১০০০ নারী উদ্যোক্তা পেল আইডিয়া প্রকল্প থেকে ৫ কোটি টাকার অনুদান

টেকশহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রর (বিআইসিসি) হল অব ফেইমে অনুষ্ঠিত এক আয়োজনে ১০০০ জন নারী উদ্যোক্তার প্রত্যেককে ৫০,০০০ টাকা করে মোট ৫ কোটি টাকা অনুদান প্রদান করা হয়। আগামীতে প্রযুক্তির মাধ্যমে ১৮ বছরের নিচের কিশোরী উদ্যোক্তাদের এবং প্রত্যেক সংসদীয় আসনে ২জন নারী উদ্যোক্তাকেও অনুদান দেয়া হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ২৯ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের অধীনে উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমি প্রতিষ্ঠাকরণ (iDEA) প্রকল্প কর্তৃক “স্মার্ট নারী উদ্যোক্তা অনুদান প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, সভাপতি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ।

ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন , প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা বিশ্বে বাংলাদেশকে নারী ক্ষমতায়ন, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং জেন্ডার সমতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বা রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। তারই নিরলস পরিশ্রম এবং দূরদৃষ্টি সম্পন্ন চিন্তাধারা, সংবেদনশীলতা এবং সকল কিছুর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের নারীরা দৃশ্যমানভাবে প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়ে এসেছে। সারা বিশ্বের মত বাংলাদেশও তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ সুবর্ণ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে । তিনি তথ্যপ্রযুক্তিকে আমাদের কাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে নখদর্পণে নেওয়ার পাশাপাশি নিজেদের উন্নয়নের জন্য প্রতিটি ক্ষেত্রে এর সর্বাত্নক ব্যবহার নিশ্চিত করার পরামর্শ দেন।

Techshohor Youtube

সভাপতির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, নারীর প্রকৃত ক্ষমতায়নে নারীর আর্থিক সক্ষমতার গুরুত্ব তার লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরেছেন বঙ্গবন্ধু। আর তা বাস্তাবায়ন করছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি নারী ক্ষমতায়নের ও কর্ম সৃজনের অগ্ৰদূত। তাঁর গৃহীত নানা উদ্যোগ ও ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে ই-ক্যাব করোনায় ই-কমার্সকে লাইফ লাইনে পরিণত করেছেন। তাই আগামীতে প্রযুক্তির মাধ্যমে ১৮ বছরের নিচের কিশোরী উদ্যোক্তাদেরও এই অনুদান দেয়ার ঘোষণা দেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি প্রধান অতিথির পরামর্শ অনুযায়ী প্রত্যেক সংসদীয় আসনে ২জন নারী উদ্যোক্তাকেও অনুদান প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন সমাজের নারীদের উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় সম্পৃক্ত করতে না পারলে দেশের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সম্ভব নয়। আইসিটি বিভাগের উদ্যোগে “হার পাওয়ার” প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। উক্ত প্রকল্পের আওতায় ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে চার বিভাগে ৫ মাসের প্রশিক্ষণ দিয়ে ২৫ হাজার স্মার্ট নারী উদ্যোক্তা তৈরি করা হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এন এম জিয়াউল আলম পিএএ, সিনিয়র সচিব, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, ই ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার এবং ফেইসবুক গ্রুপ উই এর প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি নাসিমা আক্তার নিশা। সবশেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আইডিয়া প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও যুগ্মসচিব মো: আলতাফ হোসেন। অনুষ্ঠানে ই-ক্যাব এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রাজিব আহমেদ কে বিশেষ সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।

শিল্পায়ন, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, দারিদ্র্যমোচন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে এসএমই তথা ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ভূমিকা ও অবদান আজ বিশ্বব্যাপী একটি স্বীকৃত বিষয়। এসএমই খাতে নারীর যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। স্টার্টআপদের পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান (এসএমই), উদ্যোক্তা, বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তাদের উৎসাহ প্রদান, উন্নয়ন, এবং তাদের ব্যবসায়কে ত্বরাণ্বিত করার নিমিত্ত অনুদান প্রদানের এই উদ্যোগ গ্রহণ করে আইডিয়া প্রকল্প।

এরই প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট প্ল্যাটফর্ম/অ্যাসোসিয়েশন থেকে প্রাপ্ত আবেদনসমূহ আইডিয়া প্রকল্প কর্তৃক গঠিত একটি কমিটির মাধ্যমে যাচাই-বাছাই শেষে ১০০০ উদ্যোক্তা নির্বাচন করা হয়। এই আয়োজনের মাধ্যমে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে নির্বাচিত ১০০০ জন নারী উদ্যোক্তাকে আইডিয়া প্রকল্প থেকে স্মার্ট নারী উদ্যোক্তা অনুদান হিসেবে মোট ৫ কোটি টাকা অনুদান প্রদান করা হয়।

উক্ত আয়োজনটি সফল করতে সহযোগী উদ্যোক্তা প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব), উইমেন এন্ড ই-কমার্স (উই), আনন্দমেলা, উইমেন অন্ট্রপ্রিনিউরস্ অব বাংলাদেশ (ওয়েব), এসএমই ফাউন্ডেশন, ব্র্যাক, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএসএস) এবং এটুআই এর একশপ।

*

*

আরও পড়ুন