ছবিটি কি আসল নাকি এআই ?

ছবি - নাইট ক্যাফে ফেইসবুক পেইজ

টেকশহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির ব্যবহার ক্রমে বাড়ছে। শিল্পকর্ম, সাহিত্য , সঙ্গীত, ফটোগ্রাফি যাই হোক না কেন এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে সৃষ্ট কনটেন্টের হার ক্রমে বাড়ছে। এআইয়ের মাধ্যমে এতো নিখুঁত ও উন্নত কাজ হচ্ছে যে এর ফলে কোনটি আসল আর কোনটি নকল তা বোঝা কঠিন হয়ে পড়েছে।

ওয়েবসাইট নাইট ক্যাফে সম্প্রতি এআই সফটওয়্যার ব্যবহার করে তৈরি কিছু ছবি প্রকাশ করেছে। এসব ছবি একটিও বাস্তব নয়। ছবিগুলো একটি টেক্সট প্রম্পটের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে সৃষ্ট এই কাজগুলো এতোটাই নিখুঁত হয় যে তা প্রতিযোগিতার বিচারকদেরও চোখে ধোঁকা দিয়েছে। জার্মানির শিল্পী বরিস এলডাগসেন এআইর মাধ্যমে সৃষ্ট এই ছবিুগলো দিয়ে চলতি বছরের সনি ওয়ার্ল্ড ফটোগ্রাফি এওয়ার্ড জিতে নিয়েছেন। তবে তিনি এই পুরস্কার গ্রহন করেন নি। এলডাগসন বলেছেন , ‘ছবিগুলো যে এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি তা কোন একজন বিচারকও বুঝতে পারেন কিনা অথবা নিদেনপক্ষে এ বিষয়ে সন্দেহ করেন কিনা’ তা বুঝতেই প্রদর্শনীতে ছবি দিয়েছিলেন তিনি।

এলডাগসন বলেছেন, ‘এ ধরনের আয়োজনে এআই’র মাধ্যমে সৃষ্ট ছবি এবং ফটোগ্রাফি একে অন্যের প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে পারে না।’ নাইট ক্যাফের প্রতিষ্ঠাতা অ্যাঙ্গুস রাসেল বলেছেন, ‘ পাঁচ বছর আগেও মানুষ ভাবতো এআই প্রযুক্তি বিরক্তিকর কাজগুলো দখল করে নিবে। সৃজনশীলতার মতো কাজগুলো আরো দীর্ঘদিন নিরাপদ থাকবে। কিন্তু এখন পুরো বিপরীত চিত্র দেখা যাচ্ছে। সৃজনশীল কাজ ও জ্ঞানভিত্তিক কাজগুলো সবার আগে এআই প্রযুক্তির দখলে চলে যাচ্ছে।

Techshohor Youtube
ছবি – নাইট ক্যাফে ফেইসবুক পেইজ

বিবিসির নিউজের পিকচার এডিটর ফিল কোমস বলেছেন, ভুয়া বা নকল ছবি নতুন কিছু নয়। এরমধ্যে এআই প্রযুক্তি ‘আরো কিছু চ্যালেঞ্জ’ যুক্ত করবে। নকল ছবিগুলো শনাক্ত করার কিছু টুল রয়েছে। এআইয়ের ক্ষেত্রেও এগুলো সহায়ক হবে। তবে সবকিছুই ছবির ভিজ্যুয়াল প্রমানের ওপর নির্ভর করে।’

কার্ডিফ ইউনিভার্সিটির স্কুল অব জার্নালিজম বিভাগের উদ্ভাবন বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক ডেভিড গ্রিমাহ বলেছেন, ‘একটি ভালো ফটোগ্রাফির সবকিছুই আপনি এখানে আশা করতে পারেন। আপনি কোনভাবেই বিশ্বাস করতে পারবেন না যে এআইয়ের মতো কোন কিছু দিয়ে এগুলো তৈরি করা হয়েছে। সাংবাদিকতা এবং সঠিক কনটেন্ট তৈরির ক্ষেত্রে এআইয়ের মাধ্যমে সৃষ্ট ছবির উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ব্যবহার খুবই ক্ষতির কারণ হবে। তিনি আরো বলেছেন, ‘আমরা এমন একটি সময়ে প্রবেশ করেছি যেখনে প্রযুক্তি নীতিকাঠামোর আগে আগে দৌড়াচ্ছে। বিষয়টি আমাদেরকে খুবই অনিশ্চিত অবস্থানে ফেলে দিয়েছে। এটি প্রকৃত ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতে পারে।’

গ্রিমাহ আরো বলেন, ‘ছবিগুলো ক্যামেরার মাধ্যমে উঠানো নয় তা জানা সত্ত্বেও সেগুলো যারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিনভাবে ব্যবহার করে তাদের আপনি কিভাবে ঠেকাবেন? এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি ছবিগুলো খুবই আধুনিক এবং এখানে যে কোড ব্যবহৃত হয় তা একসময় ওপেন সোর্স হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় ভালো কোন ছবি দেখে এমন প্রশ্ন স্বাভাবিক হয়ে উঠতে পারে- ছবিটি কি আসল নাকি এআই?

বিবিসি/আরএপি

*

*

আরও পড়ুন