ক্যাপিটাল হিলে তাণ্ডব : দায় ফেইসবুকেরও আছে

ক্যাপিটাল হিলে ট্রাম্প সমর্থকরা। ছবি : ইন্টারনেট

টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত ক্যাপিটাল ভবন শেষবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল যুদ্ধের সময়।

১৮১৪ সালে ব্রিটিশ আর্মিরা সেখানে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন। তবে নিজ দেশের মানুষের হাতে গণতন্ত্রের প্রতীক ক্যাপটাল হিল কখনও কলঙ্কিত হবে তা কেউ হয়তো কল্পনাও করেনি।

৩ নভেম্বর নির্বাচনের পর থেকেই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভোট চুরির অভিযোগ এনেছেন ডেমোক্রেটদের বিরুদ্ধে। বার বার ভোট জালিয়াতির কথা লিখেছেন ফেইসবুক ও টুইটারে। এসব বিশ্বাস করে তা সমর্থকরাও নিরব থাকেননি। ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে হারানোর ক্ষোভে একত্রিত হয়েছে ফেইসবুক গ্রুপে। তাই সহিংস এই হামলার পেছনে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোর পরোক্ষ সম্পৃক্ততা খতিয়ে দেখেছেন বিবিসির ডিসইনফরমেশন স্পেশালিস্ট মারিয়ানা স্প্রিং। তার মতে, ট্রাম্প সমর্থকদের এমন আগ্রাসী আচরণ একদিনে তৈরি হয়নি। নির্বাচনেরও আগ থেকেই তাদেরকে উস্কে দেওয়া হচ্ছিলো।

Techshohor Youtube

নির্বাচনের আগেই ভোট জালিয়াতির আশংকা প্রকাশ করে টুইট করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপরে ৩ নভেম্বরের নির্বাচনের পর অনেক ট্রাম্প ভক্ত ‘স্টপ দ্য সিল’ নাম দিয়ে ফেইসবুক গ্রুপ খুলেছেন।

সেসব গ্রুপের সদস্যরা ট্রাম্পের আনা অভিযোগের সঙ্গে একমত ছিলেন। এ ধরনের বেশ কিছু গ্রুপ ডিলিট করে ফেইসবুক। কিন্তু ক্ষতি যা হওয়ার তা আগেই হয়ে যায়। ষড়যন্ত্র তত্ত্বে বিশ্বাসী কিউঅ্যানোন সমর্থকদের পোস্টও তারা ডিলিট করতে দেরি করে।

কিউঅ্যানোন গোষ্ঠির সমর্থকরা বিশ্বাস করে, শিশুদের যৌন নিপীড়নকারী এবং শয়তানে বিশ্বাসী এক চক্রের অনুপ্রবেশ ঘটেছে মার্কিন সরকারে। যারা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ক্ষমতা থেকে সরানোর চেষ্টা করছে। তাদের দমনই ডোনাল্ড ট্রাম্পের গোপন রাজনৈতিক মিশন।

মারিয়ানা স্প্রিংয়ের মতে, এই ষড়যন্ত্র তত্ত্বের শিকড় অনেক গভীরে। এসবের প্রচার থেমে নেই। যারা ক্যাপিটাল হিলে গিয়েছিলেন তাদের মধ্যে এই তত্ত্ব বেশ ভালোভাবে গেঁথে আছে। ট্রাম্পের আনা ভোট জালিয়াতির অভিযোগও তারা বিশ্বাস করেছে।

কিংস কলেজ লন্ডনের ভুয়া তথ্য বিষয়ক গবেষক অ্যালেক্সি ড্রিউ জানিয়েছে, এমন কিছুর ঘটার আশংকা অনেক আগে থেকেই ছিলো। ৪ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে ভুয়া তথ্য প্রচারের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।

যদিও ফেইসবুক-টুইটার এসব ভুয়া তথ্য ছাড়ানোর দায়ে কাউকে ব্লক করলে তারা মুক্তভাবে মত প্রকাশের প্ল্যাটফর্ম পার্লারে গিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। তবু জরুরি পদক্ষেপ নিতে দেরি করার দায় ফেইসবুক ও টুইটার এড়াতে পারে না। বিশেষ করে ফেইসবুক তাদের অ্যালোগরিদমের মাধ্যমে এসব গ্রুপে যুক্ত হতে মানুষকে উৎসাহ দিয়েছে।

অ্যালেক্সি ড্রিউ আরও বলেন, গ্রুপ রেকমেন্ডেশন নিয়ন্ত্রণ করা বা সেগুলো বন্ধ করে দেওয়ার ক্ষমতা ফেইসবুকের হাতেই ছিলো। এতোদিন পর্যন্ত তারা কিছুই করেনি।

*

*

আরও পড়ুন