![]() |
আল-আমীন দেওয়ান : কয়েক দফা উদ্যোগের পর বাংলালিংকের অডিট শুরু হলেও তা কী সম্পন্ন হলো ?
কার্যাদেশের পর ৬ মাসে অডিট শেষ করা কথা থাকলেও তা প্রায় ৯ মাস হতে চলেছে।
মেসার্স মসিহ মুহিত হক এন্ড কোম্পানিকে বাংলালিংকের জন্য অডিটর নিয়োগ করে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছিলো ২০২১ সালের ২৬ আগস্ট। বিটিআরসির সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী এই অডিট শেষ করার কথা ২০২২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে।
অডিটর কি তা শেষ করতে পেরেছিলেন ? উত্তর হলো, না ।
অডিটর বিটিআরসির কাছে আরও সময় চায়। বিটিআরসি ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি এই মেয়াদ বাড়ানো বিষয়ে সভায় বসে। সেখানে চুক্তির মূল্য ও কার্যপরিধি অপরিবর্তিত রেখে বাড়তি ৩ মাস সময় বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়। সেই বৈঠকে এটিও সুপারিশ করা হয় যে, এরপর যদি আরও সময় লাগে তাহলে আবার সময় বাড়ানোর ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।
পরবর্তিতে মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। যে অনুযায়ী অডিট শেষ করার তারিখ ২৩ মে।
বিটিআরসির অর্থ, হিসাব ও রাজস্ব বিভাগের পরিচালক মো: এয়াকুব আলী ভূঁইয়া টেকশহর ডটকমকে বলেন, জানামতে এখনও রিপোর্ট জমা পড়েনি।
তিনি জানান, অডিটে চাহিদা অনুযায়ী নানা তথ্য-ডকুমেন্টস পাওয়া সাপেক্ষে সময় লাগতে পারে। কিছু সময় বাড়লেও এরজন্য কোনো অর্থ বা চুক্তির কোনো কিছু পরিবর্তিত হয়না।
‘রিপোর্ট যেন দ্রুত জমা দেয়া হয় এরজন্য বিটিআরসি অডিট কোম্পানিকে বেশ চাপে রেখেছে’ বলছিলেন তিনি।
বাংলালিংকের চিফ কর্পোরেট এন্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান টেকশহর ডটকমকে জানান, সম্ভবত বেশিরভাগই কাজই গুছিয়ে এনেছে অডিট কোম্পানি। তাদের দিক হতে সব রকম সহযোগিতা তারা করেছেন, অডিট কোম্পানির চাহিদা মতো সব তথ্য ও কাগজপত্র তারা দিয়েছেন। অডিটের মতো কাজে সময়টা একটু এদিক-ওদিক হয়ই।
বাংলালিংকের অডিট করতে মসিহ মুহিত হক এন্ড কোম্পানির সঙ্গে ৮ কোটি ৭৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় চুক্তি করে বিটিআরসি।
এই কোম্পানি ভারতীয় এক অডিট কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে রবিরও অডিট করেছিলো, এরজন্য তারা নিয়েছিলো ৭ কোটি ৮২ লাখ টাকা।
বাংলালিংকের অডিট করার কয়েক দফার মধ্যে শেষে দফার উদ্যোগে অডিটর নিয়োগে দরপত্র আহবান করা হয় ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর । এতে ৯ কোম্পানির সাড়া পেয়েছিলো নিয়ন্ত্রণ সংস্থা।
এরপর সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সুপারিশ, কমিশন সিদ্ধান্ত এবং নেগোশিয়েশনের ভিত্তিতে সংশোধিত আর্থিক প্রস্তাবে ৮ কোটি ৭৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় মেসার্স মসিহ মুহিত হক এন্ড কোম্পানির নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়।
এর আগে বাংলালিংকে অডিট করতে ২০১১ সালে অডিটর নিয়োগ দেওয়ার পর ওই প্রতিষ্ঠানটি কাজ শুরু করেছিল। কিন্তু মাঝপথে এসে অডিটর কাজ করবে না বলে জানায়।
ওই সময় অডিটর বদলে নতুন কোম্পানিকে দায়িত্ব দিলেও তারাও এক পর্যায়ে অডিট করতে অস্বীকৃতি জানায়।
তবে অডিট প্রতিষ্ঠান আহমেদ জাকের অ্যান্ড কোম্পানি কখনোই এর সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করেনি।
পরে ২০১৭ সালে আবারও বাংলালিংকের হিসাব অডিটের উদ্যোগ নেয় বিটিআরসি। ওই বছর বেশ খানিকটা সময় নিয়ে দাফতরিক কাজকর্ম অনেকটা এগিয়ে নেওয়া হয়।
সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে আগ্রহীদের কাছ থেকে প্রস্তাবও নেওয়া হয়। অডিটর বাছাই করতে গিয়েও সময় বেশি চলে যাওয়ায় এক পর্যায়ে তা বাতিল করে দেয় কমিশন।
ইতোমধ্যে গ্রামীণফোন ও রবির অডিট সম্পন্ন করার পর গ্রামীণফোনের কাছে অডিট আপত্তির ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা হতে ২ হাজার কোাটি টাকা এবং রবির অডিট আপত্তির ৮৬৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা হতে ১৩৮ কোটি টাকা আদায় করছে বিটিআরসি।