![]() |
টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন একটি বাস্তবতা। স্মার্ট বাংলাদেশ ও স্মার্ট জাতি গঠনই আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য পূরণে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) তিন দিনব্যাপী ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলার উদ্বোধনে এক ভিডিও বার্তায় এসব কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’ পরিণত করার মূল হাতিয়ার হবে ডিজিটাল সংযোগ ।
তিনি বলেছেন, স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার এবং স্মার্ট সমাজের জন্য ডিজিটাল সংযোগ মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইন্টারনেট, ভার্চুয়াল বাস্তবতা, উদ্দীপিত বাস্তবতা, রোবোটিকস অ্যান্ড বিগ-ডেটা সমন্বিত ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতের মাধ্যমে সরকার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘ডিজিটাইজেশনে বাংলাদেশে এক বিপ্লব ঘটে গেছে । জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন রাঙামাটি জেলার বেতবুনিয়ায় দেশের প্রথম স্যাটেলাইট আর্থ স্টেশন স্থাপন করেন। যার মাধ্যমে বাংলাদেশে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়। তরুণ প্রজন্ম এখন ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্বপ্ন দেখছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তার সরকার ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে রূপকল্প-২০২১ ঘোষণা করেছিল, যার মূল লক্ষ্য ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা।’
২০১৮ সালে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ কক্ষপথে উৎক্ষেপণের কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘এই স্যাটেলাইট সম্প্রচার ও টেলিযোগাযোগ খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। স্যাটেলাইটের অব্যবহৃত ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে বাংলাদেশ প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে পারছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্যে বহুমুখী কার্যক্ষমতা সম্পন্ন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট -২ স্থাপনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ এ পর্যন্ত ৩৪০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ ক্ষমতা অর্জন করেছে। এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে তা ৭২০০ জিবিপিএসে উন্নীত করা হবে। সরকার ২০২৪ সালের মধ্যে তৃতীয় সাবমেরিন কেবল স্থাপন করতে যাচ্ছে। তৃতীয় সাবমেরিন কেবল স্থাপনের পর এটি ১৩ হাজার ২০০ জিবিপিএসে উন্নীত হবে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, সৌদি আরব, ফ্রান্স, মালয়েশিয়া ও ভারতকে ব্যান্ডউইথ লিজ দেওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রতি বছর ৪ দশমিক ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করছে । বাংলাদেশকে আর বিদেশি স্যাটেলাইটের ওপর নির্ভর করতে হবে না।
সারা দেশে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত প্রায় ৯ লাখ ৫৬ হাজার ২৯৮ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার কেবল স্থাপন করার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি ইউনিয়নে ১০ গিগাবাইট ক্ষমতা নিশ্চিত করা হয়েছে যা জনগণ ও সরকারি অফিসগুলোতে উচ্চ গতির ইন্টারনেট সরবরাহ করতে সহায়তা করে।
তিনি বলেন, বর্তমানে ১৮ কোটি মোবাইল সিম ব্যবহার করা হচ্ছে, যেখানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২ কোটি। গ্রামীণ ও শহরাঞ্চলের মধ্যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ডিজিটাল বৈষম্য এবং দামের পার্থক্য দূর করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে এই ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা ডিজিটাল পণ্য বিনিয়োগ ও রপ্তানিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি একেএম রহমতুল্লাহ এবং ডাক টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আবু হেনা মোর্শেদ জামান বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন হুয়াওয়ের ক্যারিয়ার বিজনেসের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং চিফ অপারেটিং অফিসার ক্লিফ হু।
ডিজিটাল প্রযুক্তি উদ্ভাবন, উপযোগী মানবসম্পদ সৃষ্টি, ডিজিটাল প্রযুক্তির আধুনিক সংস্করণের সাথে জনগণের সেতুবন্ধন তৈরি এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়নের অগ্রগতি তুলে ধরতে এবারের এই মেলার আয়োজন। এবার মেলার প্রতিপাদ্য ‘ ডিজিটাল বাংলাদেশের সংযুক্তির মহাসড়ক’।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ মেলা চলবে ২৬ থেকে ২৮ জানুয়ারি । প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত দর্শনাথীদের জন্য মেলা খোলা থাকছে।
এই মেলার টাইটেনিয়াম স্পন্সর হুয়াওয়ে। ডায়মন্ড স্পন্সর জেডটিই এবং সহযোগী হিসেবে রয়েছে আইএসপিএবি।