![]() |
টেকশহর কনটেন্ট কাউন্সিলর: যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় দুই মোবাইল কোম্পানি ভেরিজোন এবং এটিঅ্যান্ডটি তাদের নতুন ফাইভজি মোবাইল ইন্টারনেট প্রযুক্তিতে শিগগিরই আরো কিছু সেবা যোগ করতে যাচ্ছে। এ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে দেশটির শীর্ষ ১০ উড়োজাহাজ সংস্থার প্রধানরা বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে ফাইভজি নেটওয়ার্কে নতুন এসব প্রযুক্তি ফ্লাইট পরিচালনা কার্যক্রমে ‘বড় ধরনের বিঘ্ন’ সৃষ্টি করবে এবং ‘এতে তারা বড় ধরনের অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের’ সম্মুখিন হবে।
বিমান কর্তৃপক্ষ ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনেস্ট্রেশনকে (এফএএ) দেয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, সি-ব্যান্ড ফাইভজি সিগনাল উড়োজাহাজের নেভিগেশন সিস্টেম বিশেষ করে যেগুলো বৈরি আবহাওয়ায় ব্যবহৃত হয় সেখানে মারাত্মক সমস্যা তৈরি করবে। অন্যান্যদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে আমেরিকান এয়ারলাইনস, ডেল্টা এয়ার লাইনসের প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তারা (সিইও) বলেছেন, ‘উড়োজাহাজের যাত্রীদের চলাচল, পণ্য পরিবহন এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহে বড় ধরনের সমস্যা এড়াতে জরুরীভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে।’ চিঠিটি ট্রান্সপোর্টেশন সেক্রেটারি পিটে বুটিয়েগের পাশাপাশি এফএএ প্রধান বরাবর পাঠানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের উচ্চপর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। ফাইভজি এই নেটওয়ার্কগুলোর কারণে কোন কোন বিমানসংস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হবে তার একটি তালিকা প্রকাশ করেছে এফএএ। বিমানসংস্থাগুলো চাইছে ফাইভজি নেটওয়ার্কগুলো এসব বিমানসংস্থার বিমানবন্দরের রানওয়েরর কমপক্ষে দুইমাইল দূরে থাকবে। এ প্রসঙ্গে চিঠিতে বলা হয়, ‘এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহনের ফলে বিমানচলাল শিল্প, ভ্রমনরত ব্যাক্তি, সরবরাহ শৃঙ্খল, ভ্যাকসিন সরবরাহ , আমাদের জনবল এবং সর্বোপরি অর্থনীতির ক্ষতিকর প্রভাব এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। এছাড়াও নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি ফ্লাইট চলাচল নির্বিঘ্ন করতে গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরগুলোর রানওয়ের কাছাকাছি বেস স্টেশনগুলো দ্রুত চিহ্নিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে এফএএকে।
শীর্ষস্থানীয় দুই উড়োজাহাজসংস্থা এয়ারবাস এবং বোয়িংয়ের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করা হলে ফাইভজি নেটওয়ার্ক নিয়ে সংশ্লিষ্ট শিল্পের উদ্বেগ আরো জোরাল হয়ে উঠেছে। বিমানসংস্থাগুলো আরো জানিয়েছে, উড়োজাহাজ নির্মাতারা আমাদের জানিয়েছে, বিপুল পরিমান ফ্লাইট অবতরন করতে হতে পারে। অভ্যন্তরীণভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাশাপাশি বড় আকারের বিমানের সংখ্যা কম থাকায় হাজার হাজার আমেরিকান বিদেশে আটকে যেতে পারে।
এফএএ এ প্রসঙ্গে জানিয়েছে, তারা জরিপ করে দেখেছে ফাইভজি সি-ব্যান্ড যুক্ত করা হয়েছে এমন বিমানবন্দরে কমপক্ষে ৪৫ শতাংশ বাণিজ্যিক ফ্লাইট লু-ভিসিবিলিটি ল্যান্ডিং হবে। এরমধ্যে বোয়িং এবং এয়ারবাসের বড় আকারের বিমানের জন্য দুটি রেডিও অল্টিমিটার মডেলের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও কিছু কিছু এয়ারপোর্টের ফ্লাইট চলাচল বিঘ্নিত হবে। এ অবস্থায় ফ্লাইট কন্ট্রোল ব্যবস্থায় কিভাবে রাডার অল্টিমিটার তথ্য ব্যবহার করা যায় তা নিযে অব্যাহতভাবে কাজ করছে এফএএ। ফাইভজি রয়েছে এমন গন্তব্যে যাওয়ার আগে যাত্রীদেরকে আবহাওয়া পূর্বাভাস যাচাই করে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছে এফএএ।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়্যারলেস ইন্ডাস্ট্রি গ্রুপ সিটিআইএ এর আগে বলেছিলো ফাইভজি প্রযুক্তি নিরাপদ। সংস্থাটি অভিযোগ করে এটি নিয়ে বিমানচলাচল খাত ভীতি ছড়াচ্ছে এবং তথ্য বিকৃত করছে।
সূত্র: বিবিসি/আরএপি