![]() |
টেকশহর কনটেন্ট কাউন্সিলর: রোবোট্যাক্সি নিয়ে সান ফ্রান্সিসকোর জনগণ এখন দুই দলে বিভক্ত। এর একদল রোবোট্যাক্সি পছন্দ করেন না এবং তাদের বিশ্বাস এক বিপজ্জনক পরীক্ষা যা জনসাধারনের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলবে। আরেক দল রোবোট্যাক্সিকে সাদরে গ্রহন করেছে। এদিকে রোবোট্যাক্সির বিপক্ষে থাকা কিছু ব্যক্তি আরেকধাপ এগিয়ে রয়েছেন। তারা বনেটে আঘাত করে গাড়ি অকেজো করার চেষ্টায় রয়েছেন।
চলতি মাসেই সান ফ্রান্সিসকোর রাস্তায় চব্বিশ ঘন্টা স্বয়ংক্রিয় গাড়ি রোবোট্যাক্সি চলাচলের অনুমোদন দেয় ক্যালিফোর্নিয়া পাবলিক ইউটিলিটিজ কমিশন (সিপিইউসি)। এর আগে শুধুমাত্র রাতের বেলাতেই সেখানে রোবোট্যাক্সি যাত্রীসেবা দিতে পারতো। সান ফ্রান্সিসকোর জনগন কি এই অনুমোদনে সন্তুষ্ট? বিবিসির প্রতিবেদনে দেখা গিয়েছে স্বয়ংক্রিয় গাড়ি চলাচলের পক্ষে- বিপক্ষে দুইদলে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন সান ফ্রান্সিসকোবাসী।
কিন্তু এরপরেও স্বয়ংক্রিয় গাড়িগুলো রাস্তায় চলছে। কারণ নগর কর্তৃপক্ষ গাড়িগুলোকে রাস্তায় চলাচল করতে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ । গত ১০ আগস্ট সিপিইউসির ভোটে ওয়েমো এবং ক্রুজ নামে দুটি ক্যাব কোম্পানিকে ভাড়ার বিনিময়ে ২৪ ঘন্টা যাত্রীসেবা দেয়ার অনুমোদন দেন। এই ভোট দেয়ার আগে কর্মকর্তারা ছয়ঘন্টার জনমত শুনেন।
সিটি অ্যাটর্নী ডেভিড চিউ সিপিইউসিকে সিদ্ধান্ত স্থগিতের অনুরোধ করেছেন। তিনি বলেন, সান ফ্রান্সিসকো এই সিদ্ধান্ত থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে ক্রুজ এবং ওয়েমো এখন পর্যন্ত তাদের গাড়ি নিরাপদ বলে জোর দিচ্ছে।
রোবোট্যাক্সি নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে সান ফ্রান্সিসকোর এক ব্যক্তি বলেন, একটি ক্যাব আমার পাশে দাঁড়াতেই রীতিমতো বুক কেঁপে উঠলো। রীতিমতো অদ্ভুতুরে দৃশ্য; জীবনে এমনটি দেখবো কখনো ভাবিনি। ক্যাবটির ভেতরে কোন চালক ছিলো না। এটি আমার সামনে থেমে ফোনের সাহায্যে দরজা খোলার আমন্ত্রন জানালো। আমি যখনই গাড়িটির ভেতরে ঢুকবো তখনই একজন পথচারী বললো ‘এগুলো নিরাপদ নয়।’ তিনি একজনকে দেখেছেন রোবোট্যাক্সি তাকে নিয়ে প্রায় ছুটে চলছে।
অন্যান্যরা মনে করেন রোবোট্যাক্সির প্রযুক্তি এখন পর্যন্ত পুরোপুরি নিরাপদ হিসেবে প্রমাণিত হয় নি। সান ফ্রান্সিসকোর একজন ক্যাব ড্রাইভার ম্যাথাও সুটার বলেছেন, ‘আমি প্রযুক্তির কথা বলছি, এটি এখনো প্রস্তুত হয় নি। সান ফ্রান্সিসকোর জনসাধারনের জন্য যা বিপদজনক।’ প্যারাট্রানজিট কোঅর্ডিনেটিং কাউন্সিলের সদস্য ম্যারা ম্যাথ জানিয়েছেন, রোবোট্যাক্সিকে স্বাগত জানানোর অর্থ ‘সানফ্রান্সিসকোর প্রতিবন্ধী নাগরিককে ঠান্ডার মধ্যে বাইরে বের করে দেয়া।’
রোবোট্যাক্সির সমর্থকদের একজন রোর্জ জাঙ্কো। এই অর্থোপেডিক সার্জন বলেছেন, ‘আমি দেখেছি এই গাড়িগুলো কিভাবে চলাচল করে। আমি রাগী বা বিভ্রান্ত চালকদের থেকে এই গাড়িগুলোকে বিশ্বাস করি।’ তিনি আরো বলেন, মানবচালিত গাড়ির কারণে দূর্ঘটনায় আহত অনেকের চিকিৎসা করেছি। সে তুলনায় রোবোট্যাক্সি নিরাপদ।’ দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী জেসি ওলিনেস্কি বলেছেন, তিনি উবার এবং লিফটের ড্রাইভারদের কাছে হেনস্তার স্বীকার হয়েছেন। ওয়েমোর গাড়িগুলো আমাকে এদিক থেকে নিরাপত্তা দিতে পারে।
তবে আশাবাদীদের প্রত্যাশা কতোটা পূরণ হবে তা নিশ্চিত নয়। কারণ রোবোট্যাক্সি চব্বিশ ঘন্টা চলাচলের অনুমোদন দেয়ার মাত্র আটদিন পরেই একটি ক্রুজ ট্যাক্সির ইঞ্জিনে আগুন লেগে দূর্ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে স্টেট ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে ক্রুজকে গাড়ির সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনার অনুরোধ করা হলে কোম্পানিটি তা মেনে নিয়েছে।
আরএপি