![]() |
টেকশহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : সিম রিপ্লেসমেন্ট নিয়ে সবাই কম বেশি ঝামেলায় থাকেন। মোটের উপরে আমাদের অনেকেরই জানা নেই আসলে সিম কিভাবে রিপ্লেস করতে হয় বা সিম রিপ্লেসমেন্ট করার নিয়মগুলো কি কি? বিভিন্ন কারণেই আমাদের সিম রিপ্লেসমেন্টের প্রয়োজন হয়।
তবে সিম রিপ্লেসিং সম্পর্কে জানা না থাকায় অনেকেই নানা সমস্যায় পড়ে যান। তবে সিম রিপ্লেসমেন্টের মাধ্যমে পাওয়া সম্ভব কিছু দুর্দান্ত সুবিধা। যেমন- শুধুমাত্র সিম পরিবর্তনের মাধ্যমেই গ্রাহকের ইন্টারনেটের গতি আগের তুলনায় (যদি পুরোনো সংস্করণের সিম থাকে) দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাবে।
আগের চাইতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যের সাথে প্রিয় মানুষটির সঙ্গে কথা বলা থেকে শুরু করে পাওয়া যাবে অন্যান্য সুবিধা। আর কথা বলার সময় যেসব ভোগান্তি পোহাতে হতো যেমন নেটওয়ার্কিংয়ের অসুবিধা, ফোন কলের সময় নেটওয়ার্ক বার বার কেটে যাওয়া। বিশেষ করে যারা এখনো সেই পুরোনো সময়ের 2G এবং 3G সিম ব্যবহার করছেন তাদের নানা সমস্যায় পড়তে হয়।
আবার কেউ কেউ তো নতুন ফোন কিনলেও বাড়তি ঝামেলার কথা ভেবে সেই পুরনো সিমই ব্যবহার করেন। ফলে ফোনেও বারবার 4G সিম রিপ্লেসমেন্টের মেসেজ আসতে থাকে এবং অ্যালার্ট দিতে থাকে।
ফলশ্রুতিতে যা হবার তাই হয়! ম্যারাথনের গতিতে দৌড়ালেও গ্রাহকের সিম পুরোনো থাকায় যেমন সমস্যা হয় তেমনি নতুন অনেক সুবিধা পান না গ্রাহক। এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পড়ে ফেলুন এ লেখাটি আর করে সহজে করুন সিম রিপ্লেসমেন্ট।
সিম রিপ্লেসমেন্ট মূলত একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে আপনি আপনার বর্তমান সিম কার্ডকে আপডেট বা হালনাগাদ করে নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে রিনিউ করতে পারবেন। অর্থাৎ ধরুন আপনার আগে এনালগ ফোন ছিল আর বহু আগে কেনা একটা পরিচিত সিম রয়েছে। এখন আপনি নতুন ফোন কিনে দেখলেন যে আগের সিমটা আর ব্যবহার করা যাবে না। আর এই সমস্যার সমাধানই হচ্ছে সিম রিপ্লেসমেন্ট যেখানে আপনি পুরনো সিম বদলে একদম হুবহু একই মোবাইল নম্বরের আরেকটু আপডেটেড সিম কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন।
সিম রিপ্লেসমেন্টের রয়েছে বেশ কিছু সুবিধা এবং অসুবিধা। সুবিধাগুলোর মধ্যে রয়েছে:
সিম যদি নিজের নামে যদি নিবন্ধিত করা না থাকে, তাহলে সমস্যায় পড়তে হতে পারে সিম রিপ্লেসমেন্টের ক্ষেত্রে। কেননা বেশিরভাগ সিমই আজকাল বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধন করা হয়ে থাকে। ফলে গ্রাহকের নামে নিবন্ধিত না হলে বাড়তি খরচ তো আছেই তার সঙ্গে ওই ব্যক্তিকে গ্রাহকসেবা কেন্দ্রে (কাস্টমার কেয়ার) নিয়ে গিয়ে নিজের হাতের আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে পুনরায় সিমটিকে গ্রাহকের নামে ট্রান্সফার করতে হয়।
সিম রিপ্লেসমেন্ট পুরোটাই গ্রাহকের ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল। তবে যদি পুরনো সিমটি একেবারেই অকেজো হয়ে থাকে, তাহলে সিম রিপ্লেসমেন্ট করে নেওয়াই সবচেয়ে ভালো। তাছাড়া হারিয়ে যাওয়া বা চুরি হওয়া ফোনে ব্যবহৃত সিম পুনরুদ্ধার করতেও রিপ্লেসমেন্ট একটি অন্যতম উপায়।
সিম রিপ্লেসমেন্ট করার নিয়ম খুবই সাধারণ এবং অল্প কিছু টাকা খরচেই এটি করা সম্ভব। রিপ্লেসমেন্টের জন্যে লাগবে-
