![]() |
টেকশহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : স্বামীর মৃত্যুর পর ২ মাস বয়সী আদনানকে নিয়ে জীবন যুদ্ধ শুরু বিপাশার। বাবার সাথে থাকছিলেন তিনি আর তাঁর সন্তান। বাবা চলে গেছেন ২০১৮তে। ভাইয়ের সংসারে থেকে আত্মীয় স্বজনের সহায়তায় চলছিল জীবন। এলো কোভিড, স্পেশাল বেবিকে নিয়ে না পারছিলেন চাকরি করতে, না পারছিলেন জীবন চালাতে। এই মহামারিতে কে কাকে দেখবে ! দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে সন্তানের সুবাদে বন্ধু হিসেবে পাওয়া দুজন মানুষ তাকে উদ্যোক্তা হবার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। এভাবেই যাত্রা শুরু করে আদনান’স শপ। যার পরিচালক বিপাশা সুলতানা ।
নিজের সন্তানের নামে শুরু করেন উদ্যোগ । কারন দুটো ই সন্তান তুল্য ।
কি আছে আপনার আদনান শপে ? এমন প্রশ্নে বিপাশা জানালেন, মুলত গাজীপুর এলাকার খাদ্যপণ্য নিয়ে তিনি কাজ করেন। খেজুরের রাসি, আখের গুড়, মুড়ি, মশলা, লাল চাল, ঘি, ঘানি ভাঙ্গা সরিষার তেল, বিভিন্ন রকম মধু, চালের গুড়ি, ফুল পিঠা, চালের সেমাই, তেঁতুল ইত্যাদি আছে তাঁর কাছে ।
খাদ্যপণ্য নিয়ে কাজ করতে গিয়ে কি কি চ্যালেঞ্জ পাচ্ছেন? ঋতু বদলের সাথে সাথে উদ্যোক্তার দেয়া সময়ে পণ্য ডেলিভারি করা অনেক সময় চ্যালেঞ্জ মনে হয়। যখন রোদ দরকার তখন রোদ নাই , ফলে মশলা শুকিয়ে দ্রুত ডেলিভারি দিতে পারি না এইটা আমার অনেক চাপ লাগে , বলছিলেন বিপাশা ।
কত টাকা ইনভেস্ট করেন বিপাশা ? আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে ৭ হাজার টাকা ধার করে বিপাশা শুরু করেন উদ্যোগ । হাতে পণ্য না থাকলেও একদম শুরু করতেই ১২ কেজি খেজুরের রাসির অর্ডার পান তিনি । সাহস পান । ভাঙ্গা হাত নিয়ে কাজে নেমে পড়েন। অসুস্থ মায়ের কাছে ছেলেকে রেখে গ্রামে যান পণ্য সংগ্রহের জন্য।
আবেগে কান্নারত অবস্থায় কন্ঠ রোধ হয়ে যাচ্ছিল মেয়েটার। জীবনের গল্প বলতে এসে দুঃখের বাঁধ যেন ভেঙ্গে যাচ্ছিল । বলছিলেন, তাঁর প্রতিটি মুহূর্তের অভিজ্ঞতার কথা। ডেলিভারি করতে গিয়ে নানা রকম বাঁধা , পেমেন্ট রিসিভের কথা, পারা না পারার সাথে বিদেশে পাঠানো পণ্যের কথা বলতে বিপাশার মুখ চিকচিক করছিল আনন্দে।
লোগো , প্যাকিং, লেবেল, ইত্যাদি সব কাজ নিজের হাতে করেন তিনি । প্রতিযোগিতার বাজারে নিজের প্রতিষ্ঠানকে টিকিয়ে রাখতে সততার সাথে কাজ করলে মানসম্মত পণ্য ই প্রধান ভুমিকা রাখবে বলে মনে করেন বিপাশা সুলতানা । এভাবে বিশেষ সন্তানকে সাথে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন আদনানের আম্মু , বিপাশা ।