরেক অ্যাপে সুইচ করা যেমন যাবে, তেমনি খবুই দ্রুত সেটিং বদলানো ও অ্যাপ ওপেন করা যাবে।
এইচডি মুভি থেকে শুরু করে হাই কোয়ালিটি গেইম, প্রতিটি ক্ষেত্রে সেরা ডিসপ্লে আর সেরা কনফিগারেশনের আউটপুট পাওয়া যাবে।
সফটওয়্যার
স্যামসাং যে কোনো ডিভাইস তাদের নিজস্ব সফটওয়্যার ও ফিচার দিয়ে ভর্তি থাকে। ট্যাব এসেও এর অভাব নেই। মাল্টি উইন্ডো ফিচার দিয়ে স্ক্রিনকে দুই উইন্ডোতে ভাগ করে ব্যবহার করা যাবে।
সাইডসিংক বা ওয়াই-ফাই ডিরেক্ট ব্যবহার করে ফোন কল করা যাবে বা এসএমএস পাঠানো যাবে। সরাসরি ফাইল ট্রান্সফারও করা যাবে।
ট্যাবটিতে স্যামসাংয়ের নিজস্ব সিকিউরিটি সিস্টেম নক্স রয়েছে। নিউজ অ্যাগ্রেগেটর অ্যাপ মাই ম্যাগাজিন রয়েছে যা হোমপেজের বামপাশে ফ্লিক করলে ওপেন হবে।
অন-স্ক্রিন কিবোর্ডটি আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আপডেট। এ কিবোর্ডে বাস্তব কিবোর্ডের মতো ফাঁকা ফাঁকা ও বড় বাটন ব্যবহার করা হয়েছে। তাই টাইপ করতে অনেক সুবিধা হবে।
ব্যাটারি
এতে ৭৯০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ারের ব্যাটারি রয়েছে যা প্রায় ৯ ঘণ্টার ব্যাকআপ দেবে।
দেশের বাজারে ট্যাব এস পাওয়া যাচ্ছে ৫৭ হাজার ৯০০ টাকায়।
এক নজরে ভালো
– খুবই স্লিম, চমৎকার হাই রেজুল্যুশন ডিসপ্লে
– সেরা কনফিগারেশন ও পারফরম্যান্স
– হাই কোয়ালিটি ডুয়াল ক্যামেরা
এক নজরে খারাপ
– ব্যাকসাইড প্লাস্টিকে তৈরি
– এনএফসি নেই