সিম রিপ্লেসমেন্ট করতে যা যা লাগে এখানেও সেসব জিনিসই লাগবে সিমের মালিকানা পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে। তবে এখানে উক্ত ব্যক্তির হাতের ছাপ দিয়ে সিমের একটি পিন কোড বের করতে হবে এবং কাস্টমার কেয়ারে থাকা কর্মীর মাধ্যমে সিমের পুরনো মালিকানা সম্পূর্ণভাবে বাতিল করতে হবে। পুনরায় নিজের নামে সিমটিকে নিবন্ধন এবং বায়োমেট্রিক করে নিতে হবে। সেক্ষেত্রে খরচ পরবে ২০০টাকা থেকে ২৫০ টাকা কিংবা কিছু কম বেশি হতে পারে।
এবার বিভিন্ন সিম অপারেটর যেমন গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক, টেলিটকের সিম রিপ্লেসমেন্টের খরচ, কোথায়, কিভাবে করতে হবে সে সম্পর্কেও জেনে নেওয়া যাক।
বাংলালিংক এর ক্ষেত্রেও সেই একই পদ্ধতি এবং একই কাগজপত্র নিয়ে কাজ করতে হবে। আর যদি জানতে চান বাংলালিংক সিম রিপ্লেসমেন্টে কত টাকা লাগবে। তবে বলে রাখা ভালো এরজন্যেও খরচ পড়বে ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা। আরও বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন MyBL App টিতে।
আপনি যদি গ্রামীণফোনের গ্রাহক হয়ে থাকেন তাহলে কি করবেন? অবশ্যই নিচে দেয়া নির্দেশনা গুলো মেনে কাজ করবেন।
গ্রামীণফোন সিম রিপ্লেসমেন্টে করতে ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা খরচ লাগবে। তবে জিপি সিম প্রায়ই প্রতিমাসেই একটি নির্দিষ্ট সময়ে ফ্রি’তে সিম পরিবর্তনের সেবা দিয়ে থাকে তাই আপনাকে এখানে বাড়তি খরচ নিয়েও ভাবতে হবে না।
টেলিটকের গ্রাহকদেরও সিম প্রতিস্থাপনের জন্যে যেতে হবে টেলিটকের কাস্টমার কেয়ার পয়েন্টে। সেখানে গিয়ে আপনার NID টেলিটকের গ্রাহকদেরও সিম প্রতিস্থাপনের জন্যে যেতে হবে টেলিটকের কাস্টমার কেয়ার পয়েন্টে। সেখানে গিয়ে গ্রাহকের NID এর ফটোকপিসহ আরও যাবতীয় তথ্য প্রদান করে সিমটি প্রতিস্থাপিত করতে হবে। আর এখানে সর্বমোট খরচ লাগবে ১৫০ টাকা। আরও তথ্য জানতে ভিজিট করুন টেলিটকের অফিশিয়াল পেইজটিতে : টেলিটক সিম রিপ্লেসমেন্ট। এখানে আপনি টেলিটকের সিম রিপ্লেসমেন্ট বিভিন্ন তথ্য সম্পর্কে ও জানতে পারবেন।
রবির মতো এয়ারটেলেও অপারেটর ডোর স্টেপ সার্ভিসের সেবাটি চালু আছে। চাইলে এখান থেকেও ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা খরচে সিম প্রতিস্থাপনের সেবাটি গ্রহণ করা যাবে। এছাড়াও নিকটস্থ কাস্টমার কেয়ার বা সিম বিক্রির দোকানেও একই ধরনের সেবা দেওয়া হয়ে থাকে। এয়ারটেলের সিম প্রতিস্থাপন সম্পর্কিত বিভিন্ন অফার সম্পর্কে তথ্য পেতে ভিজিট করতে পারেন তাদের এই ওয়েব এড্রেসটিতে : এয়ারটেল সিম রিপ্লেসমেন্ট। এখানে আপনার খুঁটিনাটি বিস্তারিত যা কিছু জানার সবকিছু সম্পর্কে একবারেই তথ্য পেয়ে যাবেন।
তবে এয়ারটেল সিমের আরও একটি বড় সুবিধা হচ্ছে এর মাধ্যমে আপনি আপনার 2G কিংবা 3G সিম দিয়েই 4G ব্যবহারকারীদের অফার ব্যবহার করে ইন্টারনেট প্যাকেজ উপভোগ করতে পারবেন খুব সহজেই। তাই আর দেরি না করে রিপ্লেস করে ফেলুন আপনার পুরনো সিম এবং উপভোগ করুন আগের চাইতেও আরও ভালো এবং দুর্বার গতিসম্পন্ন ইন্টারনেট স্পীড।
সিম রিপ্লেসমেন্ট কাজটি যতটা কঠিন বা ঝামেলার বলে মনে হয় আসলে কিন্তু এটি খুব একটা ঝামেলার নয়। বরং রিপ্লেসমেন্ট নিয়ে আপনি যত বেশি দেরি করবেন ততই বেশি ঝামেলায় জড়িয়ে যাবেন। যদি আপনি মনে করেন আপনার সিমের রিপ্লেসমেন্ট জরুরি, দ্রুতই করে ফেলুন।