ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার সার্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত

টেকশহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : সোমবার ‘ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার সার্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা এবং বাংলাদেশের পর্যবেক্ষণ’ বিষয়ক সেমিনার আয়োজিত হয় বিটিআরসির মিলনায়তনে।

বিটিআরসি ও বিআইজিএফ এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, বিআইজিএফ সভাপতি হাসানুল হক ইনু , সংসদ সদস্য আফরোজা হক রীনা এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নিবাহী পরিচালক রণজিৎ কুমার বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে ‍সূচনা বক্তব্য রাখেন বিটিআরসি‘র মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. এহসান কবীর। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইজিএফ সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ আব্দুল হক (অনু)।

Techshohor Youtube

টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, বিশ্বের ৩৫ কোটি বাংলাভাষাভাষীর জন্য বাংলাদেশই হচ্ছে বাংলা ভাষার রাজধানী। বাংলাদেশই ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলার এনকোডিং ও কিবোর্ডের মান প্রমিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই বাংলার ১৬টি টুলস উন্নয়নে ১৫৯ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করেছেন যার কাজ চলমান। বাংলাদেশে প্রকাশনার জন্য বস্তুত একটিই কিবোর্ড ও সফটওয়্যার ব্যবহৃত হয়। এখানে আসকি ও ইউনকোডের মধ্যে যে দেওয়াল আছে তা ভেঙে ফেলা হয়েছে। তারপরও ইউনিকোড কনভার্সনে যে জটিলতা হয় তার অপরাধ বাংলা ভাষাভাষীদের নয়।

ভাষা ও সাহিত্যের প্রাযুক্তিক সমস্যাটার পেছনে ইউনিকোড কনসোর্টিয়ামের দায় রয়েছে উল্লেখ করে মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমাদের ভাষাকে একটি স্বতন্ত্র্য ভাষা হিসেবে গণ্য না করে আমাদেরকে ‘দেবনাগরীর’ অনুসারী করে প্রচণ্ড রকম ক্ষতি করা হয়েছে। এজন্যই এখনো আমাদেরকে নোক্তা নিয়ে যুদ্ধ করে বেড়াতে হচ্ছে। অথচ বংলা বর্ণে কোনে নোক্তা নেই। ইউনিকোড যদি বাংলাকে বাংলার মতো দেখে এই সমস্যাগুলো সমাধান করে ফেলতো তাহলে যে সমস্যাগুলো এখন মোকাবেলা করতে হচ্ছে তা আমরা করতাম না।

তিনি বলেন, প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা ব্যবহারে আসকি, ইউনিকোড এবং প্রমিতের নির্দিষ্ট মান থাকলেও তার প্রয়োগ না থাকায় স্পেল চেকার, অভিধান, ওসিআর ইত্যাদিসহ বাংলা এনএলপি ব্যবহার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাই এর প্রয়োগের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদেরকে আরো সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

মন্ত্রী ইউনিকোডে বাংলা লিপি ঢ-ঢ়, ড-ড়, য-য়-তে সমস্যা থাকাতে বড় তথ্য বিশ্লেষণ, সার্চ ইঞ্জিন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় এবং ইন্টারনেট অব থিংসে বেশ সংকট দেখা দিচ্ছে উল্লেখ করে বলেন, মুদ্রণ জগতে রোমান লিপির সঙ্গে বাংলা লিপির এনকোডিং এর ক্ষেত্রে তারতম্য আছে।

তিনি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের একদেশ এক রেট কর্মসূচির ন্যায় মোবাইল ইন্টারনেটেরটা করার জন্য সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগ গ্রহণের নির্দেশে দেন।

হাসানুল হক ইনু বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশে কর্মসূচির ফলে গত ১৪ বছরে দেশে বিস্ময়কর অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। চলমান শিল্প বিপ্লবে ডিজিটাল বৈষম্য কাম্য নয়। তিনি বলেন, মানসম্পন্ন ইন্টারনেট এবং ডিজিটাল দক্ষতা সম্পন্ন মানব সম্পদ এবং প্রযুক্তিতে ভাষার সমস্যার সমাধান করতে হবে। প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা বিষয়ক গৃহীত প্রকল্পটির দ্রুত বাস্তবায়ন প্রয়োজন।

সংসদ সদস্য আফরোজা হক রীনা ডিজিটাল প্রযুক্তিতে নারীদের অংশ গ্রহণের পাশাপাশি তাদের জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার গ্রহণযোগ্যতা প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট এবং বাংলা একাডেমিসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে এক সাথে কাজ করতে হবে।

সভাপতির বক্তৃতায় বিটিআরসির চেয়ারম্যান বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার উন্নয়নে বিটিআরসি, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল এবং বিটিসিএলসহ সংশ্লিষ্টদের সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করতে হবে। আবদুল হক অনু মূল প্রবন্ধে ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার সংকট তা সমাধানে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন।

*

*

আরও পড়ুন