![]() |
বাংলাদেশে নানা ধরনের পণ্য নিয়ে ই-কমার্স সার্ভিস ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষদের প্রতিদিনের কেনাকাটায় অবদান রেখে চলছে। প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় নানা পণ্য, খাবার থেকে শুরু করি নিত্য দৈনিন্দিনের জিনিসও এখন অনলাইন থেকে কেনা যায়। ভিন্ন এবং নিরাপদ খাবারের বিষয়টিকে নিয়ে অনেকদিন ধরেই কাজ করছেন অনেক তরুণ। বিশেষ করে নিরাপদ খাবার গ্রাহকদের হাতে পৌঁছানো ও এ বিষয়গুলোতে সচেতনতা নিয়ে কাজ করছেন প্রোটিন মার্কেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শফিউল আলম। নিজের উদ্যোগ, নিরাপদ খাবার এবং গ্রাহকদের জন্য নেয়া বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন টেকশহর ডটকমের নিয়মিত আয়োজন ‘টেক ভেঞ্চারস টক’-এ।
টেকশহর: নানা বিষয়ের মধ্যে আপনি প্রোটিন নিয়ে কেন কাজ শুরু করলেন?
মো. শফিউল আলম: প্রোটিন মার্কেট কাজ করে মূলত প্রোটিন জাতীয় খাবার নিয়ে। যেসব খাবারে প্রোটিন আছে আমরা সেসব খাবার নিয়েই কাজ করি। আমরা দেখেছি প্রোটিন যুক্ত খাবার নিয়ে মানুষের নানা ধরনের চিন্তা আছে। কোনটা খাবেন কিংবা সেটার মানই বা কেমন সেসব নিয়েও সাধারণ মানুষেরা চিন্তিত থাকেন। আমরা চিন্তা করলাম নিরাপদ প্রোটিন খাবার বিষয়ে সচেতনতা এবং ভালো প্রোটিন খাবার সকল গ্রাহকদের কাছে পৌঁছানো যায় সে ভাবেই শুরুটা।
টেকশহর: আপনারা গ্রাহকদের মূলত কি দিচ্ছেন?
মো. শফিউল আলম: প্রোটিন বিষয়টা নিয়ে আসলে সচেতনতা কম। অনেকেই এর পুরো বিষয়গুলোকে নজরদারিতে আনেন না। বাজার থেকে মুরগি কেনা বা মাছ কেনার সময় কিন্তু তেমন সমস্যা হয় না, হয় যখন এটি বাজারজাতকরণ প্রসেসে যায়। যেমন আমরা দেখেছি ব্রয়লার মুরগি সাধারণত ৪৫ দিনে খাবার উপযোগী হচ্ছে। যদিও সাধারণ পদ্ধতিতে মুরগি এ সময়ের মধ্যে খাওয়ার উপযোগী হয় না। তবে এ পদ্ধতিটি নিয়ে কিন্তু নানা কাজ হওয়ার পর এ সময়ের মধ্যে কিভাবে মুরগি খাওয়ার উপযোগী হয় সেটি একটা নিয়মের মধ্যে চলে আসে। সেটা আমরা কিন্তু মেনেও নিয়েছি। কিন্তু ধীরে ধীরে দেখা গেল, অনেকেই ভাবতে শুরু করেছেন, যে মুরগি ৪৫ দিনে খাওয়ার উপযোগী হয় সেটাকে যদি ৪০ দিনে বিক্রির উপযোগী করে ফেলা যায় তাহলে ৫ দিনের খাবার যেমন কম লাগে তেমনি বিক্রিও দ্রুত হয়। যদিও এ কাজে বড় ক্ষতির স্বীকার হন গ্রাহক। কারণ, আমরা ৫ দিন কমে মুরগিটি বাজারজাত করায় আমরা হরমন জাতীয় কিছু ব্যবহার করি। এ চিন্তাগুলোকে মাথায় রেখেই প্রোটিন মার্কেট কাজ করছে। আমরা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে কিভাবে প্রোটিন খাবারগুলো গ্রাহকদের কাছে দিতে পারছি সেটি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের পণ্য যে সম্পূর্ণ নিরাপদ সেটিই আমরা গ্রাহকদের নিশ্চিত করি।
টেকশহর: আপনি প্রায় ৭ বছর ধরে ই-কমার্স খাতে কাজ করছেন। এ সময়ের মধ্যে কেমন দেখছেন এ খাতকে?
মো. শফিউল আলম: শুরুর দিকের কথা বিবেচনায় এখন ই-কমার্স এখন অনেক ডেভলপড। মানুষের যেমন চাহিদা মোতাবেক পণ্য অনলাইনে কেনার এবং ঘরে বসে পাওয়ার আগ্রহ বেড়েছে। করোনাকালীন সময়ে এ চাহিদার বিষয়টি আমরা আরো বেশি দেখেছি। শুরুর দিকে সুপারমার্কেটের সঙ্গে অনেকটাই প্রতিদ্বন্ধী হিসেবে তেমন একটা সুবিধা করতে পারেনি ই-কমার্স। বিশেষ করে খাবার সংশ্লিষ্ট ই-কমার্স নিয়ে। তবে ধীরে ধীরে সে বিষয়ের পরিবর্তন এসেছে। এখন মানুষ ই-কমার্সের উপর ভরসা করে এবং খাবার থেকে শুরু করে নানা পণ্য কেনে। আস্থার জায়গাটা বাড়ছে।
টেকশহর: আপনি যেসব পণ্য নিয়ে কাজ করেন সেগুলোকে বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা নেন। বিশেষ করে উন্নত এবং নিরাপদ প্যাকিং পদ্ধতি নিয়ে কাজ করছেন। বিষয়টি নিয়ে বলবেন?
মো. শফিউল আলম: এ কাজটি আমরা শুরু থেকে করেছি খাবারের নিরাপত্তার কথা ভেবে। যেমন: মাছ একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় না থাকলে নষ্ট হয়ে যায়। মাছ বাতাসের সংস্পর্শে আসার পর থেকেই নানা ধরনের ব্যাকটোরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয়ে দেখা যায় নষ্ট হওয়ার আশংকায় থাকে। আমরা সে জায়গাটাতে কাজ করেছি। আমরা আমাদের পণ্য বিশেষ করে মাছ একটি নির্দিষ্ট টেম্পারেচারে বায়ুনিরোধক পদ্ধতিতে বিশেষ প্যাকিং করি যাতে করে আমাদের গ্রাহক আরো নিরাপদ পণ্যটি হাতে পেতে পারেন।
টেকশহর: ই-কমার্স কিংবা তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সংগঠনগুলোর কার্যক্রম কেমন দেখছেন? উদ্যোক্তাদের এ সংগঠণগুলো কি ধরনের সহায়তা করতে পারে বলে মনে করেন?
মো. শফিউল আলম: শুরুতে একটা বিষয় চিন্তা করা দরকার। আমার উদ্যোগে আসলে আমার যে ধরনের সহায়তা দরকার সেটা অন্য কেউ করে দেবে এমন চিন্তা করে উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে যাওয়া মুশকিল। এছাড়াও আমার মনে হয়, ট্রেড বডিগুলোকে নানা জায়গায় কাজ করতে হয়। ধীরে ধীরে এ বডিগুলো প্রফেশনাল হচ্ছে এবং আশা করছি আরো ভালো হবে।
[সাক্ষাৎকার নিয়েছেন টেকশহর ডট কমের স্পেশাল করসপনডেন্ট নুরুন্নবী চৌধুরী]