আইএসপিএবির দাবির মুখে ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইন্টারনেট সংযোগের টেন্ডার’ পুনর্মূল্যায়নে

ক্লাসরুমে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা, ছবি : ইন্টারনেট

আল-আমীন দেওয়ান : ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদাতাদের সংগঠন আইএসপিএবির দাবির মুখে দেশের ৩৯ হাজার ৭০১ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইন্টারনেট সংযোগের টেন্ডার পুনর্মূল্যায়ন হচ্ছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সোমবার এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে।

আইএসপিএবির দাবি নিয়ে গত ১৭ এপ্রিল ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইন্টারনেট, সংযোগের কাজ চান ব্রডব্যান্ড সেবাদাতারা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলো টেকশহর ডটকম।

Techshohor Youtube

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘আইএসপিএবির দাখিল করা পিইডিপি৪-এর আওতায় ৩৯ হাজার ৭০১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইন্টারনেট সেবা প্রদানে আহবান করা আন্তর্জাতিক উম্মুক্ত দরপত্রটি বাতিল ও পুন:দরপত্র আহবানের আবেদনটি প্রেরণ করা হলো। উক্ত আবেদনের বিষয়ে পিপিএ ২০০৬ ও পিপিআর ২০০৮ অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।‘

আইএসপিএবি সভাপতি ইমদাদুল হক টেকশহর ডটকমকে বলেন, ‘আমরা আইন অনুযায়ী অধিকার চেয়েছিলাম। টেন্ডার আহবানের পরপরই টেন্ডারের বেশ কিছু শর্ত নিয়ে আপত্তি জানিয়ে তা সংশোধনে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে চিঠিও দিয়েছিলাম।’

ইমদাদুল হক বলেন, ‘পরবর্তীতে আমাদের কিছু না জানিয়েই টেন্ডার সম্পন্ন ও কার্যাদেশ দিয়ে দেয়া হয়। এরপর আমরা আবারও নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলা শুরু করি। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এর কাছে জানাই, পরিকল্পনা মন্ত্রী এম. এ. মান্নান এর সঙ্গেও সাক্ষাত করি। উদ্ভুত বিষয়ে প্রয়োজনে সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে আমরা সংবাদ সম্মেলনসহ বিভিন্ন কর্মসূচির প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম।’

‘এখন আমাদের আবেদনের বিষয়ে পিপিএ ২০০৬ ও পিপিআর ২০০৮ -এ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আশাকরি এতে ন্যায় পাবো আমরা।’ উল্লেখ করেন আইএসপিএবি সভাপতি।

আইএসপিএবি সাধারণ সম্পাদক নাজমুল করিম ভূঁইয়া টেকশহর ডটকমকে বলেন, ‘ইন্টারনেট সংযোগের ওই টেন্ডারে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদাতাদের বাদ দেয়া আইনের ব্যত্যয়। বিষয়টি নিয়ে আমরা আপত্তি জানিয়েছিলাম, নীতি-নির্ধারকরা সেই আপত্তি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছেন।’

‘আশাকরি নতুন টেন্ডারে এখাতের সবার অংশগ্রহণ উম্মুক্ত থাকবে’ বলছিলেন তিনি।

আইএসপিএবি এই টেন্ডারের যেসব বিষয় নিয়ে আপত্তি তুলেছিলো তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-

টেন্ডার ডকুমেন্টসের সেকশন-৭ এর টাইটেলে বলা ছিলো ‘টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেশন অব মোবাইল ইন্টারনেট সার্ভিস ফর গভর্মেন্ট প্রাইমারি স্কুল’। এখানে আইএসপিএবির প্রস্তাব ছিলো, ‘টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেশন অব ইন্টারনেট সার্ভিস ফর গভর্মেন্ট প্রাইমারি স্কুল’ করার।

হেডিং ছিলো ‘সিম কার্ড’, যেখানে ‘সিম কার্ড বা ইন্টারনেট কানেকশন’ করার প্রস্তাব ছিলো।

ক্যারিয়ার বা ভেন্ডরে ‘বিটিআরসির লাইসেন্স আছে এমন সেলুলার মোবাইল ফোন সার্ভিস অপারেটর’ । এখানে ‘ বিটিআরসির লাইসেন্স আছে এমন সেলুলার মোবাইল ফোন সার্ভিস অপারেটর এবং ন্যাশনওয়াইড ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার’ করার কথার কথা বলে আইএসপিএবি।

টেকনোলজিতে বলা হয়েছিলো ‘ফোরজি অথবা এর চেয়ে বেশি’, এখানে সংশোধনীতে ‘ফোরজি অথবা ফিক্স ব্রডব্যান্ড’ করার প্রস্তাব ছিলো।

নেটওয়ার্ক কাভারেজে, বরিশালে ৭০০, চট্টগ্রামে ২৫০০, ঢাকা ৩৫০০, খুলনায় ১৪০০ এভাবে প্রতি বিভাগে ফোরজি কাভারেজের টাওয়ার বা বিটিএস নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়। সেখানে আইএসপিএবি সংশোধনী চায়, বিভাগভিত্তিক ফোরজি বা যেসব আইএসপি বিটিআরসি গাইডলাইন অনুযায়ী কোয়ালিটি অব সার্ভিস নিশ্চিত করে ন্যাশনওয়াইড কাভারেজের সক্ষমতা রয়েছে।

টেন্ডারে বলা হয়েছিলো এক বছরে প্রতি মাসে প্রতি স্কুলে ৫ এমবিপিএসে ২০ জিবি করে ডেটা দিতে হবে। সেখানে আইএসপিএবির সংশোধনী প্রস্তাব ছিলো প্রতি মাসে প্রতি স্কুলে ৫ এমবিপিএসে ২০ জিবি করে ডেটা অথবা ৫ এমবিপিএস ফিক্সড ব্রডব্যান্ড সংযোগ।

এছাড়া আরও কিছু বিষয় সংশোধনীর প্রস্তার দেয় সংগঠনটি যেন তারা ওই টেন্ডারে অংশ গ্রহণ করতে পারে।

*

*

আরও পড়ুন