ইন্টারনেট অবলম্বনে এজেড/ জানুয়ারি ০৫/২০২০/১৯৫০
![]() |
টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : দীর্ঘ কয়েক দশক ধরেই চীনারা ওভারটাইম অফিস করেছেন। শ্রমের তুলনায় কম বেতন পেয়েছেন। কর্মক্ষেত্রে এ নিয়ে তারা কোনো উচ্চবাচ্য করেননি।
তবে ১৯৯০ সালের পর জন্ম নেওয়া জেনারেশন জেড এর প্রতিনিধিরা একই প্রক্রিয়া মানতে নারাজ। তারা এখন পাড়ার বখাটেদের মতো অবাধ্য। কাজের সময় বাথরুমে গিয়ে বসে থাকছেন, ফোনে গেইম খেলছেন, নিজের ডেস্কে বসে উপন্যাস পড়ছেন। ফাঁকি দিয়ে যেনতেনভাবে কাজ বুঝিয়ে দিচ্ছেন। ওভারটাইম করতেও অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন। তাদের কথা হলো, বেতনের বাইরে ওভারটাইম করে যা পাওয়া যায় তা যৎসামান্য। চাকরির টাকায় বাড়ি কেনার স্বপ্নও পূরণ করা যায় না।
বিদ্রোহী এই প্রজন্মের কর্মকাণ্ড পরিচিতি পেয়েছে ‘টাচিং ফিশ’ নামে। চীনের একটি প্রবাদ থেকে ‘টাচিং ফিশ’ কথাটি নেওয়া হয়েছে। প্রবাদটি হলো কর্দমাক্ত পানিতে মাছ শিকার করা সহজ। অর্থাৎ সংকটময় মুহূর্তের সুযোগে নিজের আখের গোছানো।
এ বিষয়ে এক উইবো ব্যহারকারী লেখেন, প্রতিদিন মাছ ধরে আমি খারাপ নেই। কেনো আমার বস ১ সেন্টের বিনিময়ে আশা করবেন আমি ১০ সেন্ট সমপরিমাণের কাজ ডেলিভারি দেবো? তার মতো আরও অনেকেই নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে কাজ করার মানে খুঁজে পাচ্ছেন না। ফলে চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম উইবোতে ‘টাচিং ফিশ’ দর্শন প্রচার করছেন। যেমন এক কর্মী লেখেন, কতোটা পরিশ্রম করবেন তা নির্ভর করে বেতনের উপর। কর্মক্ষেত্রকে খুব বেশি গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন নেই। আপনি অতিরিক্ত পরিশ্রম করলে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে সহ-কর্মীদের উপর। বস তখন বুঝে যাবে আপনি একাই ৩ জনের কাজ করতে পারেন। দিন শেষে বেতন একই থাকলেও তবে কাজের চাপ ঠিকই বাড়বে।
চীনের অন্যতম চাকরি খোঁজার ওয়েবসাইট ৫১জব ডটকমের চিফ হিউম্যান রিসোর্স কর্মকর্তা ফেং জানিয়েছেন, যাদের বয়স ২০ এর ঘরে তারাই কর্মক্ষেত্রে এমন আচরণ করতে পারছেন। তাদের বেতন কম, শীঘ্রই বাড়ার সম্ভাবনাও নেই।
চীনা কোম্পানিগুলো ২০২০ সালে কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি করেছে ২ শতাংশ। অর্ধেক সংখ্যক কোম্পানি সেটাও করেনি। যারা ১৯৭০ কিংবা ১৯৮০ এর দশকে জন্মেছেন তাদের কাজে কোনো পরিবর্তন আসেনি। একই নিয়মে বছরের পর বছর চাকরি করছেন। ১৯৯০ এর দশকে জন্ম নেওয়া জেনারেশন জেড, বাবা মায়ের অর্থনৈতিক সচ্ছলতার কল্যাণে নিজেদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে পারছেন।
চীনা টেক জায়ান্ট কোম্পানিগুলোতে ধরেই নেওয়া হয় কর্মীরা সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা সপ্তাহে ৬ দিন টানা কাজ করবেন।
যুগের পর যুগ ধরে চলে আসা ৯৯৬ কর্মছন্দকে তারা বুড়ো আঙ্গুল দেখাচ্ছেন জেনারেশন জেড এর তরুণ -তরুণীরা। চীনের শ্রম আইন অনুযায়ী, সামান্য কারণে কর্মীকে চাকরিচ্যুত করতে হলে ক্ষতিপূরণ দিতে হয় নিয়োগদাতাকে। এরই ছায়াতলে আশ্রয় নিচ্ছেন তারা।
এ বিষয়ে সাংহাইভিত্তিক এক ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল কোম্পানির সিনিয়র ম্যানেজারের ভাষ্য, খারাপ পারফর্মেন্সের কারণে অনেককেই চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। প্রতি বছর নতুন জনবল কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করে। কেউ কেউ অনেক ভালো করে। যারা এখন কাজ কর্মে ফাঁকি দিচ্ছে তারা পেছনে পড়ে যাবে। শেষ পর্যন্ত যারা পরিশ্রমী তারাই জীবনে সফল হবে।
ইন্টারনেট অবলম্বনে এজেড/ জানুয়ারি ০৫/২০২০/১৯৫০