ট্রাম্প গ্রেফতার ঘটনায় অনলাইনেই সরব সমর্থকরা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি : ইন্টারনেট

টেকশহর কনটেন্ট কাউন্সিলর: যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার বিরুদ্ধে দায়ের করা ফৌজদারী মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন। অবশ্য মঙ্গলবার গ্রেফতারের কিছুক্ষণের মধ্যেই তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্টদের মধ্যে ট্রাম্পই প্রথম এ ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখিন হলেন। গ্রেফতার হওয়ার দুই সপ্তাহ আগে ট্রাম্প সম্ভাব্য অভিযোগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানান তার সমর্থকদের। এরপর কেমন প্রতিক্রিয়া পাওয়া গিয়েছে?

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ গঠনের খবরটি অনলাইনে রীতিমতো দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রাম্পপন্থীদের কথোপকথনে তাদের মনোভাব সম্প্রর্কে সম্পূর্ণ ধারনা পাওয়া না গেলেও ক্রোধ ও দুশ্চিন্তার বহিঃপ্রকাশ পাওয়া গিয়েছে অনেকক্ষেত্রেই মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিউ রিসার্চের তথ্যানুযায়ি, যুক্তরাষ্ট্রের সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্টগুলোকে পাঁচটি বৈশিষ্ট্য অনুযায়ি ভাগ করা হয়েছে। এই পাঁচ ধরনের বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি সোশ্যাল মিডিয়ায় মার্কিন ভোটাররা কি দেখছেন। এদের মধ্যে আবার ট্রাম্প-সংশ্লিষ্ট প্রতিক্রিয়া অনুযায়ি তিনধরনের দল পাওয়া গিয়েছে।

এদের মধ্যে দেখা গিয়েছে অনেক সমর্থকের নিউজ ফিড ট্রাম্পপন্থী বার্তায় ছেয়ে গিয়েছে। সাবেক প্রেসিডেন্টের সাথে তারা সুর মিলিয়ে বলেছে ডেমোক্রেটরা কিভাবে ‘আইনি ব্যবস্থাকে অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করছে। তারা বলছে এটি কি বিচারের নামে উইচ হান্ট চলছে? এ ধরনের বার্তা সম্বলিত টুইটও রয়েছে। রিপাবলিকান দলের রাজনীতিবিদ ও মতামতদাতারাও এ ধরনের টুইট করেছে। তারা এগুলোকে ২০২৪ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে একটি সমাবেশের আহবান হিসেবে ব্যবহার করেছে। কিছু অ্যাকাউন্ট থেকে তাকে এখনই হোয়াইট হাউজে পুনরায় পাঠানোর আহবান জানানো হয়েছে।

Techshohor Youtube

তবে ট্রাম্পের সোশ্যাল মিডিয়া ট্রুথ সোশ্যালে তার গ্রেফতার সম্পর্কে পূর্বানুমান করে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন পোস্ট দিয়েছিলেন ট্রাম্প। সেখানে দেখা গিয়েছে পোস্টটি সমর্থকরা দেখলেও তারা আন্দোলনে যাওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন।
অন্যদিকে টেলিগ্রামের মতো সাইট যেখানে ট্রাম্পের সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিশীল সমর্থকরা জড়ো হন সেখানে ভিন্ন মেজাজ দেখা গিয়েছে। এই সাইটটিতেই বলা হয়েছে সাবেক প্রেসিডেন্ট অভিজাত, সরকারের মধ্যে থাকা শয়তানের পূজারী, ব্যবসা এবং গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে গোপন যুদ্ধে নেমেছেন।

ট্রাম্পের সমর্থকদের মধ্যে দুইধরনের মনোভাব দেখা গিয়েছে। একদল সরকারের বিরুদ্ধে অত্যন্ত সহিংস বক্তব্য তুলে ধরেছে। যেমন- লেখা হয়েছে,‘হিয়ার উই গো।’ অথবা ‘তাদের পালা শিগগরই আসছে।’

আবার অনেকে দাবি করেন ২০২০ সালের নির্বাচনে কারচুপি হয়েছিল এবং ট্রাম্পই ছিলেন সঠিক বিজয়ী। ‘ট্রাম্পকে গ্রেফতার করা হলে এই ভুয়া সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড়াবো কিনা’।
এরচেয়েও কঠোরতম বার্তায় বলা হয় ‘কিল দ্য ডিপ স্টেট’। কিন্তু এখানে আন্দোলন শুরুর কোন পরিকল্পনার দৃশ্যমান প্রমান পাওয়া যায় নি।
সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে ট্রাম্পপন্থীরা সমাবেশের কথা বললেও যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিল বিক্ষোভের মতো কোন পদক্ষেপ গ্রহনের মনোভাব দেখা যায় নি। এই পার্থক্যটি অন্যভাবেও ব্যাখ্যা করা যায়। যেমন আন্দোলনকারীরা অনলাইনেই ঘোরাফেরা করছেন তারা রাস্তা থেকে দূরে রয়েছেন।
টেলিগ্রামের বেশ কয়েকটি পোস্টে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে যে তাদেরকে আন্দোলনে যেতে উসকে দেয়া হচ্ছে এবং গ্রেফতার করা হতে পারে। একজন লিখেছেন তারা মাত্রই ‘ট্রাম্পকে ইতিহাসের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক শহীদ’ বানিয়েছেন।

তবে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিষয়টি নিয়ে বামদলের ভিতরেও বেশ আলোচনা হয়েছে। অভিযোগ গঠনের খবরটি প্রকাশের পরপরই সোশ্যাল মিডিয়ায় বামপন্থী ভোটারদের নিউজফিড ট্রাম্পকে নিয়ে তৈরি বিদ্রুপাত্মক কার্টুনে ছেয়ে যায়। সেখানে দেখা যায় জাম্পস্যুট পরিহিত ট্রাম্প কারাগারের ভেতরে বসে রয়েছেন।
বেশ কয়েকজন সম্ভাব্য গ্রেফতাকে উদযাপন করে লিখেছেন ,‘কেউ-ই আইনের উর্ধ্বে নয়।’ তবে বামপন্থী ভোটারদের মধ্যে অনেকে আবার সংশয়ও প্রকাশ করেছেন। কয়েকজনের পোস্টে জানতে চাওয়া হয়েছে মূল অপরাধের জন্য ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কবে নাগাদ অভিযোগ গঠন করা হবে। তার বিরুদ্ধে চলমান অন্যান্য তদন্ত নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
কেউ কেউ বলছেন রিপাবলিকান পার্টি যেভাবে তার বিরুদ্ধে লেগেছে তাতে করে ট্রাম্পের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রচারনার পালে আরো হাওয়া লাগবে।

বিবিসি/আরএপি

আরও পড়ুন

চলেই এলো ট্রাম্পের সোশ্যাল মিডিয়া

ইউটিউব ট্রাম্পের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা সরাবে, তবে…

*

*

আরও পড়ুন