![]() |
টেকশহর কনটেন্ট কাউন্সিলর: ক্ষমতার অপব্যবহার করে বেআইনিভাবে বিশ্বের একনম্বর সার্চ ইঞ্জিন হয়ে উঠার অভিযোগে মামলা হয়েছে গুগলের বিরুদ্ধে। তবে গুগল নিজেদের বিরুদ্ধে উঠা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। আইনজীবিরা বলছেন, প্রযুক্তি শিল্পে ২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় এ মামলাটি করা হয়েছে ‘ইন্টারনেটের ভবিষ্যত’ কে ঘিরে।
প্রযুক্তি জায়ান্টদের বিরুদ্ধে মার্কিন রেগুলেটররা নিজেদের ক্ষমতা কতোটা ব্যবহার করতে পারেন তা যাচাইয়ে মামলাটিকে একটি বড় ধরনের পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে মামলাটির শুনানী ১০ সপ্তাহ ধরে চলবে। গুগল প্রধান সুন্দর পিচাই এবং অ্যাপলের নির্বাহি কর্মকর্তাদেরও মামলায় স্বাক্ষ্য দিতে হতে পারে।
ওয়াশিংটন ডিসির ডিসট্রিক্ট কোর্টের জজ অমিত মেহতা মামলাটির রায় দিবেন। এটি হবে ২৫ বছরের মধ্যে প্রযুক্তি খাতে কোন মামলা নিয়ে সবচেয়ে বড় রায়। সরকারের দায়ের করা এ মামলাটিতে ডিফল্ট অনলাইন সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে গুগলকে প্রি-ইনস্টল করার জন্য অ্যাপল, স্যামসাং, মজিলাসহ আরো অনেক কোম্পানিকে হাজার হাজার কোটি ডলার দেয়ার বিষয়টিতে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে এই বিশেষ সুবিধা পেতে বছরে গুগল ১০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে থাকে। যার বিনিময়ে গুগল বাজারে তার একচেটিয়া আধিপত্য ধরে রেখেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের আইন বিভাগের আইনজীবি কেনেথ ডিন্টজার গুগলের আইনজীবিকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ‘এখানে আর কোন ডিস্ট্রিবিউশন চ্যানেল আছে কি? সার্চ করার অন্য উপায় কি? না নেই। গুগলের চেক বইই সেরা স্বাক্ষ্য।’ আইনজীবিরা বলছেন, ২০০২ সালে অ্যাপল যখন প্রথমবারের মতো ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিণ হিসেবে গুগল ইনস্টল করে তখন কোন আর্থিক লেনদেন হয় নি।
তবে ২০০৫ সালে গুগল নিজেদের নের্তৃত্বের জায়গা হারানোর আশঙ্কায় কোম্পানিটিকে অর্থ দেয়ার প্রস্তাব দেয়। পরবর্তীতে অ্যাপলকে তারা হুমকি দিয়ে বলে অন্য কোন কোম্পানিকে একইধরনের সুবিধা দিলে পেমেন্ট বাতিল করা হবে। শুধু তাই নয় অ্যাপলকে নিজস্ব সার্চ প্রোডাক্টগুলো সম্প্রসারণেও নিরুৎসাহিত করে কোম্পানিটি। স্যামসাংয়ের ক্ষেত্রেও একই বিষয় প্রযোজ্য। ডিন্টজার একে ‘একচেটিয়া হিসেবে উল্লেখ করেছেন।’
অন্যদিকে গুগল জানিয়েছে , শুধুমাত্র সাধারন সার্চ ইঞ্জিণ কোম্পানি নয় রেস্টুরেন্ট, এয়ারলাইনের টিকেট অনুসন্ধান দেয়ার মতো বিভিন্ন বিশেষায়িত সাইট এবং অ্যাপসও তীব্র প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করছে। গুগলের আইনজীবি জন শ্মিটলিন বলেছেন, ‘ওয়েব ব্যবহারের জন্য ব্যবহারকারীরর হাতে একাধিক উপায় রয়েছে। মানুষজন তা সবসময়ই ব্যবহার করতে পারে। এই মামলায় প্রমান দেখানো হবে যে যোগ্যতার ভিত্তিতেই প্রি ইনস্টল এবং ডিফল্ট স্টাটাস অর্জন করেছে গুগল। এর ব্রাউজার এবং অ্যান্ড্রয়েড অংশীদাররা তাদের ব্যবহারকারীদের জন্য গুগলকে সেরা সার্চ ইঞ্জিণ মনে করেছে।
মামলাটি গুগলের নতুন রেগুলেটরি চ্যালেঞ্জ। কিছুদিন আগেই অ্যাপ স্টোর নিয়ে আরেকটি মামলা নিষ্পত্তি করেছে কোম্পানিটি। এছাড়া বিজ্ঞাপন ব্যবসা নিয়ে মামলা লড়ছে গুগল। ইউরোপে একচেটিয়া মামলার জন্য কোম্পানিটিকে কয়েক হাজার কোটি ডলার অর্থদন্ড ধরা হয়েছে।
বিবিসি/আরএপি