গুগল সার্চের শীর্ষ ২০ বিশ্ববিদ্যালয়

ল্যাপটপ-টেকশহর

সৌমিক আহমেদ, টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : শিক্ষার্থীরা শিক্ষা জীবনের কোন না কোন অংশ ইন্টারনেটে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের খোঁজ খবর নিয়ে থাকে। বিশ্বের প্রায় সব সর্বত্র ইন্টারনেটের সহজলভ্যতায় এ হার ইদানিংকালে আরও বেড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট সার্চ বিশ্বব্যাপী শিক্ষার্থীদের কাছে অতি জনপ্রিয় একটি বিষয়ে পরিণত হয়েছে।

শিক্ষার্থীরা বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রোগ্রামের বিষয়ে সার্চ করে থাকেন। এসব সার্চের তথ্যের ভিত্তিতে একটি ভিন্ন রকম তালিকা তৈরি করেছে সার্চ জায়ান্ট গুগল।

সচরাচর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তৈরি সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি তালিকা থেকে এটি পৃথক। অনলাইনে সবচে বেশি সার্চেরভিত্তিতে গুগল প্রকাশিত বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় নেই বিশ্বের অনেক নামী বিশ্ববিদ্যালয়।

Techshohor Youtube

ইদানিং শিক্ষার্থীদের অনলাইন প্রোগ্রামের প্রতি বেশি আগ্রহের কারণে এক নামে পরিচিত অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ঠাঁই পায়নি এ তালিকায় বলে উল্লেখ করেছে গুগল।

ল্যাপটপ-টেকশহর

গুগল প্রকাশিত শীর্ষ ২০ এর এ তালিকায় রয়েছে ভারতের পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়। এ তথ্যেরভিত্তিতে অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় উঠে এসেছে, তা হলো শিক্ষার্থীরা গতানুগতির ক্যাম্পাস প্রোগ্রামের চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন প্রোগ্রামের প্রতি বেশি ঝুঁকছে। অন্তত সার্চের ফলাফল তাই বলছে।

যুক্তরাষ্ট্রের আরিজোনার ইউনিভারসিটি অব ফিনিক্স রয়েছে গুগল প্রকাশিত তালিকার শীর্ষে। বিশ্ববিদ্যালয়টির ই-ক্যাম্পাস প্রোগ্রাম অনেক জনপ্রিয়। আন্ডারগ্রাজুয়েট, গ্রাজুয়েট, মাস্টার্স ডিগ্রি প্রোগ্রাম ছাড়াও অনেক শর্ট কোর্স রয়েছে গত শতাব্দীর ৭০ দশকে (১৯৭৬) প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়টির।

শুধু অনলাইন প্রোগ্রামে এগিয়ে থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের সার্চ তালিকায় বিশ্ববিদ্যালয়টি পেছনে ফেলেছে হার্ভার্ড, স্টানফোর্ড ও কলম্বিয়ার মতো বিশ্ববিদ্যালয়কে।

অনলাইন-টাস্ক-ম্যানেজমেন্ট-বিশ্ববিদ্যালয়-টেকশহর

এরপর রয়েছে আরেক নামী মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয় ম্যাসাচ্যুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি। অনলাইন প্রোগ্রামের অগ্রপথিক বলা হয় বিশ্ববিদ্যালয়টিকে। এটির প্রোগ্রাম সবসময়ই আপডেট থাকে বলে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ এ বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে।

ইউরোপের ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পেছনে ফেলে শিক্ষার্থীদের সার্চের তৃতীয় অবস্থানে আছে দ্যা ওপেন ইউনিভারসিটি। যুক্তরাজ্যের এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন বা ই-ক্যাম্পাস ইউরোপের দেশগুলোর অনলাইন পড়াশোনায় নেতৃত্ব দিচ্ছে।

ছাত্র-ছাত্রীদের আগ্রহের কারণে উন্নয়ন ঘটানো হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন প্রোগ্রামে। যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সার্চ করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে এশীয় ও পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলো এগিয়ে। দেশটির বিশ্ববিদ্যালয় সার্চ করেছে এমন শিক্ষার্থীর ৪০ ভাগই অন্য দেশের।

২০১১ সালেও শিক্ষার্থীদের যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় সার্চে ওপেন ইউনিভার্সিটির চেয়ে এগিয়ে ছিল অক্সফোর্ড ও ক্যামব্রিজের মতো ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয়। ২০১৪ সালে সার্চে ইউকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পেছনে ফেলে কুশেরা। এটি অনলাইন কোর্সের যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান।

ম্যাসিভ ওপেন অনলাইন কোর্স প্রদান করে থাকে এমন অনেক প্রতিষ্ঠান ইউকে ইউনিভারসিটি থেকে সার্চে এগিয়ে আছে। এর মধ্যে ইডিএক্স ও ফিউচারলার্ন।

অবাক করার মতো বিষয় হচ্ছে পরের অবস্থানটি অর্থাৎ চতুর্থ অবস্থানটি একটি ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের। কেরালার কালিকাট বিশ্ববিদ্যালয়। ভারতীয় শিক্ষার্থীদের অনলাইন ডিগ্রির আগ্রহ বা টেকনোলজির ব্যবহারে তাদের এগিয়ে যাওয়ার এটি একটি প্রমাণ।

গুগলের তালিকার শীর্ষ ১০ রয়েছে আরও একটি ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। চেন্নাইয়ের আন্না বিশ্ববিদ্যালয়। অবস্থান ৬ নম্বরে। মাঝের অবস্থানটি ইউনিভারসিটি অব ক্যালিফোরর্নিয়ার।

অনলাইন-শপিং-শিক্ষা-ভার্সিটি-টেকশহর

ভারতীয় আরও তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান হচ্ছে ১১ নম্বরে ইউনিারসিটি অব মুম্বাই, ইউনিভারসিটি অব রাজস্থান ১৮ ও আন্নামালাই ইউনিভারসিটি রয়েছে ২০ নম্বরে।

শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছতে ইন্টারনেট এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। অনলাইনে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বিবেচনায় নিয়ে বিভিন্ন কোর্স ক্রমবর্ধমানহারে বাড়াচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।

ইন্টারনেট আগ্রহের কারণে ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে ই-ক্যাম্পাসভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। বিশ্লেষকদের মতে, এ কারণে প্রচলিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এখন নতুন করে ভাবতে হবে। পরিকল্পনা করতে হবে, তারা পরিবর্তনকে স্বাগত জানিয়ে এগিয়ে যাবে অথবা খাপখাওয়ানোর চেষ্টা না করে ভবিষ্যৎতের ঝুঁকি নিয়ে এগিয়ে যাবে।

যদিও সব বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন ইন্টারনেট থাকাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। কেননা ইন্টারনেট বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষার্থীদের কাছে নিয়ে যাওয়ার প্রাথমিক ধাপ। অনলাইন ডিসিশন নিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কেননা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট শিক্ষার্থীদের সিদ্ধান্ত নিয়ে সহায়তা করছে।

*

*

আরও পড়ুন