ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বদলে সাইবার সিকিউরিটি আইন হচ্ছে

টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নামে আর কোনোকিছু থাকছে না। এর বদলে সাইবার সিকিউরিটি আইন হচ্ছে।

সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তাঁর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে সাইবার সিকিউরিটি আইনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট এর নাম পরিবর্তন করা হচ্ছে। এর নতুন নাম হবে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট-২০২৩। একই সঙ্গে আইনের অনেকগুলো ধারায় পরিবর্তন আনা হচ্ছে। কিছু ধারায় বড় সংশোধনী আনা হবে।

Techshohor Youtube

আনিসুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে মানহানির অভিযোগ কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান ছিল। নতুন আইনে সেখানে পরিবর্তন এনে কারাদণ্ডের পরিবর্তে জরিমানার বিধান করা হবে।

মন্ত্রী বলেন, এটি একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। দেওয়ানি মামলায় যেভাবে জরিমানার বিষয়গুলো আছে, সেভাবেই সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে বিষয়গুলো থাকবে ।

পরে আইনমন্ত্রী সচিবালয়ে তাঁর দপ্তরে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘২৯ ধারা সম্পূর্ণভাবে বিলুপ্ত করা হয়েছে। শুধু শাস্তি হবে জরিমানা, সেই জরিমানা অনাদায়ে ৩ থেকে ৬ মাসের কারাদণ্ড থাকবে। সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করা যাবে।’

তিনি বলেন ‘কারাদণ্ড উঠিয়ে দিয়ে শুধু সাজা রাখা হয়েছে। দেওয়ানী আইনে যদি মানুষ ক্ষতিপূরণ চায় সেখানে কিন্তু ক্ষতিপূরণের কোনো লিমিট নেই। ১০০ কোটি টাকাও ক্ষতিপূরণ চাইতে পারে। সেইসব ক্যালকুলেশনে অনধিক ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করা যাবে। সর্বনিম্ন যে কোনো পরিমাণ জরিমানা করা যাবে। এক টাকাও জরিমানা করা যাবে কিন্তু ২৫ লাখ এক টাকা জরিমানা করা যাবে না।’

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৯ ধারায় রয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে Penal Code (Act XLV of 1860) এর section 499 এ বর্ণিত মানহানিকর তথ্য প্রকাশ বা প্রচার করেন, তজ্জন্য তিনি অনধিক ৩ (তিন) বৎসর কারাদণ্ডে, বা অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন। যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত অপরাধ দ্বিতীয় বার বা পুনঃপুন সংঘটন করেন, তাহা হইলে ওই ব্যক্তি অনধিক ৫ (পাঁচ) বছরের কারাদণ্ডে, বা অনধিক ১০ (দশ) লাখ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন ‘

আর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৮ ধারায় বলা আছে, ‘(১) যদি কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে বা জ্ঞাতসারে ধর্মীয় মূল্যবোধ বা অনুভূতিতে আঘাত করার বা উসকানি দেওয়ার অভিপ্রায়ে ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা প্রচার করেন বা করান, যা ধর্মীয় অনুভূতি বা ধর্মীয় মূল্যবোধের ওপর আঘাত করে, তাহলে তা অপরাধ বলে গণ্য হবে। এই অপরাধে তাকে অনধিক ৫ (পাঁচ) বছরের কারাদণ্ডে, বা অনধিক ১০ (দশ) লাখ টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে। যদি কোনো ব্যক্তি ওই অপরাধ দ্বিতীয় বার বা পুনঃপুন সংঘটন করেন, তাহলে তিনি অনধিক ১০ (দশ) বছরের কারাদণ্ডে, বা অনধিক ২০ (বিশ) লাখ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন ।‘

‘সাইবার সিকিউরিটি আইনে এটা পাঁচ বছরের কারাদণ্ড থেকে কমিয়ে দুই বছর করা হচ্ছে। আগে অজামিনযোগ্য ছিল, সেটিকে জামিনযোগ্য করা হচ্ছে’ বলেন আইনমন্ত্রী।

*

*

আরও পড়ুন