বিটকয়েনে তেল ও গ্যাসের দাম নেয়ার বিষয়ে ভাবছে রাশিয়া

টেকশহর কনটেন্ট কাউন্সিলর: বিটকয়েনে তেল ও গ্যাস রফতানির মূল্য গ্রহনের কথা ভাবছে রাশিয়া। রাশিয়ার পার্লামেন্ট ডুমার জ্বালানি বিষয়ক কমিটির প্রধান পাভেল জাভালনি বলেছেন, ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ দেশগুলো তেল ও গ্যাসের দাম ক্রিপ্টো কারেন্সি অথবা তাদের স্থানীয় মুদ্রায় পরিশোধ করতে পারবে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন মূল্যপরিশোধের মাধ্যম হিসেবে ক্রিপ্টোকারেন্সিও ঝুঁকিমুক্ত নয়।

চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, তিনি চান ‘বন্ধু নয়’ এমন দেশগুলো রুবলেই তাদের গ্যাস কিনবে। ধারণা করা হচ্ছে স্থানীয় মুদ্রার মান চাঙ্গা করতেই পুতিন এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহন করতে চাচ্ছেন। চলতি বছর রাশিয়ার মুদ্রা রুবল ২০ শতাংশের বেশি মান হারিয়েছে।

ইউক্রেনে হামলার কারণে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ)। নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে রুবলের মান কমছে এবং বেড়ে গিয়েছে জীবনযাপন খরচ।

Techshohor Youtube

রাশিয়া প্রাকৃতিক গ্যাসের বৃহত্তম রফতানিকারক এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল রফতানিকারক। জ্বালানী কমিটির প্রধান জাভালনি গত বৃহস্পতিবার জানান, রফতানিকৃত জ্বলানীর মূল্য পরিশোধের বিকল্প উপায় খুঁজছে তারা। তিনি আরো বলেন, ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে চীন ও তুরস্ক রয়েছে যারা এই নিষেধাজ্ঞা চাপের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত নয়। রুবল এবং ইউয়ানের জন্য জাতীয় মুদ্রা বিষয়ক চুক্তি সম্পন্ন করতে আমরা অনেকদিন আগেই চীনকে প্রস্তাব দিয়েছি। তুরস্কের সঙ্গেও এটি লিরা ও রুবলে হতে পারে। আপনারা বিটকয়েনের মাধ্যমেও ব্যবসা করতে পারেন।

এদিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, জনপ্রিয় ক্রিপ্টোকারেন্সি গ্রহন করে রাশিয়া সম্ভবত উপকৃত হতে পারে, তবে এখানে ঝুঁকিও রয়েছে। সিঙ্গাপুরভিত্তিক এনার্জি স্টাডিজ ইনস্টিটিউটের রিসার্চ ফেলো ডেভিড ব্রডস্টক বলেছেন, ‘নিষেধাজ্ঞার প্রভাব খুব দ্রুত অনুভব করছে রাশিয়া। এ অবস্থায় দেশটির অর্থনীতি চাঙ্গা করা প্রয়োজন এবং বিভিন্ন দিক থেকে বিটকয়েনকে উচ্চ প্রবৃদ্ধির সম্পদ হিসেবে দেখা হচ্ছে। চলতি বছর ইউরোর বিপরীতে বিটকয়েনের মান ৩০ শতাংশ বেড়েছে।’

তিনি আরো বলেছেন, ‘প্রাকৃতিক গ্যাস বিক্রিতে অন্যান্য গতানুগতিক মুদ্রার বিপরীতে বিটকয়েন গ্রহন করলে ঝুঁকি রয়েছে। এছাড়া ‘বন্ধুত্ব পূর্ণ’ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম চীনে ক্রিপ্টোকারেন্সি নিষিদ্ধ। এখানে পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে বিটকয়েন ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা রয়েছে।’

এছাড়া আরো আশঙ্কা রয়েছে রুশ ধনীরা নিষেধাজ্ঞা এড়াতে এই ভার্চুয়াল মুদ্রা ব্যবহার করতে পারে। এ অবস্থায় ইউক্রেন সরকারের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের রাজনীতিবিদরা ক্রিপ্টোকারেন্সি প্লাটফর্মগুলোকে রুশ ব্যবহারকারীদেরকে নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে।

ক্রিপ্টোকারেন্সি প্রতিষ্ঠান কয়েনবেইজের প্রধান নির্বাহি ব্রিয়ান আর্মস্ট্রং বলেছেন, ‘স্থানীয় মুদ্রার মান কমে যাওয়ার কারণে অনেক রাশিয়ানরাই ক্রিপ্টো ব্যবহার করছেন। এ অবস্থায় ক্রিপ্টো প্লাটফর্মে নিষিদ্ধ করা হলে তারা বড় ক্ষতির মুখে পড়বে।’

এদিকে রাশিয়ার সঙ্গে যেসব চুক্তি এরইমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে তার অনেকগুলোই ইউরোতে মূল্যপরিশোধ বিষয়ক। রাশিয়া এ চুক্তিগুলো পরিবর্তন করবে কি না তা নিশ্চিত নয়। এছাড়া ইইউর প্রয়োজনীয় গ্যাসের ৪০ শতাংশই রাশিয়া থেকে আসে।

বিবিসি/আরএপি

*

*

আরও পড়ুন