‘কনটেন্ট রাইটিং পেশা হিসেবে বেশ সম্ভাবনাময়’

অনলাইনে বিভিন্ন ব্লগিং সাইট, ই-বুক, অ্যাফেলিয়েট বিষয়ক সাইটের জন্য প্রয়োজন হয় কনটেন্টের। বিশেষ করে বিদেশের বিভিন্ন পাঠকদের উপযোগী নানা ধরনের কনটেন্টের বেশ চাহিদা রয়েছে বিভিন্ন সাইটের জন্য। এসব সাইটে কনটেন্ট রাইটার হিসেবে কাজ করার রয়েছে নানা সুযোগ। দীর্ঘদিন ধরেই কনটেন্ট রাইটিং নিয়ে কাজ করছেন ফ্রিল্যান্স কনটেন্ট রাইটার এবং রাইটার্স-অন-দ্য-ব্লক’র প্রতিষ্ঠাতা অজান্তা রেজওয়ানা মির্জা। নিজের উদ্যোগ, কনটেন্ট রাইটিং এবং নানা মাধ্যমে লেখালেখির সুযোগসহ নানা বিষয়ে কথা বলেছেন টেকশহর ডটকমের নিয়মিত আয়োজন ‘টেক ভেঞ্চারস টক’-এ।

টেকশহর: আপনার শুরুটা কিভাবে?

অজান্তা রেজওয়ানা মির্জা: আমার শুরুটা হয় ২০১৩ সালে। সে সময়ে ফ্রিল্যান্সিং বিষয়টা তেমন জনপ্রিয় ছিল না। আমি নিজে তখন চাকুরী করতাম। চাকুরী ছেড়ে দিয়ে কিছুদিন বাসায় থাকাকালীন সময়েই আমার পরিচিত একজন আমাকে প্রথম ফ্রিল্যান্সিংয়ের বিষয়টি জানায়। তখন জানতে পারি এমন একটা ওয়েবসাইটের কথা যেখানে লেখালেখির কাজ করা যায়। আমার আগের চাকুরীও ছিল লেখালেখি সংশ্লিষ্ট। আর ব্যক্তিগত ভাবে আমি নিজেও লেখালেখি করতে খুব পছন্দ করি। সে ইচ্ছে আর আগ্রহ থেকেই আমি ফ্রিল্যান্সিং ওডেস্ক (বর্তমানে আপওয়ার্ক) সাইটে নিবন্ধন করে কাজ শুরু করি। সেই থেকে শুরুটা তারপর নানা ধরনের সাইটের জন্য যেমন লিখেছি তেমনি বিভিন্ন ই-বুকও লিখেছি। এখনও কাজ করছি তবে আগের মতো আর ফ্রিল্যান্সিং সেই সাইটের মাধ্যমে না করে ফিক্সড কয়েকজন ক্লায়েন্টের জন্য লিখছি।

Techshohor Youtube

টেকশহর: কনটেন্টের নানা খাত রয়েছে। আপনি মূলত কোন বিষয়ে বা কোন খাতে কাজ করেন?

অজান্তা রেজওয়ানা মির্জা: আমাদের দেশে এখনো অনেক প্রতিষ্ঠানের ভালো কনটেন্টসহ একটি ওয়েবসাইট নেই। এজন্য দেখা যায় আমরা অনেকেরই নানা ধরনের প্রয়োজনীয় তথ্য পাই না। কিন্তু দেশের বাইরে দেখা যায় যে কোন প্রতিষ্ঠানেরই সব ধরনের তথ্যাদি নিয়ে রয়েছে ওয়েবসাইট যেখানে সব ধরনের তথ্য পাওয়া যায়। এসব ওয়েবসাইটে যা আছে সবই হচ্ছে কনটেন্ট। আমি এ ধরনের ওয়েবসাইটের জন্য প্রয়োজনীয় সব কনটেন্ট নিয়েই কাজ করি। এছাড়াও আমি ই-বুক লিখি। দেশের বাইরে নানা বিষয় নিয়ে রয়েছে অসংখ্য ই-বুক। আর ই-বুকের বিষয়ও নানান রকমের। আমি এ ধরনের ই-বুক লিখি। এছাড়াও ই-কমার্স সাইটের পণ্যের জন্যও কনটেন্টের প্রয়োজন হয় যা পড়ে আগ্রহীরা পণ্য কিনে থাকেন। যদিও আমাদের দেশে এখনো সেভাবে বিষয়টি গুরুত্ব পায়নি তবে ধীরে ধীরে বিষয়টি বাড়ছে।  

টেকশহর: কনটেন্ট রাইটিং বিষয়টিকে পেশা হিসেবে নেয়া যায়?

