বিলম্ব ফি নিয়ে লাইসেন্স সংশোধন, অপারেটরদের মতামত চেয়েছে বিটিআরসি

tower-techshohor
মোবাইল নেটওয়ার্ক টাওয়ার, ছবি- ইন্টারনেট।

আল-আমীন দেওয়ান : গাইডলাইন ও লাইসেন্সে বিলম্বে প্রযোজ্য ফি এবং চার্জের অর্থ জমা সংক্রান্ত ধারা সংশোধনে মোবাইল অপারেটরদের মতামত চেয়েছে বিটিআরসি।

শুধু মোবাইল ফোন অপারেটর নয় বিটিআরসির স্টেকহোল্ডার বা লাইসেন্সিদের কাছেই মতামত চাওয়া হয়েছে। কারণ গাইডলাইন ও লাইসেন্সের ওই ধারা সংশোধন সব লাইসেন্সিদের ক্ষেত্রেই।

মতামত চেয়ে মঙ্গলবার জারি করা ওই নোটিসে ১৫ দিনের বক্তব্য বা মতামত দিতে বলা হয়েছে। যেখানে বক্তব্য প্রদানকারীর নাম, তাদের লাইসেন্স নম্বর এবং মোবাইল নম্বর উল্লেখ রাখতে হবে।

Techshohor Youtube

বিটিআরসি বলছে, সরকারের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে প্রস্তাবিত সংশোধন বা সংযোজনীর বিষয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন-২০০১ এর ধারা ৩৯ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের বক্তব্য-পর্যবেক্ষণ, মতামত ও সুপারিশ থাকলে তা চাওয়া হয়েছে।

এরআগে এ সংশোধনীর উদ্যোগ নিয়ে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো প্রবল আপত্তি তোলে। তাদের বক্তব্য, একপাক্ষিকভাবে লাইসেন্সের কোনো ধারা সংশোধন হলে তা ব্যবসাকে প্রভাবিত করে এবং অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করে যার ফলে বিনিয়োগকারীরা আস্থা হারিয়ে ফেলেন। আর টেলিকম আইনের প্রাসঙ্গিক বিধান অনুযায়ী, আইনে কোনো সংশোধনী আনতে হলে তা সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের মতামত ও আলোচনার ভিত্তিতে হওয়া উচিত।

সংশোধনী ও আগে যা ঘটেছে :

বিটিআরসির সকল লাইসেন্সিরা নিজ নিজ গাইডলাইন এবং লাইসেন্সের বিধি অনুযায়ী প্রযোজ্য ফি এবং চার্জের অর্থ পরিশোধ করে। যেখানে সব জায়গায় এসব ফি ও চার্জ দেরিতে দেয়ার ক্ষেত্রে বিলম্ব ফি ও চার্জ নিয়ে লাইসেন্স চালু রাখা কিংবা অর্থ না দিলে লাইসেন্স বাতিল বা যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার বিধি রয়েছে।

এ নিয়ে বিটিআরসি বলেছে, তারা এই বিলম্ব ফি ও চার্জ সংশ্লিষ্ট বিধি ন্যাশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক বা এনটিটিএন প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে স্পষ্টীকরণ করেছে। আর এটিই এখন সব লাইসেন্সিদের গাইডলাইন ও লাইসেন্সে সংশোধনী দেয়া হচ্ছে। এটি শুধুমাত্র স্পষ্টীকরণ।

এনটিটিএনের গাইডলাইন ও লাইসেন্সে বিটিআরসির করা ওই সংশোধনীতে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ পূর্বানুমোদন দেয়।

এনটিটিএনদের ক্ষেত্রে বিটিআরসির করা সংশোধিত ধারাটি হলো, ‘বার্ষিক লাইসেন্স ফি এবং রেভিনিউ শেয়ারিং নির্ধারিত তারিখের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। নির্ধারিত তারিখের ৬০ দিন পর্যন্ত বকেয়া অর্থ প্রদান করা যেতে পারে, এক্ষেত্রে, লাইসেন্সধারীকে ক্ষতিপূরণ হিসাবে বার্ষিক ১৫ শতাংশ হারে বিলম্ব ফিসহ কমিশনকে পরিশোধ করতে হবে । উপরে উল্লেখিত ৬০ দিন অতিক্রান্তের পরও যদি বকেয়া পরিশোধজনিত ব্যর্থতা অব্যাহত থাকে, সেক্ষেত্রে লাইসেন্স বাতিল হতে পারে। যাইহোক, মূল অর্থ গননা করতে হবে এবং বিলম্ব ফিসহ পরিশোধ করতে হবে প্রকৃত অর্থ প্রদানের তারিখ বা লাইসেন্স বাতিলের তারিখ পর্যন্ত, যেটি আগে।’

এনটিটিএনে এটি গাইডলাইন ক্লজ ১৫.০৬ এবং লাইসেন্সিং ক্লজ ৬.০৬ এ প্রতিস্থাপিত হয়েছে।

বিটিআরসির সিদ্ধান্তে এখন এই সংশোধিত ধারাটিই মোবাইল ফোন অপারেটরসহ বিটিআরসির সকল লাইসেন্সির গাইডলাইন ও লাইসেন্সে হবে। মোবাইল ফোন অপারেটরদের ক্ষেত্রে টুজি লাইসেন্স ৫.২.৩, থ্রিজি লাইসেন্স ৫.০২.৩ এবং ফোরজি লাইন্সেন্স ৫.০৩ ধারায় হবে। আর অন্যান্য লাইসেন্সিদের ক্ষেত্রে এ সংক্রান্ত বিষয়ের ধারায় হবে।

ইতোমধ্যে তা সরকারের পূর্বানুমোদেনের জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। আর পূর্বানুমোদন সাপেক্ষে এই সংশোধনী স্ব-স্ব লাইসেন্স জারির তারিখ হতে কার্যকর হবে।

আর এরপর মোবাইল অপারেটরগুলো এ সংশোধনী নিয়ে তাদের আপত্তি তুলতে শুরু করে।

*

*

আরও পড়ুন