![]() |
টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : বিশ্বের অন্যতম বড় আন্তর্জাতিক অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতা ‘মুজিব অলিম্পিয়াড: বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ চর্চা’ শুরু হয়েছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসেবে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের তথ্যপ্রযুক্তি অধিদপ্তর ।
মঙ্গলবার তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এই অলিম্পিয়াডের উদ্বোধন করেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিজীবন, রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় কর্মজীবন সম্পর্কিত বিষয়াবলি নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা এ আয়োজনের উদ্দেশ্য।
জীবন সংগ্রামে জয়ী হতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ চলার পথের পাথেয় উল্লেখ করে পলক বলেন, বঙ্গবন্ধু সারাজীবন মানুষের জন্য, দেশের জন্য উৎসর্গ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শিতা, প্রজ্ঞা, সাহসিকতা, মেধা এবং আবেগ ও ভালবাসার কারণে দেশের সাড়ে ৭ কোটি মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সহস্র সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ উপহার দিয়েছে।
পলক বলেন, গভীরভাবে বিশ্লেষণ করলে বুঝা যায় বঙ্গবন্ধু ছিলেন আদর্শ ও ত্যাগী রাজনৈতিকবিদ, আর্দশ সন্তান, দায়িত্বশীল স্বামী ও পিতা। অল্প বয়সেই জাতীয় রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু এবং বাংলার মানুষের হৃদয়ের বঙ্গবন্ধুতে পরিণত হলেন।
দেশের শিল্পী, সাহিত্যিক এবং সৃজনশীল মেধাবী প্রজন্ম তাদের সৃষ্টিগুলোতে প্রযুক্তি ব্যবহার করছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবনী নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক লেখা ‘মুজিব আমার পিতা’ প্রবন্ধটি অবলম্বনে পূর্ণদৈর্ঘ্য অ্যানিমেশন ফিল্ম তৈরি করা হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে ফিল্মটি মুক্তি পাবে।
বঙ্গবন্ধু হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে উল্লেখ করে পলক বলেন, বর্তমান ও আগামী প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসেবে গড়ে উঠতে এ অনলাইন প্ল্যাটফর্মটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
তিনি মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস, জাতির পিতার জীবনআর্দশ, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেদেরকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ সৈনিক হিসেবে গড়ে উঠতে নতুন প্রজন্মের প্রতি আহবান জানান। অলিম্পিয়াডের মাধ্যমে বিশ্বের বাংলা ভাষাভাষী ও প্রবাসী বাংলাদেশীদেরকে অংশগ্রহণের আহবান জানান প্রতিমন্ত্রী।
মুজিব অলিম্পিয়াডের অনলাইন প্লাটফর্মে বঙ্গবন্ধুর জন্ম, শৈশব, শিক্ষা জীবন, কৈশোর, বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন, ভাষা আন্দোলনে ভূমিকা, ছয় দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, কারাভোগ, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতার ঘোষণা, কারামুক্তি, স্বদেশ প্রত্যাবর্তন, স্বদেশ বিনির্মাণ, ব্যক্তিগত জীবন ও পরিবার, সম্মাননাসহ বর্ণাঢ্য জীবনকে তুলে ধরা হয়েছে।
তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলমের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন তথ্যপ্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ. বি. এম. আরশাদ হোসেন ।
অনুষ্ঠানে মুজিব অলিম্পিয়াড প্রতিযোগিতার বিস্তারিত তুলে ধরেন তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সহকারী প্রোগ্রামার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ।
মুজিব অলিম্পিয়াডে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ চর্চা বিষয়ক এই প্রতিযোগিতা শুরু হবে ২৫ জুন বিকাল ৩টা হতে। প্রতিযোগিতা চলবে রাত ১২ টা পর্যন্ত।
নিবন্ধিত থাকা প্রতিযোগী এই সময়ের মধ্যে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবেন। এ সময় মুজিব অলিম্পিয়াড ওয়েবসাইটে লগইন করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনলাইনেই প্রশ্ন আসবে এবং সেখানে উত্তর সিলেক্ট করতে হবে। প্রত্যেক প্রতিযোগীকে ১ ঘন্টার মধ্যে ১০০ টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে নিবন্ধন বা রেজিস্ট্রেশনসহ বিস্তারিত জানা যাবে এই ঠিকানায় : https://www.mujibolympiad.gov.bd/register । রেজিস্ট্রেশন কারা শেষ সময় ২৪ জুন মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত।
এছাড়া এ অলিম্পিয়াডে বঙ্গবন্ধুর জীবনী নিয়ে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রতিযোগিতা রয়েছে। তিন ক্যাটাগরিতে আপনারা এই শর্টফিল্ম নির্মাণ করতে পারেন।
ফিকশন, ডকু ফিকশন ও অ্যানিমেশন এই তিন ক্যাটাগরিতে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত নির্মাণ করা যাবে। একজন সর্বোচ্চ দুই ক্যাটাগরি থেকে একটি করে মোট দুটি চলচ্চিত্র জমা দিতে পারবেন।
বঙ্গবন্ধুর জীবনের বাস্তব ঘটনাকে কেন্দ্র করে গল্পের মতো করে, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বাস্তবঘনিষ্ঠ ফিকশন করে, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে একজন মানুষের চিন্তা-ভাবনার প্যারানরমাল রেপ্রিজেন্টেশন করে, বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজরিত উপহার, কোনো ব্যক্তি, স্থান বা ঘটনার সঙ্গে বাস্তবতা ও আবেগ উপস্থাপন করে এই চলচ্চিত্র নির্মাণ করা যাবে।
এছাড়া প্রতিযোগিতায় প্রান্তিক অঞ্চলের মানুষদের টেকনোলজির সীমাবদ্ধতার কথা চিন্তা করে সহজ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তা হলো- গ্রামে বা স্কুলে-কলেজে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নির্মিত নাটিকা, মঞ্চনাটক; এমনকি চায়ের টেবিল ও পুকুরপাড়ের আড্ডা বা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুকেন্দ্রিক আলোচনার দৃশ্যাবলী নিয়েও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করা যাবে।
প্রতিটি চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ সময় হবে ৪০ মিনিট এবং সর্বনিম্ন সময় ১ মিনিট।
চলচ্চিত্র বানাতে ক্যামেরা, ভিডিও টিম, এডিটিং প্যানেল, এসব ব্যবহার করে কাজ করার সুবিধা যাদের আছে তারা তা করতে পারবেন। তবে যাদের কাছে এসব সুবিধা নেই, তারাও সাধারণ ডিজিটাল ক্যামেরা ব্যবহার করে কনটেস্টে অংশ নিতে পারবেন।
এছাড়া বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ভালো আইডিয়া হলে তা মোবাইল ফোনের মাধ্যমেও একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে পরিণত করা যাবে।
স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের ফাইলের সর্বোচ্চ সাইজ হবে ১ জিবি আর রেজ্যুলেশন হবে সর্বনিম্ন ৪৮০, সর্বোচ্চ ১০৮০।
চলচ্চিত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ ২৫ জুলাই ২০২১। জমা দিতে যেতে হবে এই ঠিকানায় : https://mujib100sfc.gov.bd/ ।
আরও রয়েছে ‘আমার বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক ভিডিও । এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করতে হবে www.amarbangabandhu.gov.bd । রয়েছৈ অডিও বুক যা বঙ্গবন্ধুর নিজের লেখা বই এর অডিও বুক অ্যাপ, ওয়েবসাইট ও ভিডিও। বিস্তারিত জানা যাবে https://www.mujib100aubk.gov.bd/ ঠিকানায়।