![]() |
টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অন্যতম বাণিজ্য সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্য্যার আ্যন্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) নির্বাচন রোববার।
সংগঠনটির ২০২২-২৩ সেশনের এ নির্বাচনে ২ বছর মেয়াদের জন্য ১১ পদে প্রার্থী রয়েছেন ২৯ জন।
রাজধানীর গুলশানে শুটিং ফেডারেশেনে অনুষ্ঠিত হবে এ নির্বাচন। ভোট গ্রহণ চলবে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
সংগঠনটির মোট ১৮১৬ জন সদস্যদের মধ্যে এবারে ভোটার ৮৭৬ জন সদস্য। জেনারেল ক্যাটাগরিতে ভোটার ৬৫৪ জন, অ্যাসোসিয়েটে ভোটার ১৮২ জন, অ্যাফিলিয়েটে ৩৭ জন । এছাড়া আন্তর্জাতিক সদস্য ভোটার রয়েছেন ৩ জন।
এবারে দুটি প্যানেল করে প্রার্থী হয়েছেন ২০ জন। এতে দুই প্যানেলে ৮ জন করে ১৬ জন প্রার্থী জেনারেল ক্যাটাগরিতে আর ২ জন করে ৪ জন অ্যাসোসিয়েট ও অ্যাফিলিয়েট ক্যাটাগরিতে নির্বাচন করছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন ৮ জন। আর ইন্টারন্যাশনাল ক্যাটাগরিতে একক প্রার্থী থাকার কারণে সেখানে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে না।
‘সিনার্জি স্কোয়াড’ এবং ‘ওয়ান টিম’ নামের প্যানেল দুটিতে যথাক্রমে নেতৃত্ব দিচ্ছেন হাবিবুল্লাহ এন করিম এবং রাসেল টি আহমেদ।
রাসেল টি আহমেদ টেকশহরডটকমকে বলেন, তারা নিজেদের জবাবদিহিতায় আনবেন। মেয়াদের পুরো সময়কে ১০০ দিন করে ভাগ করে সদস্যদের মুখোমুখি হবেন যে,কী কাজ করলেন তারা।
হাবিবুল্লাহ এন করিম টেকশহরডটকমকে বলেন, তারা সদস্যদের নিয়েই এগিয়ে যেতে চান। সদস্যদের সব রকম প্রয়োজনে তাদের পাশে থাকতে চান।
উভয় প্যানেল নেতাই তাদের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতির কথা জানান।
প্যানেল নেতা ছাড়া সিনার্জি স্কোয়াডে’র অন্য সদস্যরা হলেন, অ্যাডভান্সড ইআরপির মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল, স্পেকট্রাম সফটওয়্যার অ্যান্ড কনসাল্টিংয়ের মুশফিকুর রহমান, ডাটাবিজ সফটওয়্যারের রাশেদ কামাল, ড্রিম৭১ বাংলাদেশের রাশাদ কবির, জেডএস সলিউশনসের সৈয়দা খাদিজা দীনা, অ্যানালাইজেন বাংলাদেশের মুহম্মদ রিসালাত সিদ্দীক, বন্ডস্টাইন টেকনোলজিসের মীর শাহরুখ ইসলাম, ইওয়াইহোস্টের ইমরান হোসেন এবং মাইহেলথ বিডি ডটকমের মঞ্জুরুল হক।
মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল টেকশহরডটকমকে জানান, বেসিস একটি ইন্ডাস্ট্রি ট্রেডবডি যার মূল লক্ষ্য সদস্যদের ব্যবসার প্রসারে সহায়তা করা এবং ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ বজায় রাখতে যেসব প্রতিবন্ধকতা আসে তা দূর করতে বিভিন্ন স্টেক হোল্ডারদের সাথে কাজ করা। এর একটি দিক বেসিসের ইন্টারনাল ফ্যাক্টরস যেমন মেম্বার সার্ভিসের দূর্বলতা গুলো দূর করা। আর একটি দিক হলো, এক্সটারনাল ফ্যাক্টর তথা বাজার সম্প্রসারণ, ক্যাপাসিটি বিল্ডিং এবং ইজ অফ ডুয়িং বিজনেস এই তিন ক্ষেত্রে অর্থবহ কার্ম প্রনালী তৈরী ও বাস্তবায়ন করা। এই দুই ফ্যাক্টর মাথায় রেখে সুনির্দিষ্ট কর্ম পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে চান তিনি।
প্যানেল নেতা ছাড়া ওয়ান টিমে’র অন্য সদস্যরা হলেন গিগা টেকের সামিরা জুবেরী হিমিকা, চালডালের জিয়া আশরাফ, এনরুট ইন্টারন্যাশনালের আবু দাউদ খান, জামান আইটির জামান খান, পাঠাওয়ের ফাহিম আহমেদ, ড্রিমার্জ ল্যাবের তানভীর হোসেন খান, মাইন্ডল্যাবজের সুজাদুর রহমান, স্টার কম্পিউটারের রেজওয়ানা খান এবং টেকনোগ্রামের এ কে এম আহমেদুল ইসলাম ।
