![]() |
টেকশহর কনটেন্ট কাউন্সিলর: ইলেকট্রিক গাড়ির (ইভি) ব্যাটারি প্যাকের ভেতরে রয়েছে হাজার হাজার রিচার্জেবল লি-আয়ন সেলের সমন্বয়ে তৈরি একাধিক আন্তঃসংযুক্ত মডিউল। মূলত একটি ব্যাটারি প্যাক তৈরির সার্বিক খরচের ৭৭ শতাংশই এই সেলগুলো তৈরিতে ব্যয় হয়।
ব্যাটারি সেলের খরচ
ব্লুমবার্গ এইএফের তথ্যমতে, ব্যাটারি সেলের ক্যাথডে সার্বিক খরচের অর্ধেকের বেশি চলে যায়। ইভি ব্যাটারির উপাদানগুলোর মধ্যে ক্যাথডে ৫১ শতাংশ, উৎপাদন ও অবচয় বাবদ ২৪ শতাংশ, অ্যানোড ১২ শতাংশ, বিভাজক বা সেপারেটর ৭ শতাংশ, ইলেক্ট্রোলাইট ৪ শতাংশ, হাউজিং ও অন্যান্য উপকরন ৩ শতাংশ খরচ চলে যায়।
ক্যাথডের খরচ এতো বেশি কেন?
ক্যাথড হলো ব্যাটারির ধনাত্বক চার্জযুক্ত ইলেক্ট্রোড। যখন ব্যাপারি চার্জ থেকে খুলে নেয়া হয় তখন ইলেক্ট্রোন এবং ধানত্বক চার্জযুক্ত মলিকিউলাস (লিথিয়াম আয়নস) অ্যানোড থেকে ক্যাথডে চলে আসে; যা ব্যাটারিটি পুনরায় চার্জ না হওয়া পর্যন্ত স্টোর হয়ে থাকে। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে ক্যাথড মূলত একটি ব্যাটারির পাফর্মেন্স, রেঞ্জ এবং থার্মাল সেফটি নির্ধারন করে থাকে। তাই দেখা যায় একটি ইলেকক্ট্রিক গাড়ির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হয়ে উঠে এই ক্যাথড।
ক্যাথড মূলত সেল কেমেস্ট্রির ওপর নির্ভর করে বিভিন্ন ধাতুর (পরিশোধিত) মাধ্যমে তৈরি। মূলত এতে লিথিয়াম ও নিকেল ব্যবহৃত হয়। ক্যাথডে মূলত লিথিয়াম আয়রন ফসফেট (এলএফপি), লিথিয়াম নিকেল ম্যাঙ্গানিজ কোবাল্ট (এনএমসি) এবং লিথিয়াম নিকেল কোবাল্ট অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড (এনসিএ) সংমিশ্রগুলো ব্যবহৃত হয়।
ব্যাটারির ক্যাথডে ব্যবহৃত ধাতব উপাদানগুলোর অনেক চাহিদা। ইলেক্ট্রিক গাড়ির চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারনে টেসলার মতো গাড়ি নির্মাতা কোম্পানিগুলো এ ধরনের ধাতব মজুদ করে রাখার প্রতিযোগিতায় রয়েছে। ক্যাথডের মধ্যে থাকা কমোডিটিগুলো সার্বিক সেলের ৪০ শতাংশ ব্যয় বহন করে।
ইভি ব্যাটারি সেলের অন্যান্য উপাদান
সেলের সর্বমোট খরচের ৪৯ শতাংশ চলে যায় ক্যাথডের বাইরের যন্ত্রাংশগুলোর জন্য। ম্যানুফ্যাকচারিং প্রক্রিয়া ( যেখানে ইলেক্ট্রোডস উৎপাদন প্রক্রিয়াও রয়েছে), ভিন্ন ভিন্ন যন্ত্রাংশ সংযুক্ত করা এবং সেলের কাজ শেষ সমাপ্তি কাজের জন্য মোট ২৪ শতাংশ ব্যয় হয়।
ব্যাটারির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে অ্যানোড। ব্যাটারি তৈরির সার্বিক খরচের ১২ শতাংশ এই অ্যানোড তৈরিতে ব্যয় হয়। লি-আয়ন কোষের অ্যানোড সাধারনত প্রাকৃতিক অথবা সিন্থেটিক গ্রাফাইট দিয়ে তৈরি; যা ব্যাটারি তৈরিতে প্রয়োজনীয় অন্যান্য উপাদানের তুলনায় কমদামের।
২০১০ সাল থেকে ব্যাটারির দাম কমলেও লিথিয়ামের মতো ব্যাটারি তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলোর দাম বাড়ছে। ফলে ব্যাটারির দাম ভবিষ্যতে আরো কমবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
ব্লুমবার্গ/আরএপি