![]() |
অনন্য ইসলাম, টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : এক বছরে দেশের ছয় মোবাইল ফোন অপারেটরের আয় আগের বছরের তুলনায় ৬ হাজার ৮৩২ কোটি টাকা বেড়েছে। ২০১১-১২ অর্থবছরে আয় ছিল ১৮ হাজার ২০৫ কোটি টাকা। আর গত বছরের শেষে তা ছাড়িয়ে গেছে ২৫ হাজার ৩৭ কোটি টাকার বেশি।
ছয় অপারেটরের মোট আয়ের অর্ধেকের বেশি (১৩ হাজার ৯৩৪ কোটি টাকা) জমা পড়েছে গ্রামীণফোনের অ্যাকাউন্টে।
সম্প্রতি টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ২০১২-১৩ অর্থবছরের বার্ষিক বিবরণী প্রকাশ করেছে। এতে রাষ্ট্রায়ত্ব অপারেটর টেলিটক ছাড়া অন্য পাঁচটি অপারেটরের আয় এবং বিনিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য রয়েছে। তবে টেলিটক সূত্র জানিয়েছে, গত বছরে তাদের আয় ছিল ৬৬৫ কোটি টাকা। যদিও সূত্র বিনিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য নিশ্চিত করতে পারেনি।
টেলিটকের আয়কে আমলে নিলে আগের বছরের তুলনায় শেষ হওয়া অর্থবছরে মোবাইল ফোন খাতে আয়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৭ দশমিক ২৯ শতাংশ। ২০১১-১২ অর্থবছরে এর আগের বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধির হার ছিল ১০ দশমিক ৮৫ শতাংশ। ২০১০-১১ অর্থবছরে অপারেটরগুলোর আয় ছিল ১৬ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা।
২০০৯-১০ অর্থবছরে অপারেটরদের আয় ছিল ১১ হাজার ৩৩০ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। ২০০৮-০৯ বছরে আয়ের পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ৯৩৪ কোটি।
বিটিআরসির বার্ষিক প্রতিবেদন ছাপার কাজ শেষ হলেও আইন অনুসারে এটি এখনও জাতীয় সংসদে উত্থাপিত হয়নি বা প্রকাশ করা হয়নি।
অন্যদিকে ২০১২-১৩ অর্থবছরে টেলিটকের অংক ছাড়া মোট বিনিয়োগ হয়েছে ১১ হাজার ৪১৪ কোটি টাকা। আগের বছর যা ছিল ৭ হাজার ৯৭৪ কোটি টাকা। একইভাবে ২০১০-১১ অর্থ বছরে ছয় অপারেটরের বিনিয়োগের পরিমান ছিল ৬ হাজার ২৬ কোটি টাকা। বিনিয়োগের হিসেবে গ্রামীণফোন দাপট আয়ের চেয়েও বেশি।
প্রতিবেদন অনুসারে ২০১২-১৩ অর্থবছরে গ্রামীণফোনের আয় ১৩ হাজার ৯৩৪ কোটি টাকা। ২০১১-১২ বছরে ছিল ৯ হাজার ২০৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আগের বছর যা ছিল ৮ হাজার ২৩০ কোটি ৬১ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। সর্বশেষ এক বছরে তাদের বিনিয়োগ ৮ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা।
তবে বিনিয়োগের দৈন্যদশা সম্পর্কে একাধিক টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ বলেন, দেশে টেলিযোগাযোগে বিনিয়োগের পরিমান আরো অনেক বেশি হতে পারত। এখনও এ খাতে বিনিয়োগের অনেক সুযোগ রয়েছে জানিয়ে তারা বলেন, আইন, নীতিমালা এবং অন্যান্য অনিশ্চয়তা দূর করে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা গেলে বিনিয়োগ অনেক বাড়বে।
অন্যদিকে বাংলালিংকের আয় ও বিনিয়োগের অংক রহস্য ঘেরা। প্রকাশিত সর্বশেষ বছরে আয় হয়েছে ৪ হাজার ৫৩৬ কোটি টাকা। আগের বছর এটি ছিল ৩ হাজার ৭৮৭ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। এমনকি ২০১০-১১ বছরেও আয়ের একই অংক দেখানো হয়েছে।
২০১১-১২ অর্থ বছরে তারা বিনিয়োগের অংক উল্লেখ করে ৩ হাজার ১৬৬ কোটি। এবারও দেখাচ্ছে ৯৩১ কোটি টাকা।
সর্বশেষ বছরে রবি আয় করেছে ৪ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা। ২০১১-১২ অর্থ বছরে এটি ছিল ৩,৪৫৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।
এয়ারটেলের আয় ১ হাজার ৩৫৫ কোটি টাকা। আর বিনিয়োগ ৫৬১ কোটি। আগের বছরে তারা আয় করে ১ হাজার ৫২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। বিপরীতে বিনিয়োগ করেছে ৮৯১ কোটি ৮২ লাখ টাকা।
আগের বছরের তুলনায় সিটিসেলের আয় এ বছর অনেক কমে গেছে। ২০১২-১৩ তাদের আয় দেখানো হচ্ছে ২৬৭ কোটি টাকা। তার আগের চার বছরে সিটিসেলের আয়ের অংক যথাক্রমে ৩৪৭ কোটি ২ লাখ, ৪০৭ কোটি ৩ লাখ, ৩৭৭ কোটি ৬৬ লাখ ও ৪৯৯ কোটি টাকা। অন্যদিকে বিনিয়োগের ঘর এবার শূন্য। আগের বছরগুলোয় তা ছিল যথাক্রমে ৪৯০ কোটি ৩৯ লাখ, ৫১ কোটি ৮ লাখ, ৩৮ কোটি ৪৭ লাখ এবং ২১৫ কোটি টাকা।