তরুণরাই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের মূল শক্তি : প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশ স্টার্টআপ সামিট-২০২৩ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের মূল শক্তি তরুণ প্রজন্ম। তারা মেধাবী এবং তাদের নতুন উদ্ভাবন বাস্তবায়নের ক্ষমতা রয়েছে।

শনিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে প্রথমবারের মতো দুই দিনব্যাপী ‘বাংলাদেশ স্টার্টআপ সামিট-২০২৩’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের তরুণ প্রজন্মই হবে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের প্রতিটি ক্ষেত্রে সবচেয়ে দক্ষ জনশক্তি।’

Techshohor Youtube

২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি স্মার্ট দেশ হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ২০৪১ সাল নাগাদ একটি সাশ্রয়ী, টেকসই, উদ্ভাবনী, বুদ্ধিদীপ্ত ও জ্ঞাননির্ভর স্মার্ট ও উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে চাই। এ লক্ষ্য অর্জনে আমাদের উদ্ভাবন ও গবেষণার ওপর জোর দিতে হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ইন্টারনেট অব থিংস, ব্লকচেইন, রোবোটিক্স, বিগ ডেটা, মেডিক্যাল স্ক্রাইব, সাইবার সিকিউরিটির মতো অগ্রসর প্রযুক্তিতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আইসিটিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নিজস্ব চিন্তা ও পরামর্শে আমরা ২০১৯ সালে ৫০০ কোটি টাকার তহবিল ঘোষণাসহ দেশে ‘স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড’ নামে একটি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কম্পানির অনুমোদন দেই। স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড এ পর্যন্ত ৩০টি বিনিয়োগ সম্পন্ন করেছে এবং এর ‘শতবর্ষে শত আশা’ ক্যাম্পেইনের আওতায় ১০০টি স্টার্টআপে বিনিয়োগের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের মাধ্যমে ১৫ লখেরও বেশি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান হয়েছে।’

বাংলাদেশ স্টার্টআপ সামিট-২০২৩ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে তৈরি ইলেকিট্রক গাড়ি ও সোলার অটো রিকশা দেখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২ কোটিরও বেশি শিক্ষার্থীকে একাডেমিক কোর্স এবং স্কিল ডেভেলপমেন্ট কোর্স প্রদান করা হয়েছে। ‘স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড’ বিনিয়োগকৃত স্টার্টআপদের মাধ্যমে ডিসেম্বর-২০২২ পর্যন্ত ৯২ লাখ মানুষ সেবা ও প্রশিক্ষণ পেয়েছে যার মধ্যে ৫৫ শতাংশ নারী।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাঁর সরকারের লক্ষ্য ২০২৫ সালের মধ্যে পাঁচটি ইউনিকর্ন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৫০টি ইউনিকর্ন স্টার্টআপ তৈরি করতে সহায়তা করা যেখানে প্রতিটি ইউনিকর্ন স্টার্টআপ লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে।

তিনি দেশী এবং বিদেশী বিনিয়োগকারীদের স্টার্টআপগুলোতে আরও বেশি বিনিয়োগের আহবান জানিয়ে বলেন, ‘আমরা আপনার বিনিয়োগ রক্ষা করার জন্য  প্রয়োজনীয় নীতিমালা তৈরি করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার বিভিন্ন মহলের সমালোচনা, অপমানজনক ও হাস্যকর মন্তব্য সহ্য করে দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরিত করেছে।

তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমরা দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর করেছি। কিন্তু, শুরুতে কড়া সমালোচনা, অপমান ও হাস্যকর মন্তব্যের সম্মুখীন হতে হয়েছে। এমনকি, যখনই কোনো কারিগরি সমস্যা বা ত্রুটি ছিল, তখনই একটি মহল আমাদের উপহাস করে বলেছিল, ‘এটি ডিজিটাল বাংলাদেশের ফল।’

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে তাদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করার সময় ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করে। সে সময় আমাদের অনেক সমালোচনার মুখে পড়তে হযেছিল। এখন, আমি গর্বের সাথে বলতে পারি যে, আমরা দেশকে ডিজিটালে রূপান্তরিত করেছি।’ 

বাংলাদেশ স্টার্টআপ সামিট-২০২৩ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্টার্টআপ অ্যাওয়ার্ড দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অ্যাওয়ার্ড নিচ্ছেন এসবিকে টেক ভেঞ্চারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোনিয়া বশির কবির।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বক্তব্য রাখেন তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব সামসুল আরেফিন ও স্টার্টআপ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদ।

প্রধানমন্ত্রী ‘ভারত-বাংলাদেশ স্টার্টআপ ব্রিজ’ নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্ম এবং ‘স্মার্ট বাংলাদেশ স্টার্টআপ ফান্ড’-এর পাশাপাশি ‘স্মার্ট বাংলাদেশ এক্সিলারেটর’ উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ স্টার্টআপ সামিট, বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্রান্ট এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বিষয়ক তিনটি অডিও-ভিজ্যুয়াল প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

এছাড়া আটটি স্টার্টআপকে আটটি বিভাগে স্টার্টআপ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে। এসবিকে টেক ভেঞ্চার. শপআপ, পাঠাও, বিকাশ, টেন মিনিট স্কুল, ইউএনডিপি ইয়ুথকো ল্যাব, নগদ এবং ফান্ডেড নেক্সট এ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে।

অনুষ্ঠানে পুরস্কারপ্রাপ্তদের পক্ষে এসবিকে টেক ভেঞ্চারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোনিয়া বশির কবির এবং নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বক্তব্য রেখেছেন।

*

*

আরও পড়ুন