অজান্তা রেজওয়ানা মির্জা: অবশ্যই নেয়া যায়। শুধু যে দেশের বাইরের জন্যই কাজ করতে হবে বিষয়টা কিন্তু তা নয়। দেশের মধ্যেই এখন অনেক ওয়েবসাইট, ব্লগ বা ই-কমার্স সাইটের জন্যও কনটেন্টের চাহিদা বাড়ছে। বিষয়টি এমন নয় যে, শুধু ইংরেজি ভাষায় ভালো কনটেন্ট লেখা জানতে হবে। বরং বাংলায়ও ভালো লিখতে পারলেও তারও বেশ চাহিদা আছে। আর এ কাজটি ঘরে বসে চাইলেই কিন্তু করা যায়। এতে করে কেউ চাইলে ফ্রিল্যান্সার হিসেবেও কিন্তু লেখার সুযোগ থাকছে। আর এটি পেশা হিসেবে কিন্তু বেশ ভালো এবং এর চাহিদা বাড়ছেই। কারণ, কনটেন্ট ইজ কিং। কনটেন্টের কারণেই কিন্তু পাঠক সাইটে আসেন।   

টেকশহর: এ কাজটিতে যুক্ত হতে বা শুরু করতে চাইলে কি করতে হবে?

অজান্তা রেজওয়ানা মির্জা: এ কাজে যুক্ত হতে চাইলে শুরুতে ভালো লিখতে জানতে হবে। অনেকের মনে হতে পারে ফেসবুক কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু লিখলে সেখানে বেশ সাড়া পাওয়া যায় তাহলেই বুঝি ভালো লেখক হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করা যায়। বিষয়টি একেবারে তেমন না। আমরা যখন কনটেন্ট রাইটার হিসেবে লিখি বা কাজ করি তখন কিন্তু আমরা কারো ব্যবসাকে সাহায্য করছি। কারণ, আমার লেখা পড়েই কিন্তু উক্ত ব্যবসাটি এগিয়ে যেতে পারে। শুধুমাত্র আমার পরিচিতজনরাই আমার লেখা পড়ে প্রশংসা করলে বা খুবই ভালো বললেই হবে না। আমার লেখা যাতে পাঠকরা পড়ে সে ব্যবসা সম্পর্কে জানতে পারে এবং উক্ত বিষয় বা পণ্য নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয় সে ধরনের লেখা লিখতে হবে এবং লিখতে জানতে হবে। এ কাজে ভালো করতে হলে প্রচুর পড়তে হবে। পাশাপাশি কার জন্য লেখা হচ্ছে, তাদের কেমন লেখা পছন্দ, তাদের কোন কোন বিষয়গুলো দিলে তথ্য যেমন পাবে আবার পড়তে আগ্রহ বোধ করবে সে বিষয়গুলোকে নজর দিতে হবে।

টেকশহর: যারা আগ্রহী কনটেন্ট রাইটিংয়ে তাদের কাজের ধারাবাহিকতা কেমন দেখছেন?

অজান্তা রেজওয়ানা মির্জা: নিজের কনটেন্ট রাইটিংয়ের পাশাপাশি আমি অনেক জায়গায় এ বিষয়ে কর্মশালা নিয়েছি, কথা বলেছি। অনেকের আগ্রহও আছে আবার ভালোও লিখছেন। তবে বিষয়টি কিন্তু বেশ মনযোগের বিষয়। শুধুমাত্র ল্যাপটপ/কম্পিউটার থাকলেই ভালো লেখা যাবে বিষয়টি তা নয়। তবে যাদের আগ্রহ আছে তারা লেগে থাকলে ভালো করা সম্ভব।  

[সাক্ষাৎকার নিয়েছেন টেকশহর ডট কমের স্পেশাল করসপনডেন্ট নুরুন্নবী চৌধুরী]

*

*

আরও পড়ুন