![]() |
টেকশহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : শ্রেণিকক্ষে ডিজিটাল কনটেন্টে পাঠ গ্রহণকারি ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষের বাইরে বাড়িতে বসে ডিজিটাল কনটেন্টে পাঠ গ্রহণের সুবিধা চায়। এ জন্য তাদের প্রত্যেকের জন্য ল্যাপটপ দিতে হবে। এ দাবি মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার বাঘাইকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বুধবার ডিজিটাল কনটেন্টে ডিজিটাল ক্লাশ রুম পরিদর্শন করতে গেলে শিক্ষার্থীরা মন্ত্রীর কাছে তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে এ দাবি জানায়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা এ সফরকালে উপস্থিত ছিলেন। তারা সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়কে এই কর্মসূচির আওতায় আনার দাবি জানান।
সুবিধা বঞ্চিত প্রত্যন্ত ও দুর্গম অঞ্চলের ৬৫০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরে বিটিআরসি‘র এসওএফ তহবিলের অর্থায়নে টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তর এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। এই প্রকল্পের আওতায় মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় বাঘাইকান্দি এবং জাজিরা কৃষ্ণ নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ডিজিটাল কনটেন্টে পাঠ দান শুরু হয়। মন্ত্রী দুটি প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল কনটেন্টে পাঠ দান সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট–শিক্ষার্থীদের অনুভূতি জানার জন্য বিদ্যালয় দুটির ডিজিটাল ক্লাশ রুমে ডিজিটাল কনটেন্টের মাধ্যমে পাঠদান পর্যবেক্ষণ করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের জন্য ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরির উদ্যোগ বাস্তবায়নে তার ১৩ বছরের অক্লান্ত লড়াইয়ের সহযোদ্ধা বিজয় ডিজিটাল-এর সিইও জেসমিন জুইসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি মন্ত্রী গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। শিশুদেরকে প্রোগ্রামার বানানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন- আমরা প্রথমবারের মতো স্কুলে শিশুদেরকে পোগ্রামিং শেখানোর জন্য একটি সফটওয়্যারও দিচ্ছি। এটা সহজেই তাদের পক্ষে আয়ত্ত করা সম্ভব।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি আমাদের এগিয়ে যাওয়ার চালিকা শক্তি। মন্ত্রী ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে তার ৩৫ বছরের নিরন্তর পথচলা এবং শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরে দীর্ঘ তের বছরের প্রচেষ্টা তুলে ধরে বলেন পৃথিবীর কোন উন্নত দেশ আজ আর কাগজ নির্ভর লেখাপড়ার যুগে নেই। আমি বিশ্বাস করি বই থেকে যে লেখাপড়া করার সুযোগটা যদি একজন শিক্ষার্থী কাগজের বইয়ের মৃত হরফ আর মৃত ছবির বদলে একটা জীবন্ত ছবি দেখতে পায়, একটি চলমান ছবি দেখতে পায়, অক্ষর যদি কথা বলে, তার সাথে যদি ইন্টারেকশন করতে পারে সেটা অসাধারণ একটি কাজ হয়ে যেতে পারে।
মন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীরা দাবি করছে তারা শ্রেণি কক্ষে টেলিভিশন দিয়ে পড়ার পাশাপাশি তারা যাতে ঘরে বসে ডিজিটাল কনটেন্টে পড়তে পারে সেজন্য তাদের হাতে যেন ডিজিটাল যন্ত্র দেই। এটিও আমাদের পরিকল্পনা মধ্যে আছে। এরই মাঝে আমরা ৮২টি স্কুলে ট্যাবও দিচ্ছি। এতে তারা প্রোগ্রামিংও শিখতে পারবে ।
মোস্তফা জব্বার বলেন, শিশুরা খেলার ছলে আনন্দের সাথে তাদের এক বছরের সিলেবাস ২ মাসের মধ্যে শেষ করতে সক্ষম । নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলায় তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত একটি ডিজিটাল স্কুলের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে তিনি বলেন, শিশুদেরকে ভবিষ্যতের জন্য তৈরি করতেই হবে। ডিজিটাল শ্রেণি কক্ষে ডিজিটাল কনটেন্টে পাঠদান কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের প্রকল্পটি বাস্তবায়নের শেষ হবার পথে। ডিজিটাল কনটেন্টের মাধ্যমে প্রাথমিক পাইলটিং স্তরের শিক্ষার্থীদের পাঠদান বিষয়ে শিক্ষক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রাথমিক স্তর থেকে শিক্ষার ডিজিটাল রুপান্তরের কার্যক্রম শেষ স্তুরে রয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিজয় ডিজিটালের প্রধান নির্বাহি জেসমিন জুই বলেন, ১৩ বছর ধরে দিনে রাতে শ্রম দিয়ে আজ যখন শিশুদের মুখে হাসি দেখছি তখন সকল কষ্ট আনন্দে পরিণত হয়েছে। শিশুদের জন্য মান সম্মত একটি ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরির সে চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করা অনেক কঠিন কাজ। তারপরেও আমরা থেমে থাকিনি। তিনি ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরিতে মন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টার বিবরণ তুলে ধরেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন এই প্রকল্পের বাইরে তার অধীন যে সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া ডিভাইস আছে সেগুলোর জন্য বিজয় ডিজিটাল উপাত্ত পাওয়ার জন্য অনুরোধ ব্যক্ত করেন। মন্ত্রী এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের আশ্বাস ব্যক্ত করেন। ডিজিটাল কনটেন্টের মাধ্যমে পাঠদানে সংশ্লিষ্টদের সুবিধা এবং অসুবিধা সরেজমিন পর্যবেক্ষণ করাই এই পরিদর্শনের লক্ষ্য।
অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুল ওহাব, বিজয় ডিজিটাল এর সিইও জেসমিন জুই, মুন্সীগঞ্জের এডিসি শিক্ষা মো: কামরুল ইসলাম খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিনহাজুল ইসলাম , সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসেন মো: আল জুনায়েদ, উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবেৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
পরে সন্ধ্যায় জেলার সিরাজদি খান উপজেলা ডাকঘর ও বিকারীবাজার সাব পোস্ট অফিস ভবনের পুণনির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেন।
সুত্র – প্রেস বিজ্ঞপ্তি