শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরে শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে কাজ করতে হবে

টেকশহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরে শিক্ষাবিদ, প্রযুক্তিবিদ, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করতে হবে। শিক্ষার ডিজিটাল কনটেন্ট নির্মাতারা এনসিটিবির সিলেবাস ও পাঠ্য সূচির বিষয়গুলো কেবল ডিজিটাইজ করবে। তবে প্রয়োজনে পাঠ্যসূচির সহায়ক বিষয়ও ডিজিটাইজ করতে হবে।

তিনি সম্প্রতি ডিজিটাল কনটেন্টে পরিচালিত প্রকল্পের অধীন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ ব্যাপারে অভাবনীয় সাড়া পাওয়া গেছে। সারা দেশ থেকে প্রকল্পটি সম্প্রসারণের জন্য অনুরোধ আসছে।

মন্ত্রী বৃহস্পতিবার নেত্রকোণা জেলা সদরে পিটিআই মিলনায়তনে সুবিধা বঞ্চিত প্রত্যন্ত অঞ্চলের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা ডিজিটাল করণ প্রকল্পের অধীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

Techshohor Youtube

সুবিধা বঞ্চিত প্রত্যন্ত ও দুর্গম অঞ্চলের ৬৫০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরে বিটিআরসি’র এসওএফ (সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল) তহবিলের অর্থায়নে টেলিযোগাযোগ অধিদফতর এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

তিনি বলেন, ডিজিটাল শিক্ষার মানে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন কিংবা শিক্ষার্থীদের জন্য টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ধারণ করা ক্লাশ নয়। শিক্ষার ডিজিটাল কনটেন্ট হচ্ছে ডিজিটাল যন্ত্রে পাঠদানের জন্য প্রচলিত পাঠ্য সূচির মানসম্মত ইন্টার একটিভিটি, ছবি, অডিও, ভিডিও, এ্যানিমেসন, টেক্সট ও অন্যান্য মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট দিয়ে প্রোগ্রামিং করা সফটওয়্যার দিয়ে ডিজিটাল ডিভাইসে শিক্ষার প্রবর্তন করা ।

উন্নত বিশ্বে বহু আগে থেকেই এই পদ্ধতি অবলম্বনে শিক্ষা দেয়া হয়ে আসছে। বাংলাদেশেও আনন্দ মাল্টিমিডিয়ার উদ্যোগে ১৯৯৯ সাল থেকে সীমিত পরিসরে ৩২টি মাল্টিমিডিয়া স্কুলে এই পদ্ধতিতে শিক্ষা প্রদান করে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের অভিযাত্রা শুরু হয়।

টেলিযোগাযোগ অধিদফতরের মহাপরিচালক আবদুল মোকাদ্দেম’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডিজিটাল কনটেন্ট বিষয়ক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিজয় ডিজিটাল –এর সিইও জেসমিন জুই। অনুষ্ঠানে বিটিআরসি‘র মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসিম পারভেজ, নেত্রকোণা পিটিআিই‘র অধ্যক্ষ জাহানারা খাতুন, নেত্রকোণার অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক মনির হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়েজ আহমেদ ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ বক্তৃতা করেন।

মূল প্রবন্ধে জেসমিন জুই বলেন, শিক্ষা উপকরণ অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়- শিক্ষা উপকরণে ভুল বলে কোন কিছুই থাকতে পারে না। তিনি শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরে মানসম্মত ডিজিটাল কনটেন্টের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, একটি ভালো কনটেন্ট শিশুদের প্রতিভা বিকাশে ফলপ্রসূ অবদান রাখছে।

তিনি শিক্ষার ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরির বিভিন্ন কারিগরি দিক তুলে ধরে তার এ সেক্টরে বিগত ১৩ বছরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, কোয়ালিটির সাথে আপোষ করতে পারি না বলেই দীর্ঘ সময় কনটেন্ট তৈরিতে ব্যয় করতে হয়েছে। প্রতিনিয়তই কনটেন্ট আপডেট করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে , পাঠ্যসূচির সাথে সামঞ্জস্য রেখে ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি একটি চলমান প্রক্রিয়া।

অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকরা তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তারা শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের এই কর্মসূচিকে একটি অভাবনীয় উদ্যোগ হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং প্রকল্পটি কেবল ৬৫০টি বিদ্যালয়ে সীমাবদ্ধ না রেখে দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত সম্প্রসারণে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর সহায়তা প্রত্যাশা করেন। মন্ত্রী তাদেরকে এই বিষয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন। পরে মন্ত্রী প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে সনদ বিতরণ করেন।

*

*

আরও পড়ুন