শীঘ্রই ডাকসেবা কাঙ্ক্ষিত মানে উন্নীত হবে - মোস্তাফা জব্বার

টেকশহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, শীঘ্রই ডাকসেবা কাঙ্ক্ষিত মানে উন্নীত হবে। ডিজিটাল সার্ভিস ডিজাইন ল্যাবের (ডিএসডিএল) প্রস্তাবের আলোকে ইতোপূর্বে পরিচালিত সমীক্ষা স্মার্ট ডাকঘর প্রতিষ্ঠায় একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক। এর ফলে উৎপাদনমুখী কর্মকাণ্ডের ডিজিটালাইজেশনের শক্তিশালী ভিত তৈরি হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় স্মার্ট ডাকঘর বিণির্মাণের মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে শিগগিরই ডাকসেবা কাঙ্ক্ষিত মানে উন্নীত হবে।

মন্ত্রী ১৯ জুলাই বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ডাকভবন মিলনায়তনে ডাক অধিদফতর ও এটুআই প্রোগ্রামের যৌথ উদ্যোগে স্মার্ট ডাকঘর বিষয়ক গৃহীত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন সংক্রান্ত এক বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন ।

মন্ত্রী স্মার্ট ডাকসেবার জন্য পরিচালিত সমীক্ষার সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সুপারিশের ভিত্তিতে স্মার্ট ডাকঘর বিণির্মানের কার্যক্রম দ্রুত শুরু করার প্রক্রিয়া গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন।

Techshohor Youtube

তিনি বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানকে ডিজিটাল করতে এটুআই প্রচুর সলিউশন তৈরি করেছে। আমাদের দেখতে হবে যে প্রতিষ্ঠানের রূপান্তরের দরকার সেই প্রতিষ্ঠান রূপান্তর হচ্ছে কিনা। ডাক কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ডিএসডিএল সুপারিশ তৈরি এটুআইয়ের একটি ফলপ্রসূ উদ্যোগ।

স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট ডাকঘর অপরিহার্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশব্যাপী ডাকঘরের বিশাল অবকাঠামো ও নেটওয়ার্ক যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারলে দেশ উপকৃত হবে। আজকের ডিজিটাল প্রযুক্তির যুগে প্রতিটি মানুষে মানুষে যোগাযোগের ব্যবস্থাও ডাক অধিদফতর করতে পারে। এই প্রতিষ্ঠান দেশের প্রতি প্রান্তের প্রতিটি মানুষকে চেনে।

মন্ত্রী বলেন, এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসের ৬ তারিখে পেশ করা সমীক্ষা প্রতিবেদনে স্মার্ট ব্যবসার জন্য নতুন ব্যবসায়িক মডেল বাস্তবায়ন, জি-টু-জি ডাক সেবা এবং ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব প্রদানের পাশপাশি স্মার্ট সক্ষমতা তৈরির জন্য মানসিকতা ও বিদ্যমান ধ্যান ধারণার পরিবর্তন, স্মার্ট প্রযুক্তি গ্রহণ এবং স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহারের সক্ষমতা তৈরির কথা বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, স্মার্ট ডাকঘর প্রতিষ্ঠায় পরিচালিত সমীক্ষা প্রতিবেদনে স্মার্ট ডিজিটাইজেশন, স্মার্ট অবকাঠামো, স্মার্ট ব্যবসা এবং স্মার্ট সক্ষমতা এই চারটি অনুষঙ্গ বাস্তবায়নে স্মার্ট বিপিও কমিশন গঠন, স্মার্ট বিপিও টাস্ক ফোর্স গঠন এবং সম্ভাব্য স্বল্প সময়ের মধ্যে এ চারটি বিষয় বাস্তবায়নে ডিপিপি প্রস্তুত, স্মার্ট বিপিও কৌশল প্রণয়ন এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের আর্থিক উৎস ও নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে।

এ ছাড়াও সমীক্ষা প্রতিবেদনে স্মার্ট ডাকঘর বাস্তবায়নে তিনটি অপসনের ব্যাপারে সুপারিশ করা হয়েছে। প্রথমটি হচ্ছে, সমন্বিতভাবে চারটি অনুষঙ্গ বাস্তবায়ন, দ্বিতীয় অপসনে রয়েছে অগ্রাধিকার ভিত্তিক বিষয়গুলোর বাস্তবায়ন এবং তৃতীয় অপসনটি হচ্ছে স্মার্ট জিপিও মডেল। মন্ত্রী এই তিনটি অপসনের মধ্যে তৃতীয় পদ্ধতিটি বাস্তবায়ন ও অবিলম্বে একটি প্রকল্প গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রথমটি পুরো ডাক ব্যবস্থাকে একসাথে স্মার্ট ডাকঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠায় চারটি অনুষঙ্গের সবকটি এক সাথে বাস্তবায়ন। এ জন্য সম্ভাব্য সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ বছর এবং সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা। দ্বিতীয় অপসন হচ্ছে, অগ্রাধিকার অনুষঙ্গ ভিত্তিক একক প্রকল্প। এর আওতায় স্বয়ংক্রিয় মেইল প্রসেসিং সেন্টার, সমন্বিত ডিজিটাল প্রকল্প এবং অবকাঠামো ও লজিস্টিক সাপোর্ট। এটি বাস্তবায়নে সম্ভাব্য সময় ধরা হয়েছে ৫ থেকে ৮ বছর এবং সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৫শ’ কোটি টাকা।

মন্ত্রী সবগুলো অনুষঙ্গ যাচাই বাছাই করে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের ভিত্তিতে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানের কাজ দ্রুত শুরু করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

উল্লেখ্য ডাকঘর ডিজিটাইজেশনের জন্য এটুআই’র ব্যবস্থাপনায় গৃহীত ডিজিটাল সার্ভিস ডিজাইন ল্যাব (ডিএসডিএল) এর সুপারিশ অনুযায়ী ‘একটি সমীক্ষা প্রকল্পের’ আওতায় ‘বাংলাদেশ পোস্ট অফিসের জন্য অটোমেটেড মেইল প্রসেসিং নির্মাণ প্রকল্পের’ অধীনে এ সমীক্ষাটি পরিচালিত হয়।

চলমান কর্মসূচি সফল করতে ডাক অধিদপ্তরের ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: হারুনুর রশিদ সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে এটুআই কর্মকর্তা ফরহাদ জাহিদ শেখ সাব্বির রহমান এবং ডাক অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালকসহ উধ্বতন কর্মকর্তাগণ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

*

*

আরও পড়ুন