এরিকসনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি তদন্ত সংক্রান্ত চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের

টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর: ইরাকের জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেটকে (আইএস) সম্ভাব্য অর্থপ্রদান সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ না করে এরিকসন চুক্তি লঙ্ঘন করেছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

সুইডেনভিত্তিক এই টেলিকম কোম্পানিটি জানিয়েছে, মার্কিন আইন বিভাগ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে অভ্যন্তরীণ তদন্ত নিয়ে তাদের দেয়া তথ্য ‘অপর্যাপ্ত’ ছিলো।

সম্প্রতি বিবিসির একটি প্রতিবেদনে  বলা হয়েছে, “তদন্তে দেখা গিয়েছে আইএস নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে কর্মীদের কাজ করতে বাধ্য করে এরিকসন।  ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় কাজ করতে গিয়ে এরিকসনের অনেক কর্মীই অপহরনের শিকার হয়েছেন।” বিবিসির এ প্রতিবেদন প্রকাশের পরই যুক্তরাষ্ট্রের আইনবিভাগের পক্ষ থেকে এমন কথা বলা হলো।

Techshohor Youtube

এরিকসনের প্রধান নির্বাহি বুর্জ একহোম মার্কিন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তিনি আভাস দিয়েছেন ‘সশস্ত্র দলগুলোর অর্থায়নের বিষয়টি প্রমানিত হতে পারে না।’

বুধবার মার্কিন আইন বিভাগের এ ঘোষণার পর এরিকসনের শেয়ারদর ১০ শতাংশ কমে যায়।

২০১৯ সালে এরিকসন এক বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ জরিমানা পরিশোধে সম্মত হয়। এছাড়াও জিবুতি, চীন, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া এবং কুয়েতে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে একটি বিলম্বিত প্রসিকিউশন চুক্তিতে পৌঁছে এরকিসন। এই চুক্তির অংশ হিসেবে কোম্পানিটি চলমান তদন্ত ও বিচার নিয়ে মার্কিন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা করতে সম্মত হয়।

গত মাসে এরিকসনের নির্বাহি কর্মকর্তা একহোম স্বীকার করেন, ২০১১ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে এরিকসনের কর্মী, ভেন্ডর এবং সরবরাহকারীদের কার্যক্রমের ওপর অভ্যন্তরীণ তদন্তে ‘দুর্নীতি সংক্রান্ত অসদাচরনের’ প্রমান পাওয়া গিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ‘মধ্যস্ততাকারীদের অর্থপ্রদান এবং ইরাকের শুল্ক বিভাগকে ফাঁকি দেয়ার জন্য বিকল্প পরিবহন রুট ব্যবহারের অভিযোগগুলো এমন সময়ে আসলো যখন কিনা আইএসসহ সন্ত্রাসীদলগুলো কিছু কিছু পরিবহন রুট দখল করে রেখেছে।’

ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইন্টারন্যাশনাল জার্নালিস্টের (আইসিআইজে) হাতে আসা অভ্যন্তরীণ তদন্ত প্রতিবেদনের একটি কপি এরিকসনের কাছেও পৌঁছুলে কোম্পানিটির প্রধান এ স্বীকারোক্তি দেন। তদন্তের প্রতিবেদনটি বিবিসি নিউজ অ্যারাবিকসহ আরো ২৯টি গণমাধ্যমের কাছে পাঠানো হয়েছে।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছিলো, ২০১৪ সালের জুনে আইএস যখন ইরাকের উত্তরাঞ্চলের শহর মসুল দখল করে তখন এরিকসনের একজন আইনজীবি সেখানে কোম্পানির কার্যক্রম বন্ধের পরামর্শ দেন। কিন্তু কোম্পানির জেষ্ঠ্য কর্মকর্তারা কার্যক্রম বন্ধের পদক্ষেপকে ‘অকালপক্ক’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তদন্তে দেখা গিয়েছে আইএস নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে কর্মীদের কাজ করতে বাধ্য করে তাদের জীবন হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। অনেককেই আইএস অপহরন করেছে।

গত বুধবার এরিকসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের আইনবিভাগ (ডিওজে) নিশ্চিত যে তাদের সঙ্গে ডেফারড প্রসিকিউসন এগ্রিমেন্ট (ডিপিএ) হওয়ার আগে সম্পন্ন তদন্তের তথ্য পুরোপুরি প্রকাশ না করে কোম্পানি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে।

এরিকসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগগুলো নিয়ে তারা ডিওজের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। বিষয়টি সমাধানের জন্য ডিওজেকে সহযোগিতা করতে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

কোম্পানিটি আরো জোর দিয়ে জানায়, তদন্তে এরিকসনের এমন কোন কর্মীকে পাওয়া যায় নি যিনি ইরাকে সরাসরি সন্ত্রাসী অর্থায়ন কর্মকান্ডের সঙ্গে যুক্ত। তারা বিবিসির প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্বাস করে না।

বিবিসি/আরএপি

*

*

আরও পড়ুন