টেকসই উন্নয়নে সাইবার নিরাপত্তা জরুরি : পলক

টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : গোটা বিশ্বজুড়ে অক্টোবর সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাস হিসেবে পালিত হয় । সেই ধারাবাহিকতায় টেকসই উন্নয়নে সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক একটি অনলাইন সেমিনার শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়।

আইসিটি বিভাগ কন্ট্রোলার অব সার্টিফায়িং অথরিটিজ (সিসিএ) এবং ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সি’র উদ্যোগে এই সেমিনারের আয়োজন করে ।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক, স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিসিএ-এর নিয়ন্ত্রক আবু সাঈদ চৌধুরী , সভাপতিত্ব করেন ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সির মহাপরিচালক মো: খায়রুল আমীন।

Techshohor Youtube

সেমিনারে প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহমেদ বলেন, করোনাকালে সাড়ে ৪ কোটি মানুষের ভ্যাকসিন নিবন্ধন, আড়াই কোটি ভ্যাকসিন প্রদান, বিশ্বের ৭ম বৃহত্তম ডেটা সেন্টার স্থাপনের নজির এবং সক্ষমতাও আমাদের রয়েছে।

কিন্তু ডিজিটাল বিপ্লবের এ সব ম্লান করে দিতে পারে আমাদের সাইবার নিরাপত্তার ব্যর্থতা। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক হতে ৮১ বিলিয়ন ডলার পাচারের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন আজকে এ সময়ে কোন দেশে ফিজিকাল অ্যাটাক এর দরকার হয়না। সাইবার অ্যাটাক এর মাধ্যমে একটি দেশকে অকার্যকর করে দেয়া যায়। ২০০৭ এ এসতোনিয়া, ইউকে, ইরান এর সাইবার হামলার ঘটনা তিনি উল্লেখ করে এ বিষয়ে আমাদের যথাযথ প্রস্তুতি নিতে হবে জানান।

আমাদের জানা-অজানায় আমরা ১৪ ধরনের সাইবার হামলার শিকার হই। স্প্যাম, র‌্যানসামওয়্যার, ফিসিং, মেলওয়্যার, ইনফরমেশন লিকেজ, ইনসাইডার থ্রেট বটনেটস্ এর অন্যতম। সাইবার নিরাপত্তায় আইসিটি বিভাগের প্রস্তুতির বিষয়টি তুলে ধরে বিজিডি ই-গভ সিআইআরটি, ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সি গঠন, অত্যাধুনিক ফরেনসিক ল্যাব স্থাপন ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনসহ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় বিধি-বিধান ও করনীয় নির্ধারন কাজ করা হয়েছে বলে জানান ।

তিনি উল্লেখ করেন , বিজিডি ই-গভ সিআইআরটি কর্তৃক ৪৫৫০টি সাইবার হামলার ঘটনা সনাক্ত করা হয়েছে যার মধ্যে ২৭৮ টির বেশি ছিল আমাদের সরকারী প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট। সরকারী দপ্তরের পাশাপাশি আমাদের আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বেসরকারী সংস্থা সমূহের সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টিও সিআইআরটি দেখছে। গ্লোবাল সাইবার ইন্ডেক্স -এ আমাদের অবস্থান ১৬০টি দেশের মধ্যে ৪১ তম ।

৫২ হাজার website, করোনাকালে মুক্তপাঠে ৭০ লাখ সাবস্ক্রিপশন, ডিজিটাল এডুকেশন প্লাটফর্ম, ১.৩ মিলিয়নের বেশি নির্ভর রপ্তানি আয়, ৩৩৩, ৯৯৯ বিডি পুলিশ, ভার্চুয়াল কোর্ট, ৪ কোটি ই-নথি ও ৮ হাজার দপ্তরে এর ব্যবহারসহ করোনাকালে ই-অফিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এর ব্যবহারের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মন্ত্রিপরিষদ একনেক এর সভায় যোগদান ইত্যাদি সবই ই-গভার্নমেন্ট চালু থাকায় সম্ভব হয়েছে বলে জানান জুনাইদ আহমেদ পলক ।

ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি ক্যাপাসিটি মডেল, ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার, সাইবার লিটারেট সোসাইটি এবং সাইবার ইকো-সিস্টেম গঠনের মধ্যে দিয়ে সাইবার সিকিউরিটি নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় আইন, বিধি-বিধান প্রণয়ন, দক্ষ জনবলসহ কাঠামোগত সক্ষমতা অর্জন, বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারী-বেসরকারী পর্যায়ে সহযোগিতা মিডিয়ার যথার্থ ব্যবহারের মাধ্যমে সচেতনতা তৈরী করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

তবে সাইবার অপরাধ থেকে বেঁচে থাকার জন্য তিনি সবার আগে ব্যক্তি পর্যায়ের সচেতনতা তৈরীর বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে, ব্যক্তির পাশাপাশি আমাদের সমাজ এবং কর্মক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাবার সাথে সাথে এর সবোর্চ্চ সুফল ভোগ করতে হলে সাইবার সুরক্ষার বিকল্প নেই ।

এই আয়োজনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের অধ্যাপক ড. মো: মামুন অর রশীদ।

এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক সমকাল এর সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, বাংলাদেশ পুলিশ এর এডিশনাল ডিআইজি মোল্যা নজরুল ইসলাম, ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সি এর পরিচালক তারেক এম বরকতউল্লাহ এবং এটুআই এর চীফ টেকনোলজি অফিসার আরফে এলাহী।

আরও পড়ুন

সাইবার সিকিউরিটি সেল করেছে বিটিআরসি

সাইবার ট্রাইব্যুনাল সব বিভাগে

সাইবার সিকিউরিটিতে ৫ বছরে হবে এক হাজার এক্সপার্ট

টিটি / ৩ অক্টোবর / ২০২১

*

*

আরও পড়ুন