তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে বাংলাদেশের সহযোগিতা চায় ফিলিপাইন

টেকশহর কনটেন্ট কাউন্সিলর: ফিলিপাইন সরকার তাদের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে বাংলাদেশের সহযোগিতা চেয়েছে। এটুআই কর্তৃক রাজধানীর আগারগাঁও-এ অবস্থিত আইসিটি টাওয়ারের এটুআই কার্যালয়ে আয়োজিত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক এর সাথে এক মতবিনিময় সভায় এই আগ্রহ প্রকাশ করেন বাংসামারো মুসলিম অধ্যুষিত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল মিন্দানাও এর বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপমন্ত্রী সুকার্ণ আবাস।

এসময় ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিপাইনের মাননীয় রাষ্ট্রদূত অ্যালান এল. ডেনিগা, এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর, ইউএনডিপি বাংলাদেশ-এর সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি সরদার এম আসাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক বলেন, বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিশেষ করে সরকারি-বেসরকারি, স্টার্টআপ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি এবং ই-কমার্স খাতে বিভিন্ন উদ্যোগ সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। গত ১৩ বছরে এটুআই কর্তৃক অনেকগুলো উদ্যোগ সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। বৈশ্বিক উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে এটুআই উদ্ভাবিত ডিজিটাল সেবাগুলো অনেক অবদান রাখছে যার অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান আমরা ফিলিপাইনের সাথে বিনিময় করতে পারি। সরকারি-বেসরকারি ও একাডেমিয়া খাতের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে নাগরিকদের জীবন আরও সহজতর করতে বিভিন্ন সমস্যার উদ্ভাবনী সমাধান প্রয়োগে বাংলাদেশের অর্জিত জ্ঞান বিনিময়ের মাধ্যমে ফিলিপাইনকে সহযোগিতা করতে পারে। এ লক্ষ্যে শুরুতে আমরা বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে বিটুবি ভিত্তিতে দু’দেশের মধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে পারি। 

Techshohor Youtube

বাংসামারো মুসলিম অধ্যুষিত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল মিন্দানাও এর বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী সুকার্ণ আবাস বলেন, পরিবহন, যোগাযোগ, ইন্টারনেট সংযোগ এবং নাগরিক সেবা প্রদানে আমরা বেশকিছু প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করছি। এ লক্ষ্যে বাংসামারো সরকার দেশটির তথ্য-প্রযুক্তি, ই-কমার্স এবং অন্যান্য খাতের উন্নয়নে বাংলাদেশের সাথে যৌথভাবে কাজ করতে আগ্রহী। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের উভয় দেশের মধ্যে অনেকগুলো মিল রয়েছে। বাংলাদেশে সফলভাবে বাস্তবায়িত বিভিন্ন উদ্ভাবনী সমাধান ও উদ্যোগ বাংসামারোতেও বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করতে পারি। আমি মনে করি, আমাদের এই লার্নিং ভিজিট সামনের দিনগুলোতে এটুআই এবং বাংলাদেশের আইসিটি খাতের সাথে জড়িত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে ফিলিপাইনের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি খাতের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে কাজ করার সুযোগ-সম্ভাবনা তৈরি হবে। 

ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত অ্যালান এল. ডেনিগা বলেন, সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ গত ৫০ বছরে একটি সফল রাষ্ট্র হিসেবে তাদের সক্ষমতার জানান দিয়েছে। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এবং ফিলিপাইনের অভিন্ন অভিজ্ঞতার অনেকগুলো জায়গা রয়েছে। এরমধ্যে বাংলাদেশ বেশ কিছু ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে আছে। এরমধ্যে তথ্য-প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেবা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে বাংলাদেশ, যা শুধু ফিলিপাইন নয় সেইসাথে অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের সাথে তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারে। অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে সরকারি সেবাগুলো ফিলিপাইনের স্থানীয় পর্যায়ে বাস্তবায়ন এবং সরকারের মৌলিক সেবা ডিজিটাল করার মাধ্যমে নাগরিকদের কাছে সেবা পৌঁছে দেওয়ার অভিজ্ঞতা বিনিময়ে এগিয়ে আসায় বাংলাদেশ এবং ফিলিপাইনকে ধন্যবাদ জানান তিনি । 

এটুআই উদ্ভাবিত তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর বিভিন্ন উদ্ভাবনী সেবা সম্পর্কে জানতে বাংসামারোর বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী সুকার্ণ আবাসের নেতৃত্বে মিন্দানাও এবং ইউএনডিপি ফিলিপাইন-এর সদস্যদের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল চারদিনের (০৬-০৯ জুন, ২০২২) বাংলাদেশ সফরে এসেছে । সফরের প্রথম দিনে প্রতিনিধি দলের সামনে এটুআই উদ্ভাবিত মাইগভ, ডিজিটাল সেন্টার, এটুআই ইনোভেশন ল্যাব এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশ-এর ভিলেজ কোর্ট শীর্ষক ডিজিটাল সেবা সম্পর্কে বিস্তারিত উপস্থাপন করা হয়।

ফিলিপাইন-এর প্রতিনিধি দলের চারদিনের সফরে দ্বিতীয় দিনে ডাক অধিদপ্তরের বাস্তবায়িত ‘ডিজিটাল ডাকঘর’, এটুআই-এর ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম একশপ ও ন্যাশনাল ইন্টিলিজেন্স এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড এনটারপ্রেনিউরশিপ (নাইস) সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। প্রতিনিধি দলটি সফরের শেষ দুইদিনে ডিজিটাল সেন্টার, শিক্ষায় উদ্ভাবন, কাস্টমার ইনোভেশন অ্যান্ড অ্যাম্পাথি, শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব, জয়িতা ফাউন্ডেশন, জাতীয় তথ্য বাতায়ন, ই-নথি এবং অন্যান্য উদ্ভাবনী প্রকল্প পরিদর্শন করবেন।

মতবিনিময় সভায় বাংসামারোর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় (এমআইএলজি), বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, পিয়াগাপো পৌরসভা, মরোপ্রেনিউর, ইনকর্পোরেশন, ও ইউএনডিপি ফিলিপাইনের সদস্যবৃন্দ; ঢাকায় অবস্থিত ফিলিপাইন দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ, বেসিস, বাক্কো, ই-ক্যাব এবং উভয় দেশের বেসরকারি খাতের সম্মানিত প্রতিনিধিবৃন্দের পাশাপাশি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র – প্রেস বিজ্ঞপ্তি

*

*

আরও পড়ুন