টুইটারের ৩৩ শতাংশ ‘ভুয়া অ্যাকাউন্ট’ নিয়ে ইলন মাস্কের মামলা, তবে এই দাবি নিয়ে সংশয়!

টেকশহর কনটেন্ট কাউন্সিলর: টুইটারের সঙ্গে বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্কের বিরোধ আরো বাড়ছে। এবার টুইটারের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করেছেন ইলন মাস্ক। তবে এই মামলায় টুইটারে বিদ্যমান ভুয়া অ্যাকউন্ট বের করতে ব্যবহৃত বটোমিটার পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সংশ্লিষ্ট গবেষকরা।

স্প্যাম ও ফেক অ্যাকাউন্ট ট্র্যাক করতে ব্যবহৃত অনলাইন টুলটি বটোমিটার নামে পরিচিত। টুইটারের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলায় নিজেদের পক্ষে তথ্য যোগারে এ টুলটি ব্যবহার করেছিলেন মাস্ক। এই অনলাইন টুলটি ব্যবহার করে মাস্কের টিম জানিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মটির ‘দৃশ্যমান অ্যাকাউন্টগুলোর’ ৩৩ শতাংশই ‘ভুয়া অথবা স্প্যাম অ্যাকাউন্ট।’

কিন্তু খোদ বটোমিটারের উদ্ভাবক এবং রক্ষনাবেক্ষনকারী কাইচেং ইয়াং বলেছেন ‘এই সংখ্যা কোন অর্থ বহন করে না।’ মাস্কের দল ভুয়া অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বের করতে যে মেথডলজি ব্যবহার করেছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বিবিসিকে জানিয়েছেন এই টুলটি ব্যবহার করতে তাকে কিছু জানানো হয়নি।

Techshohor Youtube

চলতি বছরই মোট ৪৪ বিলিয়ন ডলারে টুইটার ক্রয়ে কোম্পানিটির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন মাস্ক। কিন্তু সম্প্রতি চুক্তিটি থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছিলেন তিনি। এরপর থেকেই টুইটারের সঙ্গে মাস্কের বিবাদ চলছে। অক্টোবরে ডেলাওয়্যারে এ নিয়ে ট্ইুটার মামলা করবে বলে জানা গিয়েছে। মাস্কের এটি কিনতে হবে কিনা তা নিয়ে বিচারক রায় দিতে পারেন।

গত জুলাইয়ে মাস্ক বলেছিলেন তার আর কোম্পানিটি ক্রয়ের কোন ইচ্ছা নেই। কারন তিনি বোঝতে পারছেন না প্লাটফর্মটিতে মানুষের সংখ্যা ঠিক কতো। তখন থেকেই বিশ্বের সবচেয়ে এই ধনী ব্যক্তি ক্রমাগতভাবে দাবি করে আসছেন টুইটারের দেয়া তথ্যের চেয়ে প্লাটফর্মটিতে অনেক বেশি ভুয়া অ্যাকাউন্ট রয়েছে।

মাস্কের দায়ের করা পাল্টা মামলার বিষয়টি গত ৫ আগস্ট জনসম্মুখে প্রকাশ হয়। মামলায় মাস্ক দাবি করেন টুইটারের এক তৃতীয়াংশ অ্যাকাউন্টই ভুয়া। মাস্কের টিমের হিসাবে দৈনিক সক্রিয় ব্যবহারকারীদের মধ্যে সর্বনিম্ন ১০ শতাংশই বট। অন্যদিকে টুইটার বলছে তাদের হিসাবে দৈনিক সক্রিয় ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৫ শতাংশ বট।

এদিকে কোন অ্যাকাউন্ট ভুয়া অথবা স্প্যাম কিনা তা বোঝতে বটোমিটারে বিভিন্ন ধরনের ইন্ডিকেটর ব্যবহার করা হয়। যেমন কখন ও কতোবার একটি অ্যাকাউন্ট থেকে টুইট করা হচ্ছে এবং পোস্টের কনটেন্ট পাঁচটির মধ্যে একটি বট ‘স্কোর’ তৈরি করে। কোন টুইটার অ্যাকউন্ট জিরো স্কোর পেলে তা ভুয়া হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে গবেষকরা বলছেন একটি অ্যাকাউন্ট বট কিনা তা বোঝার জন্য টুলটি নিশ্চিত উত্তর দিতে পারে না।

এ প্রসঙ্গে ইয়াং বলেছেন, বটের ব্যপকতা বোঝতে স্কোর কর্তনের জন্য একটি থ্রেশহোল্ড প্রয়োজন। যদি এই থ্রেশহোল্ডকে তিন থেকে দুই এ পরিবর্তন করা হয় তাহলে বটের সংখ্যা বেশি এবং মানুষের সংখ্যা কম পাওয়া যাবে। ফলে প্লাটফর্মে বটের সংখ্যা কতো তা বের করতে এই থ্রেশহোল্ড বাছাই প্রক্রিয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

তিনি আরো বলেছেন, মাস্কের দায়ের করা পাল্টা মামলায় ব্যাখ্যা দেয়া হয় নি যে ৩৩ শতাংশ ভুয়া অ্যাকাউন্ট বের করতে কোন থ্রেশহোল্ড ব্যবহার করা হয়েছে। মামলায় কোন কিছু পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে না। এই সংখ্যা আমার কাছে কোন অর্থ বহন করে না।

বিবিসি/আরএপি

*

*

আরও পড়ুন