স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন হিসেবে রয়েছেন ডিকস্টালিয়ার সাবিলা ইনুন, আ্যপলেক্ট্রাম সলিউশনের মোহাম্মদ মঞ্জুরুল আলম, কর্পোরেট আইটির মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান, গ্লোবাল টেকনোলজির সৈয়দ সাইফুল ইসলাম, ইনফনেক্স সফটওয়্যারের মোজাম্মেল হক, র্যাশনাল টেকনোলজিসের সাকিব চৌধুরী, ইউবিক করপোরেশনের মোহাম্মদ সামিউল ইসলাম এবং উইজডম ভ্যালির আবদুল কাদের।
সাবিলা ইনুন বলছেন, তিনি বেসিসসহ তথ্যপ্রযুক্তি খাতে তার অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চান। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্টার্টআপদের অংশগ্রহণ সহজ করাসহ সদস্যদের জন্য উন্নয়নমূলক নানা উদ্যোগ বাস্তবায়ন করার কথা বলছেন।
এছাড়া আন্তর্জাতিক সদস্য ক্যাটাগরিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন সৈয়দ এম কামাল ।
এবারের নির্বাচন নিয়ে বেসিস সদস্য ভোটারদের মধ্যে উৎসাহ দেখা গেছে। নানা অভিযোগ-অনুযোগ-উষ্মা থাকলেও নির্বাচনকে উৎসব হিসেবে দেখে এতে অংশ নেয়ার কথার জানিয়েছেন অনেক ভোটার। সে হিসেবে বেসিস এবং খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতি হবে আশাব্যঞ্জক।
অনেক ভোটারই বলছেন, ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই প্রার্থীর যোগ্যতার নানা দিক মূল্যায়ন হবে।
যোগ্যতার মূল্যায়নে কোন বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছেন এমন প্রশ্নে তারা বলছেন, স্বচ্ছ ব্যক্তি ইমেজ। যারা নির্বাচিত হয়ে নিজের নয় সদস্যদের উন্নয়নে মনোযোগী হবেন।
কেমন প্রার্থীকে ভোট দেবেন এমন প্রশ্নে ই-সফট এর সিইও আরিফুল হাসান অপু বলছেন, অবশ্যই স্বচ্ছ ব্যক্তি ইমেজ এবং নেতৃত্বে যোগ্যতা থাকতে হবে।
‘৩৬০ ডিগ্রি নলেজ রাখেন, অভিজ্ঞ, ইন্ডাস্ট্রি একাডেমিয়ার সমন্বয় করে কাজ করতে পারবেন এবং সদস্যদের বিজনেস বৃদ্ধিতে উদ্যোগ নিতে ও ভুমিকা রাখতে পারবেন এমন প্রার্থীতেই ভরসা করবেন’ বলছিলেন তিনি।
অপু বলছেন, এখন পর্যন্ত এই নির্বাচনে উৎসাহ ও উৎসবমূখর পরিবেশ দেখেছেন। ভোটের দিন এমন পরিবেশ থাকবে বলেই তার আশা।
তরুণ উদ্যোক্তা হাইপারট্যাগ সল্যুশনের এমডি মো. শফিউল আলম বলছেন, ব্যাপক হই-হুল্লোড়, আয়োজনে নির্বাচন শেষে কিছু স্ট্যান্ডিং কমিটি হয়। এরপর সবকিছু স্তিমিত হয়ে যায়। বেসিস যেন ইসিনির্ভর না হয়ে সদস্যর্নিভর হয়। কমিটি বা কাজ সব জায়গাতেই যোগ্যতার মূল্যায়ন চান তিনি।
ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে প্রার্থীর যোগ্যতা ও ব্যক্তি ইমেজকেই গুরুত্ব দেবেন বলেন জানান তিনি।
শুটিং স্টারের এমডি দিদারুল আলম সানি বলছেন, নির্বাচিত হয়ে কেউ যেন তাদের প্রতিশ্রুতির কথা ভুলে না যান। সদস্যদের জন্য কাজ করতে পারবেন এমন যোগ্যতাসম্পন্ন ও আন্তরিক প্রার্থীকেই ভোট দেবেন তিনি।
ব্যক্তি ইমেজ ও যোগ্যতা যাচাই কীভাবে হবে ভোটারদের কাছে এমন প্রশ্ন রাখলে তারা বলছেন, প্রার্থীদের অতীত হতে বর্তমান, এই পথ চলাই তাদের বড় বায়োডাটা। যেখানে কে কী কাজ করেছেন আর করছেন, কীভাবে এসেছেন, কোথায় কী ভুমিকা রেখেছেন, কী অর্জন ইত্যাদির খোঁজ মিলে যায়। এতে যাচাইয়ের কